বাঁ-দিকে, সাদাত হাসান মান্টো। ডান দিকে, নওয়াজের নয়া লুক। ছবি: সংগৃহীত।
অ্যাথলিট, গ্যাংস্টার, পুলিশ অফিসার বা সিরিয়াল কিলার। সব চরিত্রেই অনায়াস যাতায়াত নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকির। আর প্রতি বারই তাঁকে নতুন করে খুঁজে পেয়েছেন দর্শক। এ বারও নিজেকে নয়া মোড়কে ঢেলে ফেলেছেন তিনি। নন্দিতা দাসের পরিচালিত ‘মান্টো’-তে কালজয়ী লেখক সাদাত হাসান মান্টোর ভূমিকায় এ বার দেখা যাবে নওয়াজকে।
আরও পড়ুন, ভংসালীকে চড়! প্রতিবাদে নাম থেকে রাজপুত সরালেন সুশান্ত
চল্লিশের দশকে সাহিত্যের আঙিনায় পা রাখা মান্টো এ দেশে জন্মালেও দেশভাগের পর পাড়ি দিয়েছিলেন পাকিস্তানে। ছোট গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, চিত্রনাট্য সব মিলিয়ে মাত্র গোটা বাইশ বই। আর তাতেই সময়-কাল ছাপিয়ে উঠেছেন। পাকাপাকি জায়গা পেয়েছেন সাহিত্যের ইতিহাসে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে চিরন্তন হয়ে উঠেছে মান্টোর হাতে গড়া চরিত্ররা। বার বার প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার কথা শুনিয়েছেন তাঁরা। আর নিজের অন্যতম প্রিয় লেখক মান্টোকে নিয়ে ফিল্ম করার ইচ্ছেটা নন্দিতার এখনকার নয়। গুজরাত দাঙ্গা নিয়ে ২০০৮-এ তাঁর পরিচালিত প্রথম ফিল্ম ‘ফিরাক’-এর আগেই নাকি ‘মান্টো’ করার কথা ভেবেছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, “মান্টোকে নিয়ে বহু দিন থেকেই ফিল্ম করার ইচ্ছে ছিল। এমনকী, ‘ফিরাক’ তৈরির আগে থেকেই তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করছিলাম।” কিন্তু, হঠাৎ মান্টো কেন? নন্দিতা বলেন, “মান্টোর লেখা চরিত্রগুলি যে বিরল অনুভূতির কথা বলে তা আজকাল আর নজরে পড়ে না। মান্টো যে ভাবে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছেন তা আমাকে ভীষণ ভাবে টানে। আর টানে ওঁর বাধনহীন সাহসিকতা।” নন্দিতা আরও বলেন, “মান্টোকে নিয়ে যত পড়াশোনা করছি ততই মনে হচ্ছে যেন আমার বাবার (শিল্পী যতীন দাস) কথা পড়ছি। এ যেন এক শিল্পীরই কথা!”
টুইটারে এ ছবিই পোস্ট করেছেন নওয়াজ।
নন্দিতার মতোই উৎসাহী শোনাল নওয়াজকেও। টুইটারে ‘মান্টো’-র ফার্স্ট লুকও পোস্ট করেছেন তিনি। রমন রাঘব যেন এক লহমায় বদলে গিয়েছেন মান্টোতে। মান্টোর মতোই এলোমেলো চুলে ঢাকা কপাল। চোখে বড় গোল চশমা। বিষাদময় মুখ। আর ফার্স্ট লুক দেখার পর মান্টোর চেহারার সঙ্গে নওয়াজের বেশ মিল খুঁজে পাচ্ছেন অনেকেই। তবে এই চরিত্রে প্রথমে ইরফান খানের কথাই ভেবেছিলেন নন্দিতা। কিন্তু, শেষমেশ নওয়াজকেই বাছলেন তিনি। সঙ্গে মান্টোর স্ত্রী ভূমিকায় রসিকা দুগল। ‘নো স্মোকিং’, বা ‘কিস্সা’র মতো ফিল্মে যিনি নজর কে়ড়েছেন আগেই। নওয়াজ বলেন, “চরিত্রটা করার কথা পাকা হওয়ার পর থেকেই মান্টোর লেখা প্রচুর বই পড়তে শুরু করেছি। মান্টোর তো কোনও ভিডিও ফুটেজ পাওয়া যায়নি। তাই উনি কী ভাবে কথাবার্তা বলতেন তা জানা এখন আর সম্ভব নয়। তবে ওঁর লেখাপত্র পড়ে যতটা সম্ভব একটা ছন্দ খোঁজার চেষ্টা করছি।”