Rhea Chakraborty

সুশান্ত-তদন্তে এ বার কি সন্ত্রাসদমন গোয়েন্দারা

তদন্তকারী সব ক’টি কেন্দ্রীয় সংস্থারই নজরে এখন প্রয়াত অভিনেতার বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২০ ০৪:০৮
Share:

রিয়া ও সুশান্ত

ইডি, সিবিআই, এনসিবি-র পরে কি এ বার এনআইএ? সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যুর তদন্তে যোগ দিতে পারে চতুর্থ কেন্দ্রীয় সংস্থা, আজ বিকেলে একটি টুইট করে এই বার্তা দিলেন বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক পি মুরলীধর রাও।

Advertisement

মুরলীধর টুইটারে লিখেছেন, ‘‘মামলাটি ক্রমশ ডালপালা ছড়াচ্ছে। অনেকগুলি বিষয় নিয়ে তদন্ত চালাতে হবে। তদন্তের জাল বিস্তৃত করতে এনআইকেও ময়দানে নামতে হতে পারে...হতেই পারে।’’ সন্ত্রাসদমনের দায়িত্বপ্রাপ্ত এই জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা ‘ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি’ কেন সুশান্তের মৃত্যু-তদন্তে যোগ দেবে, সে বিষয়ে অবশ্য কিছুই খোলসা করেননি বিজেপি নেতা। তবে গত মাসে এক প্রাক্তন র’ অফিসার দাবি করেছিলেন, সুশান্তের মৃত্যুতে দাউদ ইব্রাহিমের হাত থাকতে পারে। মৃত্যুর আগে সুশান্তকে হত্যার হুমকি দেওয়া হত বলে জানিয়েছিল মুম্বই পুলিশ। তিনি নাকি মৃত্যুর আগে ৫০ বার তাঁর ফোনের সিম পাল্টেছিলেন।

তদন্তকারী সব ক’টি কেন্দ্রীয় সংস্থারই নজরে এখন প্রয়াত অভিনেতার বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী। সিবিআই থেকে এখনও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা না-হলেও আর্থিক তছরুপের তদন্তে নামা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) বারবার রিয়া, তাঁর বাবা, তাঁর দাদা ও তাঁর বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আজ ইডি-র গোয়েন্দারা তাঁদের দফতরে তলব করেছিলেন রিয়ার বাবা, প্রাক্তন সেনা অফিসার ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তীকে। মুম্বই পুলিশ রিয়াদের বাড়ি এসে তাঁকে সঙ্গে করে ইডি-র দফতরে নিয়ে যায়। জানা গিয়েছে, ইডি-র নির্দেশেই ইন্দ্রজিৎকে আনতে রিয়াদের বাড়ি গিয়েছিল মুম্বই পুলিশ। তবে এই ঘটনার কিছু ক্ষণ আগেই একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে রিয়া দাবি করেন, তিনি ও তাঁর পরিবারের লোকজন নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। মুম্বই পুলিশের কাছে নিরাপত্তার জন্য সাহায্য চান তিনি। রিয়ার কথায়, ‘‘আমরা স্থানীয় থানাতেও গিয়েছিলাম। তবে তাদের কাছ থেকে কোনও সাড়া পাইনি।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: আমি আর সুশান্ত স্বামী-স্ত্রীর মতো থাকতাম, আমাদের জন্য ও কেন খরচ করবে না: রিয়া

আরও পড়ুন: ‘বাবাকে অত্যাচার, নিরাপত্তারক্ষীকে মারধর, আমরা কি বর্বর’, ফের পুলিশের দ্বারস্থ রিয়া

আজ নিয়ে পর পর সাত দিন সুশান্তের বন্ধু সিদ্ধার্থ পিঠানি এবং তাঁর বাড়ির পাচক ও পরিচারক নীরজ সিংহ ও দীপেশ সবন্তকে ডেকে পাঠিয়ে বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। সুশান্তের পরিবারের অভিযোগ ছিল, সুশান্তের জীবনযাপন নিয়ন্ত্রণ করতে রিয়া অভিনেতার সব আগের লোকজনকে ছাড়িয়ে নতুন পরিচারক ও পাচক নিয়োগ করেছিলেন। একটি বেসরকারি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রিয়া আজ জানিয়েছেন, নীরজ ও দীপেশ তাঁরা লিভ টুগেদার করার অনেক আগে থেকেই সুশান্তের বাড়িতে কাজ করতেন।

রিয়া সুশান্তের টাকা ওড়াতেন বলে তাঁর বিরুদ্ধে পটনা পুলিশের কাছে করা এফআইআরে দাবি করেছিলেন সুশান্তের বাবা কে কে সিংহ। আলোচনায় বারবার উঠে এসেছে গত বছর তাঁদের বিলাসবহুল ইউরোপ সফরের কথা। আজ ওই বেসরকারি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রিয়া দাবি করেন, সেই সময়ে একটি মডেলিংয়ের কাজ নিয়ে তাঁর প্যারিসে যাওয়ার কথা ছিল। বিজ্ঞাপন সংস্থাটিই তাঁর আন্তর্জাতিক সফরের খরচা দিচ্ছিল। রিয়ার কথায়, ‘‘কিন্তু সুশান্ত আমাকে বলে, চলো আমরা নিজেদের মতো করে বেড়াই। ও-ই বিজ়নেস ক্লাসে আমাদের টিকিট কাটে এবং প্যারিস, ভেনিস-সহ বিভিন্ন শহরে দামি দামি হোটেল বুক করে। আমি সুশান্তকে এত খরচ করতে বারণ করেছিলাম। কিন্তু ও শোনেনি। এটাই ওর জীবনযাপনের ধরন ছিল।’’ এই সফরেই সুশান্তের মানসিক অবসাদ খুব বেড়ে গিয়েছিল বলে আগে মুম্বই পুলিশকে জানিয়েছিলেন রিয়া।

রিয়ার বিরুদ্ধে সুশান্তকে মাদক দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। আজ আর একটি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রিয়া দাবি করেন, ‘‘সুশান্ত বহু দিন ধরেই মারিজুয়ানা খেত। ওকে সামলানোর অনেক চেষ্টা করেছিলাম।’’

সুশান্তের পরিবারের তরফে আজ ফের দাবি করা হয়েছে, ‘বিষ’ দিয়ে অভিনেতাকে মেরে ফেলেছেন রিয়া। সুশান্তের পারিবারিক উকিল বিকাশ সিংহের দাবি, ‘‘রিয়া অপরাধী। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে তার সাক্ষাৎকার নেওয়া উচিত হয়নি। কোনও কড়া কড়া প্রশ্ন করা তো দূরের কথা, রিয়াকে যেন নিজের ঢাক পেটানোর একটা সুযোগ দিয়ে দেওয়া হল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement