‘চেঙ্গিজ়’ ছবির মাধ্যমে সর্বভারতীয় দর্শকের কাছে পৌঁছতে চেয়েছেন জিৎ। ছবি: সংগৃহীত।
ইদের মরসুমে শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে ‘চেঙ্গিজ়’। এই প্রথম সর্বভারতীয় স্তরে নিজের ছবি রিলিজ় করেছেন জিৎ। তাই ছবি ঘিরে অনুরাগীদের প্রত্যাশাও ছিল। কিন্তু ছবিমুক্তির পর থেকেই এই ছবির ব্যবসা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। কেউ বলছেন, ছবি খুব ভাল ব্যবসা করছে। আবার অন্য পক্ষ বলছেন, জাতীয় স্তরে বক্স অফিসে ‘চেঙ্গিজ়’ সেই ভাবে দাঁত ফোটাতে পারেনি। এই সবের মাঝে বক্স অফিস কালেকশন নিয়ে তথ্য ঘেঁটে দেখলেন প্রযোজক রানা সরকার।
সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে দাবি করেছেন, মঙ্গলবার পর্যন্ত ‘চেঙ্গিজ়’ রাজ্যে কমবেশি ১ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। অন্য দিকে, রানার দেওয়া পরিসংখ্যান বলছে, দেশের বাকি রাজ্যে এই ছবির ব্যবসার পরিমাণ কমবেশি ২৬ লক্ষ টাকা। এরই সঙ্গে ফেসবুকে তাঁর পোস্টে জিতের দিকে পাল্টা চ্যালে়ঞ্জ ছুড়ে দিয়ে রানা লিখেছেন, ‘‘আমার দেওয়া তথ্য ভুল প্রমাণ করতে হলে প্রযোজককে অফিশিয়াল কালেকশন জানাতে হবে। আশা করি, বাঙালি দর্শকের কথা ভেবে জিৎ পরের বার আলাদা কিছু ভেবে ছবি করবেন।’’
নিজের প্রযোজনা সংস্থার অধীনেই জিৎ ‘চেঙ্গিজ়’ তৈরি করেছেন। এখনও সংস্থার তরফে বক্স অফিসের কোনও পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়নি। রানা যে পরিসংখ্যান দিয়েছেন তাঁর উৎস কী? আনন্দবাজার অনলাইনকে রানা বললেন, ‘‘আমরা যারা সিনেমা ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছি, তাদের কাছে বক্স অফিসের কালেকশনের তথ্য আসে। তা-ও আমি আমার পোস্টে কালেকশনের ক্ষেত্রে কম বেশি ‘১০ শতাংশ’ উল্লেখ করেছি।’’ রানার পোস্টের পরেই সমাজমাধ্যমে মত তৈরি হয়ে যায় যে তিনি ‘জিৎ বিরোধী’। রানার কথায়, ‘‘আমি সব ছবির কালেকশনই দিই। নিজের ছবি (মানবজমিন) কম ব্যবসা করলেও দিয়েছি।’’ এই প্রসঙ্গেই রানার যুক্তি, ‘‘আমি তো চেঙ্গিজ় দেখুন, এই মর্মে যতটা সম্ভব ছবিটার প্রচারও করেছি। দর্শকেরও তো জানা উচিত সত্যিটা কী। পরীক্ষা দেব, এ দিকে রেজ়াল্ট জানব না, সেটা তো হয় না!’’
বিগত কয়েক বছরে মূলধারার বাংলা বাণিজ্যিক ছবি থেকে দর্শক কার্যত মুখ ফিরিয়েছেন। রানা বললেন, ‘‘আমি নিজে ছবিটা পুরোটা দেখতে পারিনি। দেবের ছবি বা একেনবাবু সফল হয়েছে তার বিষয়বস্তুর জন্য। আসলে দর্শক কী ধরনের ছবি দেখতে চাইছেন সেটা বুঝতে হবে।’’ এই প্রসঙ্গেই তিনি দুষলেন স্যাটেলাইট স্বত্বকে। তাঁর কথায়, ‘‘আজকে ছবি না চললেও স্যাটেলাইট স্বত্ব থেকে প্রযোজক টাকা ফিরে পান। তাই আর দর্শকের পছন্দ বা অপছন্দের বিষয়টা তাঁদের কাছে প্রাধান্য পাচ্ছে না। এখানেই আমার আপত্তি।’’ দর্শককে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে না বলেই যে বাংলা বাণিজ্যিক ছবি ব্যর্থ হচ্ছে, সে কথাও মনে করিয়ে দিতে চাইলেন ‘জাতিস্মর’ ছবির প্রযোজক।
সময়ের সঙ্গে বাংলা ছবির বিষয়ভাবনায় বদলে যাঁরা বিশ্বাসী, তাঁরা এখনও সফল হচ্ছেন বলেই মনে করছেন রানা। ‘‘দেব সব থেকে বড় উদাহরণ। ও তো এখন মশালা ছবি আর করেই না। তাই এর ছবি চলছে। বাংলার বাকি সুপারস্টার, যাঁরা নিজেদের বদলেছেন তাঁরাই সফল হচ্ছেন,’’ মন্তব্য রানার। ‘চেঙ্গিজ়’-এর বক্স অফিস প্রসঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে জিতের প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও উত্তর মেলেনি।