জীবনের শেষ মুহূর্তেও হাসছিলেন লতা। কী ভাবছিলেন তিনি?
মৃত্যুর আগের শেষ কয়েক মুহূর্তে ঠিক কী ভাবছিলেন লতা মঙ্গেশকর? গোটা জীবনের প্রাপ্তি আর শিখরছোঁয়া সাফল্য কি তাঁকে তৃপ্তি দিয়েছিল? নাকি ঘিরে ধরেছিল জীবনের সব না-পাওয়ার বিষাদ? সে সবের উত্তর পাওয়ার সুযোগ নেই আর। কিন্তু কেমন ছিল লতার জীবনের শেষ মুহূর্ত? নিজেই সে কথা জানালেন মুম্বইয়ের হাসপাতালের চিকিৎসক প্রতীত সমদানি।
ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালের আইসিইউয়ে ভর্তির পর থেকেই লতার চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন প্রতীত। কিংবদন্তি গায়িকার শেষ মুহূর্তটুকুর সাক্ষী থাকতে পারা তাঁর কাছে আজীবনের পাওনা, বলছেন তিনি। প্রতীতের কথায়, “জীবন শেষের মুহূর্তটিতে স্মিত হাসি লেগে ছিল লতাজির মুখে। সেই হাসিটা আমার সারা জীবন মনে থাকবে।”
গত কয়েক বছর ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা অসুস্থতায় লাগাতার ভুগছিলেন প্রবীণ শিল্পী। শেষ তিন বছর তাঁর চিকিৎসা করেছেন প্রতীত। জানালেন, অসুস্থতার কারণে আগের মতো সকলের সঙ্গে আর দেখা করতে পারতেন না লতা। কথাও বলতেন খুবই কম। তবু তার মধ্যেও সকলের জন্য ভাবা, সকলের ভাল চাওয়ায় বিরতি পড়েনি এতটুকুও। প্রতীত বলেন, “এত বড় মাপের মানুষ হয়েও কী সহজ সরল ছিলেন লতাজি! সব সময়ে হাসি মুখ, মিষ্টি ব্যবহার। যখনই হাসপাতালে ভর্তি হতেন, বারবারই বলতেন— সব মানুষকে যেন সমান গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা করা হয়।”
প্রতীতের আবদারেই তাঁর আট বছরের মেয়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন লতা। ছোট্ট মেয়েটির সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়ে যায় প্রথিতযশা শিল্পীর। এমনকি, অসুস্থ অবস্থাতেও তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন ভিডিয়ো কলে। আট বছরের সেই মেয়েও হাতে চিঠি লিখত কিংবদন্তি গায়িকাকে। লতার মৃত্যুতে তাই ভেঙে পড়েছে সে-ও, জানিয়েছেন তার বাবা, লতার চিকিৎসক।
গত ৮ জানুয়ারি কোভিডে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৯২ বছরের লতা। সঙ্গে নিউমোনিয়া সংক্রমণ এবং অন্যান্য বার্ধক্যজনিত জটিলতার কারণে শিল্পীকে রাখা হয়েছিল আইসিইউয়ে। তিন সপ্তাহের লড়াই শেষে সেখানেই রবিবার প্রয়াত হন ‘জীবন্ত সরস্বতী’।