Kamaleswar Mukherjee

The Kashmir Files: ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এর পর বিবেক উন্নাও, হাথরস-কাণ্ড নিয়ে ছবি বানাবেন? প্রশ্ন কমলেশ্বরের

কমলেশ্বর বুঝতে পারছেন না, ‘‘যাঁরা হিন্দু কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উচ্ছেদ নিয়ে এত কথা বলছেন তাঁরা এনআরসিসিএ বিল আনছেন কী করে? ’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২২ ১১:৫৯
Share:

‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-কে নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কমলেশ্বর।

‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ নিয়ে উত্তেজনার পারদ চড়ছেই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অসম সরকার থেকে শুরু করে একাধিক রাজ্য সরকার পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। অনুপম খেরের দাবি ১৯৯০ সালে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ভিটেমাটি ছাড়ার মতো ঘটনার অবশেষে সঠিক প্রতিবাদ হয়েছে। বহু জন আবার এর মধ্যে সূক্ষ্ম রাজনীতি বা ধর্মীয় ভেদনীতির ছায়াও দেখতে পাচ্ছেন। বিতর্কের আঁচ যত ছড়াচ্ছে ততই ছবিটি দ্রুত এগোচ্ছে ১০০ কোটির ঘরে।

Advertisement

ছবিটিকে নিয়ে এত হইচই কেন? এত উন্মাদনা কতটা তৈরি করা? আদৌ কি ছবিটি এত চর্চার যোগ্য? জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। পরিচালক অভিনন্দন জানিয়েছেন বিবেক অগ্নিহোত্রীকে। পাশাপাশি এও বলেছেন, ‘‘চাইব, বিবেক এই ধরনের আরও ছবি বানান। আগামী বিষয় হোক উন্নাও বা হাথরস কাণ্ড।’’

‘মেঘে ঢাকা তারা’, ‘চাঁদের পাহাড়’-এর পরিচালক কমলেশ্বরের মতে, কাশ্মীরে ১৯৯০ সালে হিন্দু পণ্ডিতদের উচ্ছেদ করতে হয়েছিল। এই নির্দেশ জেকেএলএফ-এর সঙ্গে লড়াইয়ের ফলাফল। যাঁর নির্দেশে এই কর্মকাণ্ড ঘটেছিল সেই তৎকালীন রাজ্যপাল আরএসএস ছিলেন। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহকে সমর্থন করত বিজেপি। পরিচালকের কৌতূহল, সেই সময় বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংহ সরকার বিষয়টি নিয়ে আদৌ কি কোনও পদক্ষেপ করেছিলেন? তাঁর এও দাবি, যে কোনও মানুষ যখন ভিটেমাটি ছাড়া হয় তার থেকে যন্ত্রণার, লজ্জার, অপমানের আর কিচ্ছু নেই। এর প্রতিবাদও কাম্য। একই সঙ্গে পরিচালক এও প্রশ্ন রেখেছেন, সেই অতীত টেনে এনে, ইতিহাস বিকৃত করে (ভুক্তভোগীদের দাবি), দেশজুড়ে চলতে থাকা সামাজিক বিদ্বেষের আবহে এই ছবি তৈরির পিছনে আদতে রাজনৈতিক কারণ লুকিয়ে নেই তো?

Advertisement

কমলেশ্বরের বক্তব্য, তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে উন্মাদনা। প্রধানমন্ত্রীর সমর্থন। প্রশাসনকে এই ছবি দেখতে যাওয়ার নিদান দেওয়া। কর ছাড় দেওয়া। এবং ছবি দেখতে যাওয়ার কারণে ছুটি ঘোষণা! এর মধ্যে শুধুই সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নেই। তলিয়ে ভাবলে চোখে পড়বে সূক্ষ্ম অর্থনৈতিক দিকও। এই ছবিটির ক্ষেত্রে কর ছাড় দেওয়া যার অন্যতম কারণ। অন্যান্য দ্রব্যের মতোই ছবিও বিক্রি করতে হয় তো! তাতে এই উন্মাদনা কাজে লাগে।

এর পরেই তিনি উদাহরণ টেনেছেন জার্মানি পরিচালক লেনি রিফেনস্টালের। ‘অনুসন্ধান’ ছবির পরিচালকের মতে, ‘‘এই পরিচালক নাৎসি বাহিনীর প্রচারধর্মী ছবি বানাতেন। ইতিহাস কিন্তু এই ধরনের পরিচালকদের মনে রাখে না। বিবেক, তাঁর এই ছবি আগামীতে সেই দলে পড়ে যাবেন না তো? কারণ, তিনিও যেন রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক মহলকে খুশি করতেই ছবিটি বানিয়েছেন।’’ একই সঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, শুধুই নেতা-মন্ত্রীরা নন, বলিউডের প্রথম সারির তারকারাও প্রচারের দলে সামিল। কারণ, তাঁদেরও টিকে থাকতে হবে। পরিচালক প্রশংসা করেছেন, অনুপম খের, মিঠুন চক্রবর্তীর অভিনয়ের। তাঁর মতে, এই দুই অভিনেতার অভিনয় আলাদা করে উল্লেখের দাবি রাখে।

আরও একটি বিষয় কমলেশ্বর কিছুতেই বুঝতে পারেননি, ‘‘যাঁরা হিন্দু কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উচ্ছেদ নিয়ে এত কথা বলছেন তাঁরা এনআরসিসিএ বিল আনছেন কী করে? বা এই বিল যাঁরা আনেন তাঁরা এই বিষয়টি নিয়ে এত কথা বলছেন কেন!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement