সপ্তাহান্তের দ্বিতীয় দিন জমজমাট ভিন্ন স্বাদের বাজনা-গানে।
ঠোঁটের ডগায় র্যাপ। রঙের প্লাস্টিকের ড্রাম পারকাসন। এ রকমই আরও নানা বাদ্যযন্ত্র ছিল। যেমন, ফাঁকা কৌটো, বোতল, এক মুঠো ছিপি, স্টিলের মোটা রড, উল্টোনো বড় বাঁকাচোরা থালার মতো পাত্র। এগুলোই কোনওটা জ্যাজ, জলতরঙ্গ, ড্রাম। গান-বাজনার এমন অদ্ভুত সহাবস্থান কোনও দিন দেখেছেন? শনিবার বিকেলে এসভিএফের অফিস সাক্ষী থাকল এমন এক অনুষ্ঠানের। সৌজন্যে সঞ্জয় মণ্ডলের ওয়েস্ট ব্যান্ড’। সপ্তাহান্তের দ্বিতীয় দিন জমজমাট ভিন্ন স্বাদের বাজনা-গানে। উপরি পাওনা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, মধুমিতা সরকারের উপস্থিতি। যাঁদের নতুন জুটি দেখা যাবে আগামী ছবি ‘ট্যাংরা ব্লু’জ’-এ। পয়লা বৈশাখ বড় পর্দায়।
উপস্থিত ছিলেন ছবির পরিচালক সুপ্রিয় সেনও। প্রচার উপলক্ষেই ছবির এই ৩ স্তম্ভের সঙ্গে এক ছাদের নীচে জড়ো হয়েছিলেন অভিনেতা সমিউল আলম, ঐশানি দে, আত্মদীপ ঘোষ, ঋষভ বসু এবং সঙ্গীতকার নবারুণ বসু। উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে ছবি নিয়ে বলতে গিয়ে সুপ্রিয়ের প্রথম কথা, ‘‘ভেবেছিলাম ট্যাংরার উপরে ছোট ছবি বানাব। সে ছবি আজও হচ্ছে কালও হচ্ছে। তার আগে গোটা একটা পূর্ণ দৈর্ঘের ছবি হয়ে গেল একই বিষয়ের উপর!’’ তাঁর দাবি, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় আর তাঁর ‘রোড শো’ প্রযোজনা সংস্থা না থাকলে যা সম্ভবই হত না।’’
৪ বার জাতীয় পুরস্কার যাঁর অনায়াস মুঠোবন্দি তাঁকেই প্রায় মৃদু ধমকে থামিয়ে দিলেন ছবির মুখ্য অভিনেতা পরমব্রত, ‘‘কী যে বল! সবাই ছিল, তাই সম্ভব হয়েছে।’’ তার পরেই অকপট স্বীকারোক্তি, ‘‘সঞ্জয় মণ্ডল আর তাঁর বাহিনি না থাকলে আমি সঞ্জীব মণ্ডল হয়ে উঠতে পারতাম না। আমাদের প্রত্যেককে ধরে ধরে টিপস দিয়েছেন সঞ্জয়।’’
এটাই ছবি তৈরির গৌরচন্দ্রিকা। পরবর্তী মুখ্য আকর্ষণ মধুমিতা সরকার ওরফে ‘জোয়ী’। কী বললেন তিনি? মধুমিতার দাবি, ‘‘আমার চোখ দিয়ে ট্যাংরা ব্লু’জ’কে, ট্যাংরার মানুষদের, বস্তি এলাকাকে দেখানোর দায়িত্ব দিয়েছিলেন পরিচালক। আশা করছি, তাঁর নির্দেশ ঠিক মতো মানতে পেরেছি।’’ মধুমিতা, পরমব্রত-র দেখানো পথে চলেই ছবির গল্প এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন সমিউল, ঐশানি, আত্মদীপ, ঋষভ। বাকি গান হেঁশেল। ব্যান্ড যে ছবির প্রাণ সেই ছবিতে গানই মুখ্য ভূমিকা পালন করবে। বোঝা গেল।'
যাঁর জীবন এই ছবির অনুপ্রেরণা সেই সঞ্জয় কী বললেন? গান, প্রেম, অপরাধ, জেলবন্দি দশা তাঁর জীবনের পরতে পরতে জড়ানো। তার পরেও সব ছাপিয়ে তিনি জীবনমুখী। তাঁর জীবনও যে কোনও দিন ছবির বিষয় হয়ে উঠতে পারে, ধারণাই ছিল না। সেই সত্যি চোখের সামনে দেখতে পেয়ে তাঁর চোখ চকচকে আনন্দের কান্নায়! জানালেন, আন্তরিক কৃতজ্ঞ তিনি পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতা--- সবার কাছে।
সঞ্জয়ের কৃতজ্ঞতা ততক্ষণে ছড়িয়ে পড়েছে ‘ওয়েস্ট ব্যান্ড’-এর বাকি সদস্যের চোখেমুখে।