মিকা।
ফোনের এ পারে প্রশ্নকর্তা বাঙালি শুনেই জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘কেমন আছ?’’ পঞ্জাবে শিকড় হলেও, মনে-প্রাণে তিনি বাঙালি। তাঁর জন্মও এই বাংলায়, দুর্গাপুরে। সম্প্রতি পঞ্জাবের কৃষকদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন মিকা। কিন্তু সিংঘু সীমানায় কি একবারও গিয়েছেন? উত্তরে বললেন, ‘‘না, আমি গেলেই ওখানে ভিড় হবে। আমার ফাউন্ডেশনের সঙ্গীরা দিনে তিন বার লঙ্গর চালাচ্ছেন। শুধু কৃষকেরাই নন, আশপাশের গ্রামবাসী বা দুঃস্থ মানুষরাও সেখানে আসেন। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫০টি গ্রামের মানুষকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে পেরেছি। কৃষকদের জন্য তো আছিই। যাঁদের দরকার, তাঁদের পাশেও থাকব।’’
এখন তিনি ব্যস্ত ইন্ডিয়ান প্রো-মিউজ়িক লিগে। পঞ্জাব টিমের ক্যাপটেন তিনি। প্রতিযোগীদের মধ্যে ভাল পারফর্মারের খোঁজে রয়েছেন। মিকার কথায়, ‘‘তিন ঘণ্টার কনসার্ট বা শো করতে গিয়ে দেখি, দর্শক পারফরম্যান্স চান। এত রাজ্যে পারফর্ম করলাম তো, সব জায়গায় দর্শককে নাচাতে হয়। একমাত্র বাঙালিরাই গান শোনেন। পারফরম্যান্স না করলেও, ধীর লয়ে গান হোক বা দ্রুত লয়ের, ঘণ্টার পর ঘণ্টা চুপ করে বসে তাঁরা গান উপভোগ করেন।’’
তাঁর কাছে সব বাঙালিই মিষ্টি। তার কারণও দর্শালেন, ‘‘মিষ্টি খাওয়ার জন্যই বাঙালিরা মিষ্টি। কলকাতার মিষ্টির জন্য আমিও ফুলে গিয়েছি। আমি রাঘবদাকে (চট্টোপাধ্যায়) বলি, মিষ্টি খেয়ে খেয়ে তোমার মতো হয়ে গিয়েছি। এ বার ফ্যাট ঝরিয়ে ফিট হতে হবে। কলকাতায় বন্ধুবান্ধব ক্রমশ বাড়ছে। হৈমন্তীজি (শুক্ল) তো আমায় ছেলের মতো ভালবাসেন।’’
অক্টোবরের শেষে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। উপসর্গ তেমন ছিল না বলে দু’সপ্তাহ কোয়রান্টিনে থেকে কাজে যোগ দেন। তবে এ বছরটা তাঁর কাজের জন্য শুভ বলে মনে করেন। ‘‘লকডাউনে অনেক গান বানিয়েছি। আমার ‘সাওয়ন মে লাগ গয়ি আগ’ গান তো দু’বার ব্যবহার করা হয়েছে। প্রথমে ইয়ামি গৌতম, দ্বিতীয় বার কিয়ারা আডবাণী এই গানে পারফর্ম করেছেন। লকডাউনের পরে কাজের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিও পাল্টে গিয়েছে। আনলক পর্বে প্রথম যে পারফরম্যান্সের প্রস্তাব পাই, তা ছিল সকাল দশটায়। অত সকালে পারফর্ম করার অভ্যেস না থাকলেও এ বছর করেছি।’’ মিকার মতে, এখন কোনও কাজ ফেরানো উচিত নয়, নবাগতদেরও সেই পরামর্শ দিতে চান।
কাজের জগতে পেশাদার হলেও, মনের কথাই তাঁর কাছে শেষ কথা। সম্প্রতি কঙ্গনা রানাউতের সঙ্গে ভার্চুয়াল তর্কে জড়িয়ে পড়েন। সে প্রসঙ্গে বললেন, ‘‘কঙ্গনা নিঃসন্দেহে ভাল অভিনেত্রী। প্রয়োজনে তাঁর পক্ষ নিয়েও কথা বলেছি। যখন মুম্বইয়ে তাঁর অফিস ভাঙা হল, তখনও টুইট করেছিলাম। কিন্তু উনি মনপ্রীত কউর ও শাহিনবাগের দাদিকে নিয়ে যখন কটু কথা বললেন, সেটা সহ্য হয়নি। যেটা ভুল, সেটা ভুল। ভুল করলে আমি বলব।’’