আবীর। ছবি: দেবর্ষি সরকার
ব্যোমকেশের সুবাদে পিরিয়ড ছবির অভিজ্ঞতা তাঁর রয়েছে। তবে এ বার গণ্ডি আরও একটু বড় করেছেন পরিচালক। সময়ের সরণি বেয়ে পৌঁছে গিয়েছেন চল্লিশের দশকে। বাংলা সিনেমার ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে অরিন্দম শীলের নতুন ছবি ‘মায়াকুমারী’। থ্রিল এই ছবিতেও থাকবে। তবে পরিচালকের কথায়, ‘‘এটা অরিন্দম শীল ঘরানার থ্রিলার নয়। ছবিতে হাই-ভোল্টেজ ড্রামা, রোম্যান্স প্রাধান্য পাবে।’’
ছবির নামচরিত্রে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। অরিন্দমের সঙ্গে এটি তাঁর প্রথম কাজ। দু’টি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে আবীর চট্টোপাধ্যায় ও রজতাভ দত্ত। রয়েছেন অরুণিমা ঘোষ, ইন্দ্রাশিস রায়, সৌরভ দাস, অনিন্দিতা বসু, অম্বরীশ ভট্টাচার্য প্রমুখ।
দেবলীনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি গল্প থেকে মায়াকুমারীর চরিত্রের প্রথম ধারণা পেয়েছিলেন অরিন্দম। তার পরে শুভেন্দু দাশমুন্সীর সঙ্গে মিলে তাকে গল্পের আকার দেন পরিচালক। এর আগে ‘গুপ্তধনের সন্ধানে’ ও ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’ ছবি দু’টির চিত্রনাট্য লিখেছিলেন শুভেন্দু। অরিন্দমের ছবিটির চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন তিনি।
মায়াকুমারী নামটির মধ্য দিয়েই পরিচালক তাঁর পাখির চোখ স্থির করে দিয়েছেন। সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি, তার মোহ-মায়া, কাছে-দূরের টানাপড়েন... ছবির গল্পে উঠে আসবে বাংলা ছবির বিবর্তনের নানা ধারা। বিভিন্ন চরিত্রের মধ্যে দর্শক খুঁজে পাবেন বাংলা ছবির কিংবদন্তিদের। উত্তমকুমার থেকে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, বাদ পড়বেন না কেউই।
রজতাভ দত্ত।
‘মায়াকুমারী’ ছবির কেন্দ্রে মায়াকুমারী (ঋতুপর্ণা) ও কানন কুমার (আবীর), চল্লিশের দশকের বাংলা ছবির সাড়া জাগানো জুটি। কেরিয়ারের মধ্যগগনে ছবির জগৎ থেকে হঠাৎ দূরে চলে যায় মায়াকুমারী। কেন, তা নিয়ে চলতে থাকে জল্পনা। গল্পে দেখানো হয়, শহর ছেড়ে বেশ খানিক দূরে লোকচক্ষুর আড়ালে স্বামী শীতল ভট্টাচার্যের (রজতাভ) সঙ্গে থাকত মায়াকুমারী। সেলুলয়েডে প্রথম চুম্বন ও খোলা পিঠ প্রদর্শনের কারণে তখনকার সমাজ মায়াকুমারীর সমালোচনা করে। তার জন্যই কি নায়িকার স্বেচ্ছা নির্বাসন ? প্রশ্নের উত্তর খোঁজার পথেই দর্শক পৌঁছে যাবেন সমসময়ে। যেখানে সৌমিত্র মল্লিক (ইন্দ্রাশিস) নামে এক পরিচালক মায়াকুমারী ও কাননকে নিয়ে বানাচ্ছে একটি ছবি। সে ছবির মুখ্য চরিত্রে তরুণ তুর্কি আহির চট্টোপাধ্যায় (আবীর) ও অরুণা চৌধুরী (অরুণিমা ঘোষ)। ঘটনাচক্রে কাননের নাতি আহির। এই ছবির শুটিংয়ে কি মিলবে না-পাওয়া প্রশ্নের উত্তর?
মায়াকুমারী, শীতল ও কাননের চরিত্রের দু’টি টাইমলাইন, একটি কম বয়স ও অন্যটি বেশি বয়সের। তবে আবীরের চরিত্রে যোগ হবে তৃতীয় একটি পরত, কারণ আহিরের চরিত্রেও তিনি। ‘‘গল্প, চরিত্র দুটোই খুব পছন্দ হয়েছে। অরিন্দমদার ছবি বলেই এটা করতে চাই। তবে এখনও চূড়ান্ত সম্মতি দিইনি,’’ বললেন আবীর চট্টোপাধ্যায়।
অরিন্দমের এই ছবি ক্যামেলিয়া প্রোডাকশনসের এখনও অবধি সবচেয়ে বড় বাজেটের ছবি। ছবিটি মিউজ়িক্যাল। গানের কথা লিখেছেন শুভেন্দু দাশমুন্সী। সঙ্গীত বিক্রম ঘোষের। ডিজ়াইনার অভিষেক রায়, মেকআপ শিল্পী সোমনাথ কুণ্ডু, হেয়ারড্রেসার হেনাকেও এই ছবির চরিত্র হিসেবে দেখা যাবে। অরিন্দমের কথায়, ‘‘আমি যাঁদের সঙ্গে কাজ করি, এই ছবি তাঁদের প্রতিও এক ধরনের ট্রিবিউট।’’