একটু ফিকে নীরজের ম্যাজিক

এই ছবির শত্রু কোনও সন্ত্রাসবাদী নয়। বরং দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অভ্যন্তরীণ দুর্নীতিতেই পরিচালকের পাখির চোখ। আর দেশের অন্দরের দুর্নীতি দেখাতে গিয়ে নীরজ বোধহয় একটু বেশি সাবধানী হয়েছেন।

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:০৩
Share:

যে স্ট্র্যাটেজি, স্টাইলের জন্য একজন পরিচালকের পরিচিতি, সেখান থেকেই তিনি যদি সরে আসেন, তবে ছবির জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি হয়। নীরজ পাণ্ডের ‘আইয়ারি’ ছবিটির সমস্যাও ঠিক সেই ধাঁচের। টানটান উত্তেজনা, সিট কামড়ে বসে থাকার ইচ্ছে, অ্যাকশন, মুহুর্মুহু ঘটনাপ্রবাহ যা যুক্তি-বুদ্ধির হিসেব গুলিয়ে দেবে... মানে, নীরজের ছবি থেকে যা যা প্রত্যাশিত, তা এই ছবিতে নেই। তার দায় অবশ্যই দুর্বল চিত্রনাট্যের ও সমস্যার সরলীকরণের। ‘আ ওয়েডনেসডে’, ‘স্পেশ্যাল ২৬’, ‘বেবি’র পর নীরজের কাছ থেকে তা কাম্য নয়।

Advertisement

এই ছবির শত্রু কোনও সন্ত্রাসবাদী নয়। বরং দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অভ্যন্তরীণ দুর্নীতিতেই পরিচালকের পাখির চোখ। আর দেশের অন্দরের দুর্নীতি দেখাতে গিয়ে নীরজ বোধহয় একটু বেশি সাবধানী হয়েছেন। তার জন্যই অনেক জায়গায় যুক্তি হারিয়েছে চিত্রনাট্য। মেজর জয় বক্সী (সিদ্ধার্থ) সেনাবিভাগের বিরুদ্ধে কেন বিদ্রোহী হল, তার কারণ বারবার কর্নেল অভয় সিংহকে (মনোজ) বোঝাতে চাইলেও অভয়ের মতো দর্শকও যেন সেই জবাবদিহিতে সন্তুষ্ট হয় না। এক সেনাপ্রধানের কেবিনে ‘বাগ’ বসানো কি এত সহজ? দীর্ঘ দিন অজয়ের সঙ্গে কাজ করার পরও আইটি বিশেষজ্ঞকে (রাকুল) অজয়ের আসল পরিচয় জানতে হয় মেজরের আইকার্ড দেখে? প্রশ্ন আরও অনেক।

মুশকিল হল, নীরজের আগের ছবিগুলির চিত্রনাট্যে যে প্রশ্ন ছিল না, তা নয়। কিন্তু দর্শককে তিনি ভাবার অবকাশ দিতেন না। এই ছবির প্রথমার্ধের মন্থর গতি, আবেগ নিয়ে নাটুকেপনার ফাঁকে ত্রুটিগুলো বেশি চোখে পড়ে।

Advertisement

ছবির শুরুতেই বিধিসম্মত সতর্কীকরণ ইংরেজি ও হিন্দিতে উচ্চারণ করে পড়া হয়। তাতে কী! সচেতন দর্শক বাস্তবের সঙ্গে মিল খুঁজে বের করবেনই। কারণ নীরজের ছবিতে বাস্তব ঘটনার প্রচ্ছন্ন উল্লেখ থাকবে না, সেটাও বিশ্বাসযোগ্য নয়। আদর্শ আবাসন কেলেঙ্কারির উল্লেখ রয়েছে ছবিতে। রয়েছে ইদানীংকালের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার কিছু পরিসংখ্যানও।

আইয়ারি

পরিচালনা: নীরজ পাণ্ডে

অভিনয়: মনোজ বাজপেয়ী,
সিদ্ধার্থ মলহোত্র,
রাকুল প্রীত সিংহ

৫/১০

কর্নেলের চরিত্রে মনোজ বাজপেয়ীর বডি ল্যাঙ্গোয়েজ অনবদ্য। সিদ্ধার্থ মলহোত্র চেষ্টা করেছেন। তবে অভিনয় তাঁর চেহারার ঔজ্জ্বল্যকে ছাপিয়ে যেতে পারেনি। আবেগের দৃশ্যে রাকুল প্রীত সিংহ সিদ্ধার্থের চেয়েও খারাপ। ছবিতে ছিলেন নীরজের ট্রাম্প কার্ড অনুপম খের এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে নাসিরুদ্দিন শাহ। আদিল হুসেনের চরিত্রের গুরুত্ব থাকলেও তাঁকে বিশেষ স্পেস দেওয়া হয়নি।

ছবির আবহ সংগীত উত্তেজনার পরিবেশ তৈরি করতে চাইলেও গল্পে সেই মোচড় ছিল না। ছবিতে বলা হয়, ‘আইয়ারি’ শব্দের অর্থ বেশভূষা বদলের ক্ষমতা। নীরজের এই বেশ তবে ঠিক জমল না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement