বলিউডে পরোপকারী তারকাদের মধ্যে প্রথম সারিতে আছেন মিঠুন চক্রবর্তী। তিনি এতটাই নিঃস্বার্থ ভাবে অন্যের উপকার করেন, যে তাতে তাঁর নিজের ক্ষতি হলেও দু’বার ভাবেন না।
অভিনেত্রী সিমি গারেওয়ালের উপকার করতে গিয়ে এক বার এ রকমই হয়েছিল মিঠুনের। শুধু সাহায্য করাই নয়, মিঠুনের জন্য সিমির বহু দিনের স্বপ্নও পূর্ণ হয়েছিল।
‘কর্জ’ ছবির জন্য সিমি ইন্ডাস্ট্রিতে সুপারহিট নায়িকা হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনা করারও ইচ্ছে ছিল।
সিমি একটি ছবি পরিচালনা করবেন বলে ঠিক করেন। সেখানে তিনি মনোনীত করেছিলেন বিনোদ খন্না ও অমরীশ পুরীকে। পাশাপাশি পরিচালনার সঙ্গে সিমি-ও এই ছবিতে অভিনয় করবেন বলে ঠিক করেন। ছবির নাম ঠিক হল ‘রুখসত’।
ছবির শুটিং তখন শুরু হবে। তার ঠিক ক’দিন আগেই সিমি জানতে পারলেন, তাঁর ছবির নায়ক বিনোদ খন্না সংসার ও বলিউড ছেড়ে ওশোর আশ্রমে চলে গিয়েছেন সন্ন্যাসজীবনে।
এ বার তো সিমির মাথায় হাত। শুটিং শুরু না হলে প্রযোজকের বড় অঙ্কের টাকার ক্ষতি হয়ে যাবে। তিনি প্রথমে অমিতাভ বচ্চনের কাছে যান। তার পরে ঋষি কপূরের দ্বারস্থ হন। অনুরোধ করেন তাঁর ছবিতে অভিনয় করতে। কিন্তু কেউ সময় দিতে পারলেন না।
এর পর সিমি যান রাজ বব্বরের কাছে। কিন্তু সেখানেও কোনও সাহায্য পেলেন না তিনি। কারণ সেই মুহূর্তে আমেরিকা গিয়ে ছবির শুটিং করা সম্ভব ছিল না রাজ বব্বরের।
এমন এক পরিস্থিতিতে কেউ সিমিকে বলে মিঠুনের কথা। সে সময় মিঠুন নিজের কেরিয়ারের শীর্ষে। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে সবাই জানতেন এ রকম বিপদে যদি কেউ কাউকে সাহায্য করেন, তা হলে সেটা মিঠুন-ই করবেন।
মিঠুনের সঙ্গে দেখা করলেন সিমি। সমস্যার কথা শুনে আশ্বস্তও করলেন। ক’দিন সময় চেয়ে নিলেন। মিঠুনের সঙ্গে কথা বলে অনেকটাই ভারমুক্ত হলেন সিমি।
শেষ অবধি মিঠুন-ই এই ছবিতে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেন। নিজের ব্যস্ত সূচি থেকে সময় বার করে তিনি সিমির পরিচালক হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করেন।
কিন্তু বক্স অফিসে চূড়ান্ত ব্যর্থ হয় ‘রুখসত’। এই ছবিতেই শেষ বারের মতো অভিনয় করেন সিমি। তার পর অভিনেত্রীজীবনকে কার্যত বিদায় জানান তিনি।
এই ছবি থেকে মিঠুনেরও কিছু পাওয়ার ছিল না। তবু তিনি সিমির পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। নিজের লাভক্ষতির হিসেব না করেই। আরও এক বার মিঠুন প্রমাণ করেছিলেন বলিউডি তারকাদের মধ্যে তিনি সিংহহৃদয়।