(বাঁ দিকে) সানি দেওল। নাসিরউদ্দিন শাহ (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
বলিউডের অন্যতম কৃতী এবং নামজাদা অভিনেতা নাসিরউদ্দিন শাহ। তবে সেটাই তাঁর একমাত্র পরিচয় নয়। কৃতী অভিনেতার পাশাপাশি স্পষ্টবক্তা তিনি। রাজনৈতিক ভাবে বেশ সজাগ নাগরিকও। সমসাময়িক ঘটনা সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল বর্ষীয়ান এই অভিনেতা। নিজের মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হলেও মতপ্রকাশ করতে কখনও পিছপা হন না নাসির। কয়েক মাস আগে এক সাক্ষাৎকারে চলতি বছরের অন্যতম বিতর্কিত ছবি ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে মুখ খুলছিলেন নাসির। এ বার নাসিরের মুখে সানি দেওলের ‘গদর ২’ ছবির প্রসঙ্গ।
গত অগস্ট মাসে মুক্তি পাওয়া ‘গদর ২’ চলতি বছরে বলিউডের অন্যতম সফল ছবি। বক্স অফিসে এক মাসের মধ্যে ৫০০ কোটির ব্যবসা ছাড়িয়ে গিয়েছে সানির এই ছবি। ব্যবসায়িক সাফল্যের পাশাপাশি বিপুল জনপ্রিয়তাও অর্জন করেছে ‘গদর ২’। সেই জনপ্রিয়তার জোরেই বলিউডের ফের নিজের জমি শক্ত করতে পেরেছেন ধর্মেন্দ্র-পুত্র। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ‘গদর ২’ নিয়ে প্রশ্ন করা হয় নাসিরকে। ‘গদর ২’-এর ব্যবসায়িক সাফল্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকলেও ওই ছবি নিয়ে একটিও প্রশস্তিমূলক বাক্য খরচ করতে নারাজ বর্ষীয়ান অভিনেতা। বরং নাসির বলেন, ‘‘এই ধরনের ছবি সমাজের জন্য আদপে ভীষণই ক্ষতিকর। ‘গদর ২’-এর মতো ছবির বক্তব্য— শুধু দেশকে ভালবাসলেই চলবে না, ঢাকঢোল বাজিয়ে তা জানান দিতে হবে, তা জাহির করতে হবে।’’ নাসিরের আক্ষেপ, ‘গদর ২’, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’-র মতে ছবির ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে এমন ছবি, যা আসলে এই সময়ের বাস্তব চিত্রকে তুলে ধরছে। নাসিরের মতে, ‘‘সুধীর মিশ্র, হংসল মেহতার মতো পরিচালকরা চেষ্টা করছেন সত্যিটাকে সিনেমার পর্দায় তুলে ধরতে। স্রেফ জনপ্রিয়তার জন্য ‘গদর ২’-এর মতো ছবি নিয়ে আলোচনা বেশি হচ্ছে। তবে আমি আশা করব হংসল, সুধীরের মতো পরিচালকরা যাতে তাতে হতাশ না হয়ে পড়েন। আজ থেকে ১০০ বছর পরে যখন মানুষ ‘ভীড়’ আর ‘গদর ২’ দেখবেন, তখন তাঁরা বুঝতে পারবেন কোন ছবি সত্যিটাকে পর্দায় তুলে ধরেছিল।’’
কয়েক মাস আগে এক সাক্ষা়ৎকারে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন নাসির। ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র মতো ছবির বক্স অফিস সাফল্য আদতে ভয়ঙ্কর একটা ইঙ্গিত, মন্তব্য করেছিলেন তিনি। তাঁর মতে, হিটলারের সময়ে নাৎসি জার্মানিতেও নাকি ঠিক এ রকম ভাবেই ছবি তৈরির রীতি চালু করা হয়েছিল। সরকারের প্রশস্তি করে ছবি বানানোর নিদান দেওয়ার ফলে বহু জার্মান ছবিনির্মাতা নাকি সেই সময় দেশ ছাড়তেও বাধ্য হয়েছিলেন। বর্ষীয়ান অভিনেতার আক্ষেপ, ‘ভীড়’, ‘ফরাজ়’, ‘অফওয়া’র মতো ছবি মুক্তি পাওয়ার দিন কয়েকের মধ্যেই হারিয়ে যাচ্ছে, অথচ বক্স অফিসে রমরমিয়ে চলছে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র মতো ছবি।