মিঠুন চক্রবর্তী এবং শক্তি কপূরের বন্ধুত্ব অনেক দিনের। সেই ১৯৭৩ সাল থেকে বন্ধুত্বের সূত্রপাত। তা এখনও একই রকম রয়ে গিয়েছে। ভিলেন-হিরোর এই বন্ধুত্ব কী ভাবে হল, তা নিয়ে মজার একটা ঘটনা রয়েছে।
ঘটনাটি তাঁদের কলেজ জীবনে। ফিল্মে শক্তি কপূরকে অনেক পিটিয়েছেন মিঠুন। কিন্তু জানেন কি বাস্তবেও প্রথম দেখাতেই শক্তি কপূর বেধড়ক মার খেয়েছিলেন মিঠুনের হাতে!
ডিস্কো সেনসেশন মিঠুন এবং সেক্সি ভিলেন শক্তি কপূর দু’জনে একসঙ্গে ৫২টি ফিল্মে অভিনয় করেছেন। তাঁদের একসঙ্গে প্রথম ফিল্ম ছিল ‘লাপারবা’।
শক্তি কপূরের পুরো নাম সুনীল সিকান্দরলাল কপূর। রিল লাইফে বেশির ভাগ সময় ভিলেনের অভিনয়ই করেছেন। কিন্তু বাস্তবে তিনি একেবারে উল্টো স্বভাবের মানুষ তিনি।
মিঠুন আর শক্তি কপূরের পরিচয় কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে আসার অনেক আগে থেকেই। পুণের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া-তে পড়ার সময় থেকে।
যদিও মিঠুন কলেজে শক্তি কপূরের সিনিয়র ছিলেন। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত ওই কলেজের ছাত্র ছিলেন মিঠুন। তার পর ওই কলেজেই শিক্ষকতা করতেন এবং কলেজ হস্টেলে থাকতেন।
শক্তি কপূরের প্রথম দিন ছিল কলেজে। মিঠুন ছিলেন তাঁর থেকে এক বছরের সিনিয়র। কলেজের প্রথম দিন বলে কথা, খুব স্টাইলে কলেজে ঢোকেন শক্তি। ঠিক যেমন ফিল্মে বড়লোকের বখাটে ছেলেরা করে থাকে, অনেকটা সে রকম ভাবেই কলেজ হস্টেলে প্রবেশ করেন তিনি।
দামি ফোর্ড গাড়িতে কলেজ হস্টেলের গেট পর্যন্ত আসেন। শোনা যায়, খুব ফিল্মি স্টাইলে এক হাতে মদের বোতল নিয়ে গেট দিয়ে ভিতরে ঢোকেন।
প্রথম যাঁর মুখোমুখি তিনি হয়েছিলেন, তিনি ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। এক সাক্ষাত্কারে শক্তি কপূর জানিয়েছিলেন, হস্টেল রুমের বাইরে ছেঁড়া লুঙ্গি পরে দাঁড়িয়েছিলেন মিঠুন।
তাঁর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মিঠুন চক্রবর্তীকে মদের বোতল দেখিয়ে খাওয়ার প্রস্তাব দেন শক্তি। তার পর কী হয়েছিল?
প্রস্তাব তো ফিরিয়ে দিয়েছিলেনই মিঠুন, উল্টে সিনিয়রকে মদ খাওয়ার প্রস্তাব দেওয়ার জন্য নাকি বেধড়ক পিটিয়েছিলেন শক্তি কপূরকে।
শক্তি কপূরের চুল ধরে টেনে হস্টেলের ভিতরে নিয়ে যান মিঠুন। আরও অনেক সিনিয়র মিলে তাঁকে রীতিমতো র্যাগিং করেন। অন্ধকার ঘরে মেঝেতে বসিয়ে রাখা হয় তাঁকে। ছোট এবং অসমান করে কেটে দেওয়া হয় শক্তির চুল।
এতেই শেষ নয়। আর কোনওদিন মদের বোতল হাতে দেখলে এর চেয়েও যে ভয়ানক পরিস্থিতি হবে তাঁর, বুঝিয়ে দেওয়া হয় শক্তিকে। তার পর শীতের রাতে তাঁকে হস্টেলের সুইমিং পুলে সাঁতার কাটতে বাধ্য করা হয়।
এই ঘটনায় শক্তি কপূর এতটাই ঘাবড়ে গিয়েছিলেন যে, পরবর্তী চার দিন নাকি হস্টেলে নিজের রুম থেকে বার হননি।
তার পর অবশ্য মিঠুনই এগিয়ে গিয়েছিলেন শক্তি কপূরের কাছে। শক্তি কপূরও তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিলেন। দু’জনে সেই থেকেই খুব ভাল বন্ধু হয়ে যান। সেই বন্ধুত্ব আজও অটুট।