Tollywood

Tollywood: বাংলা ছবির ঘরে লক্ষ্মী, ‘কাকাবাবু’ আর ‘বাবা বেবি ও’ রমরমিয়ে চলছে কলকাতা সহ শহরাঞ্চলে

টক্কর না এক সারিতে? মুক্তির ৩ দিন পরে ‘কাকাবাবু’, ‘বাবা বেবি ও’-র ব্যবসা কেমন?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৬:২৮
Share:

দর্শক টানার টক্করে এগিয়ে গেল কে?

৪ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পেয়েছে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’, অরিত্র মুখোপাধ্যায়ের ‘বাবা বেবি ও’। সোমবার প্রথম ছবির প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফ-এর অন্যতম কর্ণধার মহেন্দ্র সোনির একটি টুইট চর্চায়। টুইটে প্রযোজকের দাবি, ‘১ কোটি ছাড়িয়ে গেল ৩ দিনে’। তার পরেই তাঁর হাল্কা রসিকতা, ‘ক্যয়সা লগা?’ মাত্র ৩ দিনে বাংলা ছবি কোটির ক্লাবে! স্বাভাবিক ভাবেই কৌতূহল ছড়িয়ে পড়েছে সে দিনেই মুক্তি পাওয়া অন্য ছবির ফলাফল নিয়ে। তা হলে কি একটি ছবি অন্যকে ছাপিয়ে গেল? নাকি, তিন দিনে দুটো ছবিই এক সারিতে?

৪ ফেব্রুয়ারি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে মাঠে নামার কথা ছিল সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ছবি ‘সাবাস মিঠু’-র। এ ছাড়াও, উইনডোজ প্রযোজনা সংস্থার ছবি ছিল ‘বাবা বেবি ও’। ছবির ব্যবসার স্বার্থেই সৃজিতের বাকি দুটো ছবির মুক্তি পিছিয়ে গিয়েছে। ময়দানে শুধুই এসভিএফ এবং উইনডোজ। প্রথম ছবির মূলধন, কাকাবাবুর সঙ্গে সন্তুর অভিযান। বিদেশের চোখ ধাঁধাঁনো ভৌগোলিক অঞ্চল, সৃজিত-বুম্বাদা জুটি, প্রযোজনা সংস্থার প্রচার। দ্বিতীয় ছবিতে নন্দিতা রায়-শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ঘরানা। যেখানে বিষয় আধুনিক। কিন্তু অন্দরমহলের আস্বাদে ভরপুর। এই প্রথম বাংলা ছবিতে সারোগেসি, ‘একা বাবা’র কথা জায়গা করে নিল ‘বাবা বেবি ও’-র হাত ধরে। সঙ্গে প্রেমিক যিশু সেনগুপ্ত এবং দুই বাচ্চার উপস্থিতি আর গান।

Advertisement

'বাবা, বেবি ও...' ছবির একটি দৃশ্য

ভিন্ন স্বাদের দুই ছবির ফলাফল জানতে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করেছিল প্রিয়া প্রেক্ষাগৃহের কর্ণধার অরিজিৎ দত্ত, নবীনা সিনেমা হলের মালিক নবীন চোখানি এবং প্রাচী-র কর্ণধার বিদিশা বসুর সঙ্গে। কী বলছেন তাঁরা? তিন হল মালিকেরই বক্তব্য, সরস্বতী পুজোর আগের দিন মুক্তি পেয়েছে দুটো ছবি। অকাল বর্ষণ এবং পুজোর কেনাকাটার কারণে স্বাভাবিক ভাবেই প্রথম দিন খুব ভাল ব্যবসা হয়নি। সেই খামতি মিটিয়ে দিয়েছে সরস্বতী পুজো এবং তার পরের দিন। শনি এবং রবিবার পর পর দুটো দিন ছুটি। সব বয়সের মানুষ ঘর ছেড়ে পা রেখেছেন প্রেক্ষাগৃহে। ফলে, শনিবার ‘হাউজফুল বোর্ড’ ঝুলেছে। রবিবারও ব্যবসার হাল খুবই ভাল। পাশাপাশি, তিন দিনে ব্যবসার নিরিখে এগিয়ে ‘কাকাবাবু’। ছবির বিষয়ের দিক থেকে সসম্মানে প্রথম ছবির থেকে ভাল ফল ‘বাবা বেবি ও’-র।

অতিমারির কারণে বহু দিন নতুন ছবি-মুক্তি আটকে ছিল। বাণিজ্যেও তাই ছিল ভাটার টান। সেই সময় হাল ধরেছিল ‘স্পাইডারম্যান’ এবং ‘পুষ্পা’। ভিন্ন ভাষার এই দু’টি ছবি দেখতেই হামলে পড়েছিলেন সিনেপ্রেমীরা। দীর্ঘ দিন পরে খুশির হাসি হেসেছিলেন হল মালিকেরা। পরে এই দুই ছবিকে টপকে যায় অতনু রায়চৌধুরী এবং দেব অধিকারীর ‘টনিক’। এসভিএফ এবং উইনডোজ কি পারল এই তিনটি ছবিকে টপকাতে? বিদিশার দাবি, ‘‘সেটা এই ৩ দিনে সম্ভব হয়নি। ‘স্পাইডারম্যান’ এবং ‘পুষ্পা’র চাহিদা দর্শকমহলে শুরু থেকেই তুঙ্গে ছিল। পরে ২৫ ডিসেম্বর মুক্তি পায় ‘টনিক’। শীত মরসুমের উৎসবের আমেজ পুরোপুরি নিজের দখলে নিয়ে নেয় ছবিটি। ফলে, একটা সময়ের পরে টপকে যায় বাকি দুটো ছবিকেও।’’

'কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন' ছবির একটি দৃশ্য

আনন্দবাজার অনলাইন কথা বলেছিল বাণিজ্য বিশ্লেষক পঙ্কজ লাডিয়ার সঙ্গেও। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, শুধুই কলকাতা নয় বর্ধমান, লিলুয়া সহ সর্বত্রই রমরমিয়ে চলছে দুটো ছবি। শুক্রবার প্রথম দিন ব্যবসায় সামান্য ঘাটতি ছিল। সেটা পুষিয়ে দিয়েছে বাকি দুই দিন। পঙ্কজেরও দাবি, ‘‘মাল্টিপ্লেক্স, সিঙ্গল প্লেক্স মিলিয়ে ব্যবসার নিরিখে এবং সৃজিত-প্রসেনজিতের আকর্ষণে এগিয়ে ‘কাকাবাবু’। তাই মহেন্দ্র সোনির বক্তব্য সঠিক।’’ সেই সঙ্গে তাঁর আরও বক্তব্য, প্রকৃত মান বোঝা যাবে নতুন সপ্তাহ থেকে। এমনিতেই সোমবার যে কোনও ছবির ভাগ্যনিয়ন্তা। প্রথম দিনের ম্যাটিনি বা বিকেলের শো দেখিয়ে দেয় সপ্তাহান্ত কেমন যাবে সেই ছবি। পাশাপাশি পঙ্কজের এও যুক্তি, যেহেতু এই দু’টি ছবি ছাড়া বড় মুক্তি নেই তাই প্রযোজক, পরিচালক, হল মালিক সবার আশা, আগামী দিনেও ভাল ফল করবে ‘কাকাবাবু’ এবং ‘বাবা বেবি ও’।

মহেন্দ্র সোনির পাশাপাশি প্রযোজিত ছবি নিয়ে মুখ খুলেছেন শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ও। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘ধন্যবাদ দর্শক। ধন্যবাদ আপনাদের সকলকে। অতিমারির আগে উইনডোজের ছবি-মুক্তি ছিল ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’। মাত্র ১২ দিন বক্স অফিসে চলেছিল। অরিত্র মুখোপাধ্যায়, জিনিয়া সেনের দল সেই ছবির সঙ্গে যুক্ত ছিল। ৭২ লাখ টাকার ছবি এক সপ্তাহতেই ৯৫ লক্ষ টাকার ব্যবসা করেছিল। অতিমারি কাটিয়ে আমাদের নতুন ছবি ‘বাবা, বেবি ও’ মুক্তি পেয়েছে ৪ ফেব্রুয়ারি। ৮৮ লক্ষ টাকার ছবি মাত্র তিন দিনেই ৫৫ লক্ষ টাকার ব্যবসা করেছে।’ প্রযোজক হিসেবে তাঁর দাবি, অরিত্র এবং তাঁর দল দর্শককে হলমুখী করেছেন। একই ভাবে এই দুর্দিনেও প্রযোজকের ঘরে টাকা ফেরত আনতে পেরেছেন তাঁরা। বুক মাই শো-এর রেটিং ৮৫% এবং আইএমডিবি রেটিং ৮.২। যদিও ছবির বাজেট এবং রেটিং নিয়ে কোনও কথা বলেনি এসভিএফ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement