ঋদ্ধি সেন, রাজনন্দিনী পাল ও ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়
সুজয়দা আর পুচকির পুজোর প্রেমে তোলপাড় ইন্টারনেট প্রজন্ম। তর্ক-বিতর্ক যা-ই থাকুক, এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, ডেটিং অ্যাপের যুগেও পুজো-প্রেম হারিয়ে যায়নি। হয়তো সেই প্রেমের ভাবপ্রকাশের ভাষা, স্থান, কাল বদলেছে। তবে পাটভাঙা শাড়ি এখনও আড়চোখে খুঁজে বেড়ায় নতুন পাঞ্জাবির স্পর্শকে। আলতো ছোঁয়া, হালকা হাসি, ইতস্তত চাহনি... এখনও মন ভাঙে, মন গড়ে। প্রেম খোঁজার প্ল্যাটফর্ম এখন হাতের মুঠোয়। তবু পুজোর গন্ধমাখা ভাল লাগা ঝকঝকে মুক্তোর মতো তোলা থাকে স্মৃতির কৌটোয়। বয়স বাড়ে, সম্পর্কে জটিলতা বাড়ে। তবে ফিরে ফিরে ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করে সেই না-বলা প্রেমকে।
কিছুটা এমনই হাল অভিনেত্রী রাজনন্দিনী পালের। ‘‘বছর দুয়েক আগের কথা। বন্ধুদের সঙ্গে উত্তর কলকাতার ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলাম। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে দূর থেকে শুনতে পাচ্ছিলাম, আমার পছন্দের একটা গান কেউ লাইভ পারফর্ম করছে। খুব কৌতূহল! দেখলাম, প্যান্ডেলের পাশেই মঞ্চে একটা ছেলে গান গাইছে। আমি পুরো গানটা শুনেছিলাম। ছেলেটা হয়তো আমাকে দেখেইনি। কিন্তু সেই দিনের পর থেকে আমার মন জুড়ে ছিল ছেলেটি। বন্ধুরা অনেক বার বলেছিল, কথা বলতে। কিন্তু বলিনি। কিছুই তো জানতাম না যে, তাকে ফেসবুকে খুঁজব! তবে বন্ধুরা খুব খ্যাপাত। আর অনেক দিন পর্যন্ত আমি ওই ছেলেটির কথাই ভাবতাম,’’ নস্ট্যালজিয়া অষ্টাদশীর। এ বছর পুজোয় ছবির প্রচারের কাজে ব্যস্ত থাকবেন রাজনন্দিনী। এই মুহূর্তে ‘সিঙ্গল’ হলেও নায়িকা প্রেমের জন্য কিন্তু ‘রেডি।’
প্রেমের মাঠে গোল দিতে পারেন দুই তরুণ তুর্কি ঋদ্ধি সেন ও ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়। এই পুজোয় তাঁদের ছবিও মুক্তি পেয়েছে। ঋদ্ধির পুজো-প্রেম বলতেই মনে পড়ে, ‘‘তখন ‘ওপেন টি বায়োস্কোপ’-এর শুটিং চলছিল। অষ্টমীতে রাত আড়াইটেয় প্যাকআপ হয়েছিল। কে আর তখন ঘুমোয়? নবমীর দিন সকাল সকাল নতুন কুর্তা পরে লেকে প্রেম করতে গিয়েছিলাম। মেয়েটির সঙ্গে অঙ্কের টিউশনে আলাপ। আমারই বয়সি। ও হলুদ শাড়ি পরে এসেছিল। মেয়েটির মা আমাদের সে দিন রেস্তরাঁয় খাওয়াতেও নিয়ে গিয়েছিলেন।’’ এ বার ঋদ্ধির প্ল্যান অবশ্য সুরঙ্গনাকে ঘিরেই!
স্কুলবয়সের পুজো-প্রেম মিস করেন ঋতব্রত। ‘‘স্কুলের বন্ধু আর পাড়ার বন্ধুরা মিলে একসঙ্গে দল বেঁধে বেরোতাম। তখন তো মোবাইল বা ফেসবুক কিছুই ছিল না। কোনও বন্ধুকে ধরে এক বান্ধবীর ল্যান্ডলাইন নম্বর জোগাড় করা, ভয়ে ভয়ে তাকে ফোন করা যেন তার বাবা ফোনটা না তুলে ফেলেন... এই থ্রিলটা খুব মিস করি।’’ বন্ধুদের উদ্যোগে পুজো-প্রেমও হয়েছিল ঋতব্রতর। ‘‘এক এক পুজোয় এক এক জনকে টার্গেট করা হতো। যাতে যে যাকে পছন্দ করে, তার সঙ্গে বেরোতে পারে। আমারও সেই সৌভাগ্য হয়েছিল।’’ এ বছর অবশ্য ‘প্রেমহীন’ পুজোই কাটাবেন তিনি।
রাজনন্দিনীর ছবি: অমিত দাস; মেকআপ: পরিণীতা সরকার; পোশাক: পূজা সচদেব;
জুয়েলারি: পূজা আগরওয়াল; শুটিং কোঅর্ডিনেশন: ঈপ্সিতা বসু; লোকেশন ও ফুড: ফ্লোটেল