উৎপলেন্দু চক্রবর্তী। ছবি: আনন্দবাজার আর্কাইভ।
উত্তাল সময়ে খারাপ খবর টলিপাড়ায়। প্রয়াত হলেন পরিচালক উৎপলেন্দু চক্রবর্তী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার রিজেন্ট পার্কের বাড়িতে তাঁর জীবনাবসান হয়। বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। পরিচালকের প্রয়াণে শোক জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার)-এ তিনি লিখেছেন, “প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক উৎপলেন্দু চক্রবর্তীর মৃত্যুতে শোকাহত। তাঁর প্রত্যেকটি ছবি চলচ্চিত্র সমালোচকদের দ্বারা প্রশংসিত। এবং নানা সম্মানে সম্মানিত। ওঁর মৃত্যু চলচ্চিত্র জগতে শূন্যতা সৃষ্টি করবে। ওঁর পরিবার এবং বন্ধুদের প্রতি আমার সমবেদনা।”
উৎপলেন্দুর দীর্ঘ দিনের সহকারী অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “সন্ধ্যায় চা খেয়েছিলেন। তার পরেই হঠাৎ করে ঝিমিয়ে পড়লেন। চিকিৎসক জানিয়েছেন, তিনি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।” দিন কয়েক আগেও উৎপলেন্দু আবার ছবি তৈরির ইচ্ছাপ্রকাশ করেন।
আশির দশকে ‘ময়নাতদন্ত’, ‘চোখ’, ‘দেবশিশু’র মতো একাধিক পুরস্কারজয়ী ছবির পরিচালক উৎপলেন্দু। ১৯৮২ সালে ‘চোখ’ ছবিটি ‘সেরা ছবি’র সম্মান জিতে নেয়। উৎপলেন্দুর ঝুলিতে আসে সেরা পরিচালকের পুরস্কার। ‘চোখ’ ছবিটির পোস্টার এঁকে দিয়েছিলেন স্বয়ং সত্যজিৎ রায়। এ ছাড়াও উৎপলেন্দুর ঝুলিতে রয়েছে অন্যান্য আরও পুরস্কার, স্বর্ণপদক।
এপ্রিল মাসে বাড়িতে পড়ে গিয়ে কোমরের হাড় ভাঙে উৎপলেন্দুর। তার পর বর্ষীয়ান পরিচালকের কোমরের অস্থিসন্ধি প্রতিস্থাপন করা হয়। স্মৃতিভ্রমের সমস্যাও ছিল। ভুগছিলেন প্রস্টেট এবং সিওপিডি-র সমস্যায়। মে মাসেও পরিচালককে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বাড়ি ফিরে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। তার পরেই এল দুঃসংবাদ।
উৎপলেন্দুর স্ত্রী পরিচালক শতরূপা সান্যাল। তাঁদের দুই মেয়ে চিত্রাঙ্গদা শতরূপা ও ঋতাভরী চক্রবর্তী টলিপাড়ার প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী। দীর্ঘ দিন আগে প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ এনে আলাদা থাকতে শুরু করেন শতরূপা। উৎপলেন্দুর সঙ্গে তাঁর পরিবারের সদস্যদের কোনও যোগাযোগ নেই। ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, শেষ দিন পর্যন্ত দুই মেয়ের কাজের প্রশংসা করেছেন তিনি। মঙ্গলবারই উৎপলেন্দুর শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার কথা। কিন্তু সেখানে পরিচালকের পরিবারের সদস্যেরা উপস্থিত থাকবেন কি না, তা এখনও জানা যায়নি।