লকডাউনে ঘরবন্দি মানুষের একঘেয়েমি কাটাতে দূরদর্শনের পর্দায় ফিরে এসেছে রামানন্দ সাগরের ‘রামায়ণ’। আশির দশকের সুপারহিট এই ধারাবাহিক অনেক প্রজন্মের কাছে মধুর নস্টালজিয়াও। সোশ্যাল মিডিয়ায় ফের ট্রেন্ডিং ‘রামায়ণ’।
এ রকমই এক সময়ে আরও একটি খবর নজর কেড়ে নিল। তা হল, অভিনেতা শ্যামসুন্দর কালানির মৃ্ত্যু। তিনি রামায়ণের সুগ্রীব এবং বালি, দু’টি ভূমিকাতেই অভিনয় করেছিলেন।
আদতে জব্বলপুরের বাসিন্দা শ্যামসুন্দর তাঁর অভিনয় জীবনে আরও কিছু সিরিয়ালে অভিনয় করেছিলেন। তবে কোনওটাই ‘রামায়ণ’-এর ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি। তাঁকে সুগ্রীবের চরিত্রেই মনে রেখেছেন দর্শকরা।
শোনা যায়, ‘রামায়ণ’-এর সেটে প্রথম দিন তিনি মেক আপের পরে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। কিছুতেই নিজের সংলাপ মনে রাখতে পারছিলেন না।
শেষে বড় বড় প্ল্যাকার্ডে তাঁর সংলাপ লিখে তাঁর সামনে তুলে ধরা হয়। তিনি সে দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে সংলাপ বলতে থাকেন। অবশেষে তিরিশ চল্লিশটা টেকের পরে দৃশ্যগ্রহণ করা হয়।
প্রথম দিন থেকে শুরু করে শেষ অবধি ‘রামায়ণ’-এর সেটে তাঁর জন্য এই ব্যবস্থা জারি ছিল।
রামায়ণ-এর পরে তিনি ধীরে ধীরে হারিয়ে যান ইন্ডাস্ট্রি থেকে। বিস্মৃত হয়ে যান দর্শকদের মন থেকেও।
কয়েক বছর আগেই তাঁর স্ত্রী প্রয়াত হয়েছেন। তাঁদের একমাত্র মেয়ে থাকেন হরিয়ানার কালকার পিঞ্জর এলাকায়।
মেয়ের কাছেই গত কয়েক বছর ছিলেন শ্যামসুন্দর। তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। সেই রোগেই প্রয়াত হলেন এই প্রবীণ অভিনেতা।
তাঁর মৃত্যুর খবর জানিয়ে শোকপ্রকাশ করেন ‘রামায়ণ’-এ রামচন্দ্রের ভূমিকায় অভিনয় করা অভিনেতা অরুণ গোভিল। তার পরেই ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে অভিনেতা শ্যামসুন্দর কালানির মৃত্যুসংবাদ।
পরে শোকপ্রকাশ করেন সুনীল লেহরী। তিনি ‘রামায়ণ’-এ লক্ষ্মণের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন।
অরুণ গোভিল ও সুনীল লেহরীর পাশাপাশি শোকপ্রকাশ করেন অভিনেত্রী দীপিকা চিকলিয়াও। তাঁকে আপামর ভারতবাসী চেনে দূরদর্শনের ‘রামায়ণ’-এর সীতা হিসেবেই।
তবে একটি সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, শ্যামসুন্দর কালানি প্রয়াত হয়েছেন ২৯ মার্চ। তার আগের দিনই দূরদর্শনের পর্দায় ফের শুরু হয়েছে ‘রামায়ণ’-এর সম্প্রচার।
শ্যামসুন্দরের প্রয়াণের খবর অরুণ গোভিল এবং সুনীল লেহরীর কাছে এসে পৌঁছয় ১১ দিন পর, ৯ মার্চ। তার পরই তাঁরা টুইট করেন।
নেটাগরিকদের একটি বড় অংশের অভিযোগ, লকডাউনের জেরে হাসপাতালে ঠিকমতো পরিষেবা পাননি ক্যানসার আক্রান্ত প্রবীণ শ্যামসুন্দর কালানি।