বুধবার সকালে শিলিগুড়ির এয়ারভিউ মোড়ের চার্চ রোডের কাছের একটি হোটেলের ঘরের দরজা ভেঙে মিলল অভিনেত্রী পায়েল চক্রবর্তীর দেহ। এই মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন পায়েল। কিন্তু কী এমন ঘটল, তা নিয়ে গুঞ্জন উঠেছে টলিপাড়ায়।
টলিউডে কাজ করার কারণে সংসারে বেশি সময় দিতে পারছিলেন না পায়েল। এই অভিযোগেই ২০১৫-য় পায়েলের বিরুদ্ধে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা রুজু করেন তাঁর স্বামী। তাঁদের ন’ বছরের একটি ছেলে আছে, সে পায়েলের স্বামীর সঙ্গে টালিগঞ্জে থাকে। পায়েলের পরিবারের তরফে দাবি, ছেলেকে কাছে না পাওয়ায় তীব্র মানসিক অবসাদে ভুগতেন এই অভিনেত্রী।
জন্মসূত্রে নৈহাটির মেয়ে পায়েল বর্তমানে নিউ গড়িয়া এলাকার একটি ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন। সম্প্রতি দিন ছয়েকের জন্য শিমুরালিতে শুটিং শেষ করে আসেন পায়েল। বুধবার ‘সাত ভাই চম্পা’ সিরিয়ালে শুটিংয়ের জন্য রাঁচী যাওয়ার কথা ছিল। মঙ্গলবার সন্ধে সাতটায় শিলিগুড়ির ওই হোটেলে ১৩ নম্বর ঘরে চেক ইন করেন পায়েল।
সোমবার রাতে পরিবারের সঙ্গে শেষ কথা হয় পায়েলের। এ দিকে মঙ্গলবার সকাল থেকেই তাঁর ফোন সুইচড অফ পান পরিবারের লোক। মেয়ের কোনও খবর না পেয়ে মঙ্গলবারই পঞ্চসায়র থানায় একটি মিসিং ডায়েরি করেন পায়েলের মা।
বুধবার বেলা ১২ টায় তাঁর চেক আউটের কথা ছিল। সেই মতো হোটেল কর্মীদের ডেকে দিতেও বলেন পায়েল। নির্দিষ্ট সময়ে তাঁকে ডাকতে গিয়ে বারবার দরজা ধাক্কা দেওয়ার পরও কোনও সাড়া না মেলায় খবর দেওয়া হয় শিলিগুড়ি থানায়। এর পর শিলিগুড়ি থানার পুলিশ এসে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে।
মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়েই শিলিগুড়ি পৌঁছেছেন পায়েলের বাবা। জামাইয়ের বিরুদ্ধে তাঁর কোনও অভিযোগ না থাকলেও মেয়ের মৃত্যুর জন্য ছেলেকে কাছে না পাওয়ার মানসিক টানাপড়েনকেই দায়ী করেছেন তিনি।
আসন্ন মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘কেলো’-তে অন্যতম মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন পায়েল। ২০১৫ সাল থেকেই টলিউডে কাজ শুরু করেন এই অভিনেত্রী। অভিনয় করেছেন নানা সিরিয়াল ও ওয়েব সিরিজেও। দেব অভিনীত ‘ককপিট’ ছবিতেও একটি পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল পায়েলকে। ছবি: পায়েল চক্রবর্তীর ফেসবুক পেজের সৌজন্যে।