প্রয়াত অভিনেত্রী পল্লবী দে
পল্লবী দে-রা তিন ভাইবোন। দিদি পৌলোমী আর পল্লবী একই স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। পৌলোমী খুবই মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। কিন্তু পল্লবী বেশ দুষ্টু। তাঁদের মধ্যে এতটাই ফারাক ছিল যে, শিক্ষিকারা বিশ্বাসই করতে চাইতেন না পৌলোমী আর পল্লবী দুই বোন। কিন্তু অভিনয় জগতে নাম করার পরে সেই শিক্ষিকারাই পল্লবীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন। পল্লবীর ছোটবেলার গল্প বলতে বলতে গর্ব বোধ করেন প্রয়াত নায়িকার মা।
‘দিদি নম্বর ওয়ান’ রিয়্যালিটি শো-এর গত পর্বে মা সঙ্গীতা দে-র সঙ্গে অংশ নিয়েছিলেন পল্লবী। সেখানেই মা তাঁর মেয়ের দুষ্টুমির কথা বলেন মজার ছলে। অভিনয় করার আগে একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থায় কাজ করতেন পল্লবী। কিন্তু তাঁর মায়ের কথায় জানা যায়, পল্লবীর বাবা চাইতেন না, মেয়ে কাজ করুক। তাঁর কথায়, ‘‘আমি তো আছি। অভাব তো নেই। মেয়ের কাজ করার দরকার নেই। ১০টা বাজলেই বাবা অস্থির। রাত হয়ে যাচ্ছে।’’
শুধু তা-ই নয়, মেয়েকে ঘরে তালা বন্ধ করে চলে যেতেন। পল্লবীর ভরসার জায়গা মা। সঙ্গীতা দে নিজের মেয়েকে গৃহবন্দি করে রাখতে পছন্দ করতেন না। তিনি বিশ্বাস করতেন, মেয়েদেরও কাজ করা উচিত। তিনি মেয়েকে তালা খুলে বাড়ির বাইরে বেরোতে সাহায্য করতেন। কিন্তু একটি নিয়ম তাঁরও ছিল। পল্লবীর মা মেয়েকে বলতেন, ‘‘ভোর ৫-৬টা নাগাদ বেরোও। আমার কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু রাত ১০টার মধ্যে বাড়ি ঢুকতেই হবে।’’ সঙ্গীতা মজা করে সঞ্চালিকা রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেন, ‘‘প্রথম দিনই ১০টার বেশি করে বাড়ি ফেরে মেয়ে। অবস্থা বুঝে পর দিন আমিই তালা বন্ধ করে দিই।’’ সবাই হাসিতে ফেটে পড়েন এই ঘটনা শুনে।
কিন্তু মেয়ে খ্যাতি অর্জন করার পর সেই রাগী বাবা-ই সবাইকে ফোন করে করে বলেন, ‘‘আমার মেয়ে এটায় অভিনয় করছে, তোমরা দেখবে কিন্তু।’’
পল্লবী নেই। কিন্তু তাঁর কাজ ঘিরে বাবা-মায়ের গর্ব থেকেই যাবে।