(বাঁ দিকে) বাসুদেব আচারিয়া, মুনমুন সেন (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
প্রবীণ সিপিএম নেতা তথা বাঁকুড়ার ন’বারের সাংসদ বাসুদেব আচারিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করলেন ওই কেন্দ্রেরই প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেত্রী মুনমন সেন। যে মুনমুনের কাছে ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বাঁকুড়ায় পরাস্ত হতে হয়েছিল বাসুদেবকে। ব্যবধান ছিল প্রায় এক লক্ষ ভোটের। আনন্দবাজার অনলাইনকে মুনমুন বলেন, ‘‘খবরটা শুনে খারাপ লাগছে। ওঁর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত আলাপ ছিল না। কিন্তু শুনেছি, খুব ভাল মানুষ ছিলেন। সেই জন্যই উনি ন’বার ভোটে জিতেছিলেন। ওঁর সঙ্গে আলাপ করার খুব ইচ্ছে ছিল। কিন্তু সেই সুযোগটা আর হল না।’’
২০০৯ সালের লোকসভা ভোটেই বামেদের ‘গড়’ হিসাবে পরিচিত অনেক আসনে তৃণমূল ধস নামিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু সে বার বাঁকুড়া কেন্দ্রে অধুনা প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায় কংগ্রেস-তৃণমূলের জোটপ্রার্থী হিসেবে কংগ্রেসের প্রতীকে ভোটে লড়েছিলেন। দুঁদে রাজনীতিক সুব্রতও বাসুদেবকে হারাতে পারেননি। কিন্তু ২০১৪ সালে মুনমুনকে দাঁড় করিয়েই বাঁকুড়া আসন বামেদের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল তৃণমূল।
২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে রাজনীতিতে আনকোরা মুনমুনকে বাঁকুড়ায় প্রার্থী করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেককে অবাক করে দিয়েই বাঁকুড়ার ন’বারের সাংসদ বাসুদেবকে পরাস্ত করে লোকসভায় পৌঁছন মুনমুন। উল্লেখ্য, তারকা প্রার্থীদের দাঁড় করিয়ে যে অভিজ্ঞ রাজনীতিকদের পরাস্ত করা যায়, তার প্রমাণ মিলেছিল ২০০৯ সালের ভোটেই। সে বার বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা ব্রজ মুখোপাধ্যায়কে পরাস্ত করেছিলেন অভিনেত্রী শতাব্দী রায়। ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের ভোটে রায়দিঘিতে কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়কে পরাস্ত হতে হয়েছিল অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়ের কাছে। ২০১৬ সালের ভোটেও রায়দিঘিতে কান্তিকে হারিয়েছিলেন দেবশ্রী।
২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বাঁকুড়ায় মুনমুন জিতলেও ২০১৯-এর ভোটে তাঁর আসন বদল করে দিয়েছিল তৃণমূল। তখন বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়র বিরুদ্ধে আসানসোলে প্রার্থী করা হয় মুনমুনকে। ফের বাঁকুড়ায় লড়তে পাঠানো হয় সুব্রতকে। কিন্তু ফল বার হতে দেখা যায়, বাঁকুড়া যেমন তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছে, জিতে গিয়েছে বিজেপি, তেমন আসানসোলেও বিজেপির বাবুলের কাছে পরাস্ত হয়েছেন মুনমুন। যদিও বাবুল এখন তৃণমূলে। মমতা মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য তিনি। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে হারার পর থেকে রাজনীতিতেও আর বিশেষ দেখা যায় না মুনমুনকে।