'কাজল মাসি' শর্টফিল্মের পোস্টার।
ওঁদের লকডাউন হয় না। রান্না করে, ঘর মুছে, ক্লান্ত শরীরে বাবুদের ছেলেমেয়েদের মুখে তুলে দিতে হয় ভাত। এগিয়ে দিতে হয় জলের গ্লাস। বাড়ি অনুযায়ী নাম বদলায় তাঁদের। কখনও তিনি গোপালের মা, কখনও আনোয়ারার বোন, আবার কখনও বা ‘কাজল মাসি’। চারপাশে ছড়িয়ে থাকা এই সব মানুষের কান্নাভেজা গল্প নিয়েই প্রকাশ্যে এল ‘উইন্ডোজ’-এর ১২ মিনিটের লকডাউন শর্ট ‘কাজল মাসি’।
কাজল মাসির ছেলে মুম্বইয়ে কাজ করেন। মা বারণ করেছিলেন অত দূরে কাজ করতে যেতে। কিন্তু মায়ানগরীর নেশার মোহ তিনি কাটাতে পারেননি। দেশ জুড়ে করোনা সঙ্কট যখন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে এমন সময়েই কাজলের মোবাইলের একটি ফোন আসে। ছেলের ফোন। নিমেষে কাজলের মুখের চেহারা যায় পাল্টে। ধারাভিতে থাকা কাজলমাসির সন্তানের কাছে পয়সা আজ বাড়ন্ত। জুটছে না খাবারও। ফোন কেটে যায়।
দিশেহারা মা বুঝতে পারেন না কী করা উচিত তাঁর। নিঃশব্দেই চোখ দিয়ে গড়াতে থাকে জলের ধারা। ‘ছেলেটা আদৌ বাঁচবে তো?’ উত্তর জানা নেই। উৎকণ্ঠায় টিভির পর্দায় চোখ যেতেই মাথা ঝিমঝিম করতে থাকে তাঁর। বড় বড় করে ব্রেকিং যাচ্ছে, বান্দ্রা স্টেশনে পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জ। “কী হবে যদি পুলিশ ছেলেটাকে মারে, খাবার খায়নি না জানি কত দিন!” মায়ের গলা দিয়ে ভাত নামতে চায় না, গলার কাছে কষ্ট গিলতে গিলতে সে কাপড় কাচে, ‘ছোড়দা’র জন্য মাছ ভাজে, কফি করে দেয়।
শেষ পর্যন্ত কী হয়, তা বলে দিলে সাসপেন্স মাঠে মারা যাবে। তবে অসহায় কাজলের কান্নায় আপনিও যে নরম হবেন সে কথা হলফ করে বলা যায়। শেষে আবার শিবপ্রসাদের কণ্ঠে চমকও রয়েছে।
নামভূমিকায় খেয়ালী দস্তিদার। এ ছাড়াও রয়েছেন আদিত্য সেনগুপ্ত, গৌরী মুখোপাধ্যায় এবং দেবনাথ চট্টোপাধ্যায়। চিত্রনাট্য নন্দিতা রায়। সম্পাদনায় মলয় লাহা এবং মিউজিকের দায়িত্ব বর্তেছে প্রবুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর।