বছর ছাব্বিশের জয়েশ ভট্টাচার্য চেষ্টা করছেন বলিউডে প্লে ব্যাকের দুনিয়ায় নিজের জায়গা তৈরি করার। তাঁকে ‘জয়েশ’ নামে কেউ চেনে না। ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি পরিচিত জান কুমার শানু নামে। নামের পাশে রেখেছেন বাবার সুপরিচিত নামটি।
কেদারনাথ ভট্টাচার্য নব্বইয়ের দশকে বলিউডে বিখ্যাত হন কুমার শানু নামে। গায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে এখনও অনেক দূর পথ চলা বাকি জয়েশের। সম্প্রতি তিনি শিরোনামে এসেছেন অন্য কারণে।
বিগ বস-এর চতুর্দশ মরসুমে তিনি-ই প্রথম ঘোষিত প্রতিযোগী। সম্প্রতি এক ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে জয়েশের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রথম প্রতিযোগীকে প্রকাশ্যে আনার অনুষ্ঠানে সঞ্চালক ছিলেন সলমন খান। তিনি বলেন। এই প্রথম এত দিন কাজের বাইরে থাকতে হল তাঁকে। আগামী ৩ অক্টোবর থেকে শুরু হবে বিগ বস-১৪।
জয়েশের ডাকনাম জান। এই নামেই তিনি বলিউডে পরিচিত। গানের জগতে পা রাখার পর থেকে ইচ্ছে করেই জয়েশ নামের পাশে রেখেছেন বাবার নামও।
জানের গান শেখার শুরু বাড়িতেই। তাঁর দিদিমা নীরা দত্তর কাছে। পরে তিনি পণ্ডিত যশরাজের আত্মীয় পণ্ডিত রতনমোহন শর্মার কাছে প্রশিক্ষণ নেন।
এ বছরই জুলাই মাসে ইউ টিউবে মুক্তি পেয়েছে জানের প্রথম সিঙ্গল, ‘তু সন্দলী’। এর আগে তিনি একটি মিউজিক ভিডিয়ো প্রকাশ করেছিলেন। তারও আগে ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ গানটির রিমেক করেছিলেন।
তবে ছোটবেলা থেকেই ছবির জন্য গান গাওয়া শুরু জানের। ছ’ বছর বয়সে প্রথম রেকর্ডিং, ‘এসকেপ ফ্রম তালিবান’ ছবির জন্য। এই ছবিতে সোনু নিগমের সঙ্গে গান গেয়েছিলেন জান। গায়ক হওয়ার পিছনে বাবার সঙ্গে সোনু-ও তাঁর অনুপ্রেরণা, জানিয়েছেন জান।
আট বছর বয়সে প্রথম অ্যালবাম ‘তোমরা শুনবে তো’ প্রকাশ করে জান জায়গা করে নিয়েছেন লিমকা বুক অব রেকর্ড-এ। গানের পাশাপাশি প্রায় ১৫ রকমের বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারেন তিনি।
অ্যানিমেশনে ভয়েস ওভার আর্টিস্ট হিসেবেও কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে জানের। সেই সূত্রেই আলাপ শঙ্কর মহাদেবনের সঙ্গে। তিনি জানকে বেছে নিয়েছিলেন শিশুশিল্পী হিসেবে ‘তারে জমিন পর’ ছবিতে গান করার জন্য।
‘বম বম বোলে’ গানে সমবেত শিশুশিল্পীদের কণ্ঠে একজন ছিলেন জান। এখনও স্পষ্ট করে মনে পড়ে রেকর্ডিংয়ের স্মৃতি। সেখানে হাজির ছিলেন আমির খান। তাঁর গলায় রেকর্ড করা হয়েছিল গানের প্রথম অংশ ‘চাকা রাকা চি চাই’। জানের আক্ষেপ, সে দিন আমিরের সঙ্গে একটাও ছবি তোলা হয়নি।
তাঁর গায়ক হওয়ার পিছনে মা রীতার অবদানও ভুলতে পারেন না জান। জানিয়েছেন, তাঁর মা-ও সুগায়িকা। মায়ের সঙ্গে অন্ধেরীতে থাকেন জান এবং তাঁর দুই দাদা। কুমার শানু থাকেন গোরেগাঁওয়ে।
জানের বড় দাদা জেস একজন শিক্ষক। মেজো দাদা জিকো গ্রাফিক ডিজাইনার। তাঁরও সঙ্গীতচর্চার শখ আছে।
কুমার শানু চান, তাঁর ছেলে যেন নিজের চেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হন। তিনি মনে করেন, পরিশ্রম করে কোনও জিনিস পেলে তবেই মানুষ তাঁর মর্ম বুঝতে পারে। বাবার এই দর্শনে বিশ্বাসী জান নিজেও।
নিজেকে বলিউডে প্রমাণ করতে কুমার শানুও যথেষ্ট পরিশ্রম করেছেন অতীতে। তাঁর সংগ্রামের দিনগুলির অভিজ্ঞতাকে নিজের চলার পথে হাতিয়ার করেছেন জান-ও।