bollywood

সলমন খানের বিতর্কিত অডিয়ো টেপ, নেস ওয়াদিয়ার সঙ্গে হাতাহাতি...বিতর্ক পিছু ছাড়েনি প্রীতির

ছোটবেলা থেকেই টমবয় প্রীতি খেলাধুলো ভালবাসতেন। তিনি পড়তেন সিমলার কনভেন্ট স্কুলে। থাকতেন স্কুলের হস্টেলে। বাড়ির সবাইকে ছেড়ে নিঃসঙ্গ লাগলেও বন্ধুদের পেয়ে একাকিত্ব কেটে গিয়েছিল।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২০ ১৭:৩৯
Share:
০১ ২৪

হেড পড়লে সিনেমায় অভিনয় করবেন। দ্বিধা কাটাতে শেষ অবধি টস করেছিলেন প্রীতি জিন্টা। বলি মহলের অনেকেই বলেন, তাঁর মতো স্পষ্টবাদী নায়িকা ইন্ডাস্ট্রিতে কমই আছেন। ভাল অভিনয়ের সুখ্যাতির পাশাপাশি বিতর্কও সঙ্গী হয়েছে এই সুন্দরীর।

০২ ২৪

প্রীতির জন্ম ১৯৭৫ সালের ৩১ জানুয়ারি, হিমাচল প্রদেশের সিমলায়। তাঁর বাবা ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট। তবে বাবার আদর বেশি দিন পাননি প্রীতি। তাঁর যখন ১৩ বছর বয়স, পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন তাঁর বাবা দুর্গানন্দ জিন্টা। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন প্রীতির মা, নীলপ্রভা। টানা দু’বছর তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন। তখন প্রীতির দাদা দীপঙ্করের বয়স ১৪ বছর এবং ভাই মনীশ ১২ বছরের।

Advertisement
০৩ ২৪

পরে প্রীতি বলেছেন, অল্প বয়সে বাবার মৃত্যু তাঁকে এক ধাক্কায় অনেক পরিণত করে তুলেছিল। তখন থেকেই তিনি দায়িত্ব নিতে শিখেছেন। তাঁর দাদা সেনাবাহিনীর আধিকারিক। ভাই থাকেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। প্রীতি জানিয়েছেন, তাঁর বাড়িতে ছেলে এবং মেয়েদের বড় করার মধ্যে কোনও পার্থক্য ছিল না কোনওদিন।

০৪ ২৪

ছোটবেলা থেকেই টমবয় প্রীতি খেলাধুলো ভালবাসতেন। তিনি পড়তেন সিমলার কনভেন্ট স্কুলে। থাকতেন স্কুলের হস্টেলে। বাড়ির সবাইকে ছেড়ে নিঃসঙ্গ লাগলেও বন্ধুদের পেয়ে একাকিত্ব কেটে গিয়েছিল।

০৫ ২৪

সাহিত্যপ্রিয় প্রীতি ইংরিজিতে সাম্মানিক স্নাতক হন। এর পর স্নাতকোত্তর করেন অপরাধ মনস্তত্ত্বে। বন্ধুর জন্মদিনে গিয়ে হঠাৎই নজের পড়ে যান বিজ্ঞাপন নির্মাতার। তার পরই সুযোগ চকোলেটের বিজ্ঞাপনে।

০৬ ২৪

এর পর মডেলিং-এর জগতে নিজের জায়গা করে নেন প্রীতি। তাঁর করা বিজ্ঞাপনের মধ্যে লিরিল সাবানের বিজ্ঞাপন খুবই জনপ্রিয় হয়। তবে এরও আগে প্রীতির বিজ্ঞাপনে হাতেখড়ি হয়েছিল খুব অদ্ভুত ভাবে। তাঁর বন্ধুর ভাই বিজ্ঞাপনের ছবি বানাতেন। বন্ধুর সঙ্গে সেই শুটিং দেখতে গিয়েছিলেন প্রীতি। সেখানে হঠাৎ একটি দৃশ্যে পায়ের ছবি দেখানোর দরকার পড়ে।

০৭ ২৪

সে সময় কাউকে না পেয়ে প্রীতির পায়ের ছবিই দেখানো হয়েছিল। এ ভাবেই মডেলিং-এর দুনিয়ায় আক্ষরিক অর্থেই প্রথম পা রাখেন তিনি। এর পর তিনি হয়ে ওঠেন পার্ক-কিশোরী।

০৮ ২৪

মডেলিং কেরিয়ারের সূত্রপাতে প্রীতি ডেটিং করতেন মার্ক রবিনসনের সঙ্গে।

০৯ ২৪

বন্ধুর সূত্রে তাঁর আলাপ হয় পরিচালক শেখর কপূরের সঙ্গে। শেখরের কথায় প্রীতি অডিশন দেন। কিন্তু তাঁর ইচ্ছে ছিল না অভিনয়ের। এ দিকে শেখরের মুখের উপর বলতেও পারছিলেন না। তাই বলেছিলেন, টস করবেন। হেড পড়লে তিনি অভিনয় করবেন।

১০ ২৪

সেই টসে হেড-ই পড়ে। নিজের কথা রাখতে মডেলিং থেকে প্রীতি চলে আসেন অভিনয়ের জগতে। প্রীতি ও হৃতিককে নিয়ে শেখর ‘তারা রম পম’ নামে একটি ছবি করবেন ভেবেছিলেন। কিন্তু সে ছবি শেষ অবধি মুক্তি পায়নি।

১১ ২৪

এর পর শেখরের কথায় প্রীতি যোগাযোগ করেন মণিরত্নমের সঙ্গে। তিনি প্রীতিকে সুযোগ দেন ‘দিল সে’ ছবিতে। ভূমিকা ছোট হলেও নিজের পারফরম্যান্সে নজর কাড়েন প্রীতি। এর পর ‘সোলজার’ ছবিতে প্রীতিকে দেখা যায় মিষ্টি নায়িকার ভূমিকায়।

১২ ২৪

তবে প্রীতিকে ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিষ্ঠা দেয় ‘সঙ্ঘর্ষ’ এবং ‘ক্যায়া কহেনা’-র মতো ছবি। দু’টি ছবির চরিত্রই পর্দার বাইরে বাস্তবের প্রীতির মতো বলিষ্ঠ ও সাহসী।

১৩ ২৪

এর পর প্রীতি ‘হর দিল জো প্যায়ার করেগা’ ছবিতে অভিনয় করেন সলমন খানের সঙ্গে। এই সময়েই আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে তোলপাড় হয় বলিউড। প্রীতি অভিনীত ‘চোরি চোরি চুপকে চুপকে’ ছবিতে আন্ডারওয়ার্ল্ডের যোগ ছিল বলে অভিযোগ ওঠে।

১৪ ২৪

তদন্তের জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলিউডের তাবড় তারকাকে। কিন্তু কেউ স্বীকার করেননি আন্ডারওয়ার্ল্ডের সঙ্গে সম্পর্ক। একমাত্র প্রীতি স্বীকার করেন, তিনি আন্ডারওয়ার্ল্ডের থেকে ফোন পেয়েছেন। তাঁর কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছিল বলেও দাবি করেন।

১৫ ২৪

এর পর প্রীতির প্রতি ইন্ডাস্ট্রির দৃষ্টিভঙ্গিই পাল্টে যায়। বলা হতে থাকে, তিনি-ই ইন্ডাস্ট্রির একমাত্র পুরুষসিংহ। কিন্তু সাহসিকতার মাসুল দিতে হয়েছিল প্রীতিকে। এক পর্নঅভিনেত্রীর ছবির সঙ্গে প্রীতির ছবি মর্ফ করে বিকৃত ও অশ্লীল এমএমএস বানিয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।

১৬ ২৪

তবে এর ফলে প্রীতির উড়ান আটকানো যায়নি। এর পর ‘কোই মিল গ্যয়া’, ‘বীরজারা’, ‘কাল হো না হো’, ‘দিল চাহতা হ্যায়’-র মতো ছবি প্রীতিকে নিয়ে যায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে।

১৭ ২৪

জনপ্রয়িতার হাত ধরে ফের এল বিতর্ক। প্রকাশ্যে এল এক অডিয়ো টেপ। যেখানে ‘সলমন খান’ প্রীতির সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছেন। তবে সলমন ও প্রীতি এই অডিয়ো টেপ-কে নকল বলে দাবি করেছেন বরাবর।

১৮ ২৪

কেরিয়ারের স্বর্ণশিখরে থাকার সময়েই প্রীতির সঙ্গে এক পার্টিতে আলাপ হয় নেস ওয়াদিয়ার। বিখ্যাত শিল্পপতির সঙ্গে প্রীতির আলাপ প্রেমে বদলে যেতে সময় লাগেনি। বলিউডের পাওয়ার কাপল বলা হত তাঁদের। নেসের সঙ্গে নিজের সম্পর্ক কোনওদিন লুকিয়ে রাখেননি প্রীতি।

১৯ ২৪

নেসের সঙ্গে সম্পর্কের মাঝেই নতুন বিতর্ক। শেখর কপূর ছিলেন প্রীতির মেন্টর। তাঁর সঙ্গে প্রায়ই কথা হত প্রীতির। তাঁদের এই ঘনিষ্ঠতা মেনে নিতে পারেননি শেখরের স্ত্রী সুচিত্রা কৃষ্ণমূর্তি। তিনি বিয়ে ভাঙার জন্য প্রীতিকে দায়ী করেছিলেন। উত্তরে প্রীতি বলেছিলেন, সুচিত্রার উচিত মনোবিদের কাছে যাওয়া।

২০ ২৪

এ সব বিতর্ক ছাপিয়ে প্রীতি ভাবছিলেন নেসের সঙ্গে সেটল করার কথা। ছবিতে অভিনয় কমিয়ে দেন প্রীতি। নেসের সঙ্গে মিলে কিনে ফেলেন আইপিএল দল। সবাই যখন তাঁদের বিয়ের দিন গুনছেন, খবর এল জুটি ভেঙে গিয়েছে।

২১ ২৪

সম্পর্ক ভাঙলেও তাঁদের ব্যবসা একসঙ্গেই ছিল। কিন্তু সেটাতেও ভাঙন ধরল। ২০১৪ সালে নেসের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ আনলেন প্রীতি। সে বছর কিংস ইলেভেন পঞ্জাব এবং চেন্নাই সুপারকিংস-এর ম্যাচ ঘিরে ঝামেলার সূত্রপাত।

২২ ২৪

প্রীতি তাঁর বন্ধুদের নিয়ে ভিআইপি বক্সে খেলা দেখছিলেন। সে সময় নেস-ও তাঁর পরিবার নিয়ে ওই বক্সে আসেন। কিন্তু কোনও আসন না থাকায় দু’জনের মধ্যে তীব্র বাদানুবাদ হয়। সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়ে তাঁদের হাতাহাতিও।

২৩ ২৪

এর পরেই প্রীতি অভিযোগ করেন নেসের বিরুদ্ধে। সেইসঙ্গে তুলে আনেন অনেক পুরনো ঘটনাও। তাঁর অভিযোগ, এর আগেও নেস তাঁর উপর নির্যাতন করেছেন। জ্বলন্ত সিগারেট চেপে ধরেছেন মুখে। ঘরে তালাবন্ধ করে রেখেছেন। যদিও নেস সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।

২৪ ২৪

এর পর তাঁদের সম্পর্ক আর স্বাভাবিক হয়নি। নেসের সঙ্গে বিচ্ছেদের পরে প্রীতি ছবিতে অভিনয়ও ছেড়ে দেন। শুধুই মন দেন ব্যবসায়। ২০১৬ সালে তিনি বিয়ে করেন জেন গুডএনাফকে। এখন প্রীতি বছরের বেশির ভাগ সময় বিদেশেই কাটান। দেশে ফিরলেও ইন্ডাস্ট্রি থেকে দূরেই থাকেন অতীতের এই জনপ্রিয় নায়িকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement