রিয়া ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত।
জন্ম এবং বেড়ে ওঠা কলকাতায়। কিন্তু এই মুহূর্তে পড়াশোনা করছেন বাংলাদেশে। অভিনয়ের প্রথম সুযোগ ও এল ও পার বাংলা থেকেই। বাংলাদেশের অভিনেতা এ পার বাংলায় এসে অভিনয়ে সুযোগ পাচ্ছেন, তার একাধিক উদাহরণ টলিপাড়ায় রয়েছে। কিন্তু বিপরীতটা সচরাচর দেখা যায় না। মডেল অভিনেত্রী রিয়া ঘোষের ক্ষেত্রে কিন্তু এমনটাই ঘটেছে।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় মহিলা অ্যাথলিট সুলতানা কামালের বায়োপিক তৈরি করেছেন পরিচালক রিয়াজুল হক ইমরান। ‘অ্যাথলিট সুলতানা কামাল’ নামের এই তথ্যচিত্রে নামভূমিকায় অভিনয় করেছেন এ পার বাংলার রিয়া ঘোষ। এই মুহূর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর পাঠক্রমের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। কী ভাবে সুযোগ আসে? রিয়া বললেন, ‘‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম সোসাইটির এক জন সিনিয়র এই প্রজেক্টের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বলেছিলেন, আমার মুখের সঙ্গে সুলতানা কামালের নাকি মুখের মিল রয়েছে।’’
এক সময় কলকাতায় নিয়মিত মডেলিং করতেন রিয়া। তবে কলকাতায় কখনও অভিনয় করেননি। বয়সের কারণে কলকাতার গর্ভনমেন্ট আর্ট কলেজে সুযোগ মেলেনি। আঁকার প্রতি ভালবাসা থেকেই বাংলাদেশের দিকে পা বাড়ান তিনি। বললেন, ‘‘ছোটবেলায় স্কুলে নাটক করেছি। কিন্তু এই ভাবে সুযোগ পাব, সেটা কোনও দিন কল্পনা করিনি।’’ একই সঙ্গে রিয়া বিশ্বাস করেন, কলকাতা তাঁকে সব কিছু শিখিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে তিনি ভারতের প্রতিনিধি। তাঁর কথায়, ‘‘তাই আমার দায়িত্বটা অনেক বেশি। কলকাতার শিল্পী হিসেবে বাংলাদেশে অভিনয় করছি, এটা আমার কাছে খুবই গর্বের বিষয়।’’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ কামালের সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন সুলতানা। ১৯৭৫ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের উপর হামলায় তিনি শহিদ হন। সত্তরের দশকে মহিলা অ্যাথলিট হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন সুলতানা। একশো মিটার লং জাম্পে দেশের মধ্যে নজির গড়েন তিনি। নারী ক্ষমতায়নের পক্ষেও সুলতানা কাজ করেছিলেন। এ রকম একটি চরিত্রে সুযোগ পেয়ে আপ্লুত রিয়া। কী ভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনি? বেলঘরিয়ার মেয়ে রিয়া বললেন ‘‘আমার দেহের গঠন অ্যাথলিটদের মতোই। তাই খুব বেশি নিজেকে বদলাতে হয়নি। নির্মাতাদের থেকে অনেক তথ্য পেয়েছিলাম। আমাদের মেন্টর অমিতাভ রেজা চৌধুরীর থেকেও অনেক সাহায্য পেয়েছি। তবে শেষের দিকে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষকের অধীনে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম।’’
ভবিষ্যতে অভিনয়ের প্রস্তাব পেলে কী করবেন রিয়া? হেসে বললেন, ‘‘এই মুহূর্তে আমি আমার পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে চাই। কারণ সেই সূত্রেই তো অভিনয়ে আসা। বেশ কিছু প্রস্তাব এসেছে। কিন্তু তাঁদের অপেক্ষা করতে বলেছি।’’
স্বল্পদৈর্ঘ্যের এই ডকু ফিচারটি বাংলাদেশ সরকারের অনুদানে তৈরি হয়েছে। আপাতত চলছে পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ। তার পর স্থির হবে মুক্তির দিনক্ষণ।