রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়।
খবরের শিরোনামে রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আত্মহত্যার খবর! স্টার জলসায় ধারাবাহিক ‘দেশের মাটি’-তে তিনি ‘রাজা’ চরিত্রে অভিনয় করছেন। জোর করে অপছন্দের পাত্রীর সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে ‘রাজা’ ওরফে রাহুল আত্মহত্যার চেষ্টা করবেন এমনই দেখানো হয়েছে ধারাবাহিকের দৃশ্যে। যাবতীয় সমস্যা সেখানেই।
খবর আকর্ষণীয় করতে এক বাংলা সংবাদ মাধ্যম রাতারাতি পর্দা এবং বাস্তবকে মিলিয়ে দিয়ে অভিনেতা রাহুলের আত্মহত্যার ভুয়ো খবর শিরোনামে ফলাও করে প্রকাশ করে। সেই খবর অভিনেতার আগে দেখেছেন তাঁর মা। বৃহস্পতিবার ঘটে যাওয়া এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন অভিনেতা। আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে রাহুলের ক্ষোভ, ‘‘খবর পড়ে মা রীতিমতো আতঙ্কিত। তিনি ভেবে নিয়েছিলেন পুরোটাই সত্যি।’’
কী সেই শিরোনাম? ‘আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন জনপ্রিয় টেলি অভিনেতা, দেখুন...’ এমন শিরোনামের সঙ্গে 'দেশের মাটি' ধারাবাহিকের 'রাজা' অর্থাৎ রাহুলের একটি ছবিও দেওয়া হয়েছে। যদিও ছবির মুখ আবছা। কিন্তু তত ক্ষণে যা ঘটার ঘটে গিয়েছে। খবর ভাইরাল। পরে নিজের সামাজিক পাতায় সেটি পোস্ট করে রাহুলের তীব্র প্রতিক্রিয়া, ‘আর ঠিক কতটা নিচে নামবেন আপনারা?’
রাহুল আনন্দবাজার অনলাইনকে জানান, শ্যুটের জন্য তিনি সারাক্ষণ ব্যস্ত। তাই তাঁর মা-বাবা নিয়মিত নেটমাধ্যমে যুক্ত। এই মাধ্যমের সাহায্যেই তাঁরা আত্মীয়, পরিজন, বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। অভিনেতার আগে অনেক খবর তাঁদের চোখে পড়ে যায়। তেমনটাই হয়েছে এ দিন। রাহুলের আত্মহত্যার খবর শিরোনামে দেখে আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন অভিনেতার মা-বাবা। সমানে ফোন করতে থাকেন। রাহুলের ক্ষোভ, ‘‘আমি ‘ক্লিক বাটন’ শব্দের মানে জানি। আমার মা-বাবা বা আত্মীয়েরা সেটা জানেন না! স্বাভাবিক ভাবেই, এই ধরনের খবর তাঁদের মানসিক চাপ বাড়িয়ে দেয়।’’
তিনি আরও বলেন, এটি মিম হলে কোনও আপত্তি করতেন না। কারণ, মিম সব সময় তাঁর পক্ষে তৈরি হবে এমন কোনও কথা নেই। কিন্তু এই ধরনের মিথ্যে খবরে আপত্তি আছে তাঁর। রাহুল বলেন, খবর প্রকাশের আগে তাঁর সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজনও বোধ করেনি সংবামাধ্যম। তা হলেও তিনি নিষেধ করতে পারতেন। পাশাপাশি প্রশ্নও তুলেছেন, খবরে বিকৃতি ঘটিয়ে এ ভাবে আর কত দিন প্রচারের আলো কাড়ার চেষ্টা চলবে?
রাহুলের সমর্থনে মন্তব্য বিভাগে মুখ খুলেছেন কবি শ্রীজাত, পরিচালক অর্জুন দত্ত, পরিচালক দেবারতি ভৌমিক সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। প্রত্যেকের দাবি, অভিনেতা যেন আইনি সাহায্য নিয়ে এর প্রতিকার করেন। কিছু জনের আবার পরামর্শ, বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। নইলে অকারণে অন্যায়কে বাড়তি প্রশ্রয় দেওয়া হবে।