এক সময়ে মুম্বই শহরে অভিনেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হতে লড়াই করেছেন কার্তিক। এই সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সতীশ। ছবি: সংগৃহীত।
কত তারকার আলোকিত হয়ে ওঠার নেপথ্যে রয়ে গিয়েছেন সতীশ কৌশিক। তাঁর চলে যাওয়া যেন শূন্য করে দিয়ে গিয়েছে এক একটি হৃদয়। অন্তঃসত্ত্বা নীনা গুপ্তকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া থেকে শুরু করে সতীর্থদের পাশে দাঁড়ানো— সবেতেই ছিলেন ‘তেরে নাম’ পরিচালক। তাঁর শেষকৃত্যে সলমন খানের অশ্রুসজল মুখ ব্যথিত করেছে অনুরাগীদের। সব শেষে মুখ খুললেন মায়ানগরীর তরুণ সুপারস্টার কার্তিক আরিয়ানও। জানালেন, লড়াইয়ের দিনগুলিতে তাঁকেও আশ্রয় দিয়েছিলেন সতীশ। কার্তিকের চোখে তিনিই মুম্বইয়ের ‘সেরা বাড়িওয়ালা’।
৮ মার্চ, সতীশের আচমকা মৃত্যু নাড়িয়ে দিয়েছে বলিউডকে। তাঁর সতীর্থরা শোকে বিহ্বল। সতীশের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা নানা স্মৃতি উঠে আসছে তাঁদের কথায়। কেমন মানুষ ছিলেন সতীশ? সকলেই একবাক্যে জানিয়েছেন, পরোপকারী, দিলদরিয়া। তবে অনুজপ্রতিম অভিনেতা কার্তিকের স্মৃতিতে কী ভাবে রইলেন সতীশ?
ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে সতীশের একটি ছবি শেয়ার করেন কার্তিক। দেখা যায়, বুকের কাছে দুটো হাত ভাঁজ করা, বিশাল এক ঘরে দাঁড়িয়ে আছেন সতীশ। ক্যামেরার দিকে পোজ দিয়ে মৃদু হাসছেন। তাঁর পরনে ছাপা জামা আর ডেনিম। ঝলমলে সেই ছবি শেয়ার করে কার্তিক লিখলেন, “মহান অভিনেতা, মহান মানুষ এবং সেই সময়ে আমার শ্রেষ্ঠ আশ্রয়দাতা, যখন আমি লড়াই করছিলাম এই শহরে। আপনার উৎসাহব্যঞ্জক কথা এবং হাসির জন্য আপনাকে সব সময় মনে রাখব।” অভিনেতার আত্মার শান্তিকামনা করে জোড় হাতে নমস্কারের ইমোজি দেন অভিনেতা।
এক সময়ে মুম্বই শহরে অভিনেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হতে লড়াই করেছেন কার্তিক। পরিবারের অমতে অডিশনের জন্য যেতেন নানা জায়গায়। পরীক্ষা দেওয়ার নাম করে চলে আসতেন মায়ানগরীতে। কিন্তু থাকার জায়গা ছিল না। স্টুডিয়োর বাইরে থেকেই ফিরে আসতে হয়েছে বহু বার। কিন্তু কার্তিক আশা ছাড়েননি। এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “সপ্তাহে ৩-৪ বার আসতে হত। যাতায়াতে ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় যেত। তার পর একটা বিজ্ঞাপনে কয়েক সেকেন্ডের চরিত্র পাই। আরও কাজ করতে থাকি ওঁদের সঙ্গেই। এর পর বারো জন ছেলের সঙ্গে অন্ধেরিতে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলাম। আর্থিক সামর্থ্য বেশি ছিল না। এই সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সতীশ। উৎসাহ দিয়েছিলেন এত যে লড়াইটা আর কষ্টকর মনেই হয়নি।”
আড়াই বছর পর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হওয়ার জায়গায় পৌঁছে যান কার্তিকও। তাঁর কথায়, “পর পর সুযোগ আসতে থাকে ‘প্যায়ার কা পঞ্চনামা’র পর থেকে। আমার তিন নম্বর ছবি পর্যন্ত ওই বারো জনের সঙ্গে ভাড়া ফ্ল্যাটেই ছিলাম। সেই ফ্ল্যাট সতীশজির।”
বৃহস্পতিবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যূ হয় ৬৭ বছর বয়সি অভিনেতা সতীশ কৌশিকের। ভারসোভা শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।