‘টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিতে এখন নামী ক্যাম্পের মোনোপলি কমেছে’

টলিউডে পরপর কাজ করছেন। আনন্দ প্লাসের সঙ্গে কথা বললেন অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়বাংলা ছবি করব না, এমনটা কখনও ভাবিনি কিন্তু। দিল্লির কোম্পানি সেট-আপ করতে প্রচুর এফর্ট দিতে হয়েছিল। সেই সময়ে এখানে ফিজ়িক্যালি থাকতে না পারায় একটা গ্যাপ তো হয়েছেই। অনেকে বলতেন, কোনও ছবিতে আমার কথা  ভাবলেও আমি এখানে না থাকায় সেটা সম্ভব হয়নি।

Advertisement

সায়নী ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৯ ২৩:৪১
Share:

ছবি: আশিস সাহা, মেকআপ: অনিরুদ্ধ চাকলাদার, পোশাক: দেব আর নীল, গয়না: আভামা, স্টাইলিং: সুমিত সিন্‌হা, লোকেশন অ্যান্ড হসপিটালিটি: ভিভান্তা

প্র: দিল্লি থেকে ফিরে পরপর ছবি করছেন। সেটা কি টলিউডে দীর্ঘ সময়ের অনুপস্থিতি পুষিয়ে দিতে?

Advertisement

উ: বাংলা ছবি করব না, এমনটা কখনও ভাবিনি কিন্তু। দিল্লির কোম্পানি সেট-আপ করতে প্রচুর এফর্ট দিতে হয়েছিল। সেই সময়ে এখানে ফিজ়িক্যালি থাকতে না পারায় একটা গ্যাপ তো হয়েছেই। অনেকে বলতেন, কোনও ছবিতে আমার কথা ভাবলেও আমি এখানে না থাকায় সেটা সম্ভব হয়নি। তবে টলিউডে কাজ করা হচ্ছে না, এই ভেবে কিন্তু কলকাতায় ফিরিনি। দিল্লিতে থাকাকালীন আমার হিন্দি ছবিটা হয়েছিল। আর এখানে ফিরেছিলাম রাজর্ষি দের ‘শুভ নববর্ষ’ করতে।

প্র: কোম্পানি তো এখনও সে ভাবে দাঁড়ায়নি। তা-ও চলে এলেন কেন?

Advertisement

উ: আসলে আমি কিছুতেই অ্যাডজাস্ট করতে পারছিলাম না দিল্লিতে। শহরটার মানুষজন, সোসাইটি কিছুই আমার পছন্দ হয়নি। আমার বিজনেস পার্টনার বরুণকে সেটা বলায় ও বুঝল। আর এখন খানিকটা হলেও কোম্পানি নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। তাই বরুণের উপরে ছেড়ে চলে আসতে পেরেছি। তদারকি করতে মাঝেমধ্যে যাই।

প্র: পরপর ছবি করলেও টলিউডের নামজাদা ক্যাম্পগুলোর ছবিতে কিন্তু আপনি নেই...

উ: টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিতে চিরকালই কোনও না কোনও নামী ক্যাম্প রাজত্ব করেছে। ইদানীং তা-ও মোনোপলিটা খানিক কমেছে, কাজগুলো ভাগ হয়ে যাচ্ছে। এটা ঠিক, এই মুহূর্তে কোনও এ-গ্রেড ক্যাম্পের অফার নেই আমার হাতে। তবে এমনও হতে পারে, অফার এল অথচ আমার পছন্দ হল না। আমি কখনওই ব্র্যান্ড নেম দেখে ছবি বাছি না। স্টোরি, স্ক্রিপ্ট, ক্যারেক্টার, ডিরেক্টর... এই চারটে বিষয়ই বরাবর আমার কাছে প্রাধান্য পেয়েছে। যে কারণে আমি ‘সাঁঝবাতি’ থেকে বেরিয়ে এলাম।

প্র: সোহিনী সেনগুপ্ত এখন সেই চরিত্রে...

উ: স্টোরিলাইন শুনে ‘হ্যাঁ’ বলেছিলাম প্রথমে। পরে স্ক্রিপ্ট পেয়ে বুঝলাম, কোনও জাস্টিফিকেশন নেই ওই চরিত্রটার। আমি তো শুধু উপার্জনের জন্য ছবি করি না...

প্র: রাজর্ষি দে, অর্জুন দত্ত, শিলাদিত্য মৌলিক...পরপর নতুন পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করছেন কি সচেতন ভাবেই?

উ: নতুন পরিচালকদের ভিশনটা বুঝতে চেষ্টা করি। মুম্বইয়ের একটি ছেলে কিছু দিন আগে একটা স্ক্রিপ্ট শুনিয়েছে, যেটা ভীষণ পছন্দ হয়েছে। শিবুও (শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়) বলেছে, আমার সঙ্গে কাজ করতে চায়। সময় করে একসঙ্গে বসাটা আর হচ্ছে না। ‘প্রাক্তন’-এর সময়ে ওকে ‘না’ বলেছিলাম। অপরাজিতা আঢ্যের চরিত্রটা করার কথা ছিল আমার। তবে সত্যি কথা বলতে, ক্রাউডপুলার পরিচালকদের চেয়েও গৌতম ঘোষ কিংবা অতনু ঘোষের মতো পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করা আমার উইশলিস্টে প্রথমে।

প্র: ওয়েব প্ল্যাটফর্মে আপনাকে মিতিন মাসির চরিত্রে দেখা যাবে। কোয়েল মল্লিকের ‘মিতিন মাসি’ কেমন লাগল?

উ: কোয়েলের লুকটা অসাধারণ। সেটা আমি অনেকদিন আগেই ওকে বলেছিলাম। ওয়েবের অন্যান্য অফার সব ফিরিয়ে দিচ্ছি এখন, কারণ ওয়েবের ডেবিউটা মিতিন মাসি দিয়েই করতে চাই। পরমব্রত (চট্টোপাধ্যায়) তো একটা গাজর ঝুলিয়ে রেখে বলেছে, ডিসেম্বরে হবে। দেখি কী হয়...

প্র: ‘হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী’তে রানির চরিত্রটা করে কেমন লাগল? খুব তাড়াহুড়ো করে নাকি কাজ করতে হয়েছে?

উ: তা তো হবেই। অত ভারী গয়না আর মেকআপ নিয়ে কাজ করাটাই কঠিন ছিল। আমার সারা গা ছড়ে গিয়েছে গয়নাগুলো পরতে আর খুলতে গিয়ে। এ তো আর ‘পদ্মাবত’ নয় যে, নামী ব্র্যান্ডের গয়না থাকবে! পর্দায় কিন্তু দেখে বোঝা যাবে না সেটা। এত লার্জ স্কেলে বাংলা ছবি ভাবাটাই একটা দুঃসাহসিক কাজ। হ্যাটস অফ টু দেব! শুধু আমাকে কাস্ট করেছে বলে নয়, যে ধরনের ছবি ও করে চলেছে, সেটাকে ভীষণ ভাবে সমর্থন করি আমি।

প্র: এর পর কী ছবি করছেন?

উ: এখন শিলাদিত্যের ‘হৃৎপিণ্ড’ করছি। অরুণাচলে শুট। রাজর্ষির ‘পূর্ব পশ্চিম দক্ষিণ উত্তর আসবেই’-এর মুক্তি আসন্ন। ওর পরের ছবিটার জন্যও কথা হচ্ছে। অনীক দত্তের ‘বরুণবাবুর বন্ধু’ করেছি। ‘অব্যক্ত’র পর অর্জুনের ‘গুলদস্তা’ করলাম।

প্র: গত বছর থেকে আবার স্টেজ শো করা শুরু করেছেন...

উ: ইন ফ্যাক্ট দশ বছর পরে শুরু করলাম। এ বছরও করব। একটা সময় টানা শো করেছি। প্রথম চার বছর বুম্বাদার সঙ্গেই।

প্র: কাজে ফেরা নিয়ে কী বলছেন উনি?

উ: আমার কাজ নিয়ে কোনও দিনই মতামত ছিল না ওঁর, আজও নেই। পরস্পরের সিদ্ধান্তের উপরে ভরসা আছে। কাজের ব্যাপারে এতটা স্বাধীনতা সাধারণত মহিলারা পান না।

প্র: ছেলেকে এত তাড়াতাড়ি বিদেশে পড়তে পাঠালেন কেন?

উ: ওর বাইরে পড়তে যাওয়া নিয়ে অনেক আশা ছিল, কিন্তু এত দ্রুত হবে ভাবিনি। ওর নতুন স্কুল স্পোর্টসে প্রেফারেন্স দেয়। মিশুকও সকার প্লেয়ার হতে চায়। অভিভাবক হিসেবে এটুকু অফার করতেই পারি। কী ভাবে কাজে লাগাবে, ওর ব্যাপার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement