Parambrata Chatterjee Marriage

দু’বছর আগেই প্রশাসনিক কমিটিতে পরম ও পিয়া, ডেউচা-পাঁচামি সামলাতে বিশেষ দায়িত্বে ছিলেন যুগল

‘চুপিচুপি প্রেম’ করলেও পরমব্রত ও পিয়াকে নিয়ে গুঞ্জন চাপা ছিল না। শোনা যায় ২০২১ সাল থেকেই তাঁদের ‘ঘনিষ্ঠতা’। সেই সময় থেকেই দু’জনে একই সঙ্গে জায়গা পান রাজ্য সরকারের একটি বিশেষ কমিটিতে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:০৪
Share:

(বাঁ দিকে) পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, পিয়া চক্রবর্তী (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।

চারহাত এক হল সোমবার সন্ধ্যায়। কিন্তু সলতে পাকানো হয়েছিল বছর দুয়েক আগে। যেখানে ‘অনুঘটক’-এর কাজ করেছিল ডেউচা-পাঁচামি। পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় এবং পিয়া চক্রবর্তীর ঘনিষ্ঠেরা তেমনই জানেন।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, পিয়া আগে গায়ক-সুরকার অনুপম রায়ের স্ত্রী ছিলেন। ঘরোয়া ভাবেই সোমবার বিকেলে বিয়ে করলেন পরম-পিয়া। তাঁদের প্রেম নিয়ে গুঞ্জন খুব একটা চাপা ছিল না। যদিও নিজেরা সবসময় দাবি করতেন, তাঁরা শুধুই ‘ভাল বন্ধু’। সেই বন্ধুত্বই এ বার পরিণয়ের পরিণতি পেল।

কমিটি গঠনের সেই চিঠি। —নিজস্ব চিত্র।

অনুপমের সঙ্গে পিয়ার বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয় ২০২১ সালে। শোনা যায়, তার আগে থেকেই পরম-প্রিয়া মানসিক ভাবে কাছাকাছি এসেছিলেন। ঘটনাচক্র বলছে, অনুপম-পিয়ার বিচ্ছেদের বছর থেকেই একটি সরকারি কমিটিতে সদস্য ছিলেন দু’জন। ২০২১ সালের ৯ অগস্ট রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ মন্ত্রকের অধীনস্থ ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড’ একটি কমিটি তৈরি করে। ন’জনের সেই কমিটির চেয়ারম্যান করা হয় অভিনেতা-পরিচালক-প্রযোজক পরমব্রতকে। সেই কমিটির বাকি আট সদস্যের মধ্যে ছিলেন পিয়া। আহ্বায়ক হিসাবে ছিলেন তন্ময় ঘোষ। সদস্য হিসাবে রয়েছেন অধুনা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলাম।

Advertisement

ডেউচা-পাঁচামিতে কয়লা উত্তোলনের উদ্যোগ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। সেই সময়ে প্রশাসনিক ভাবে তাঁদের সঙ্গে কথাবার্তা বলা শুরু করে রাজ্য সরকার। কিন্তু তাতে বিশেষ কাজ না হওয়ায় রাজ্য সরকার কমিটি তৈরি করে। ওই কমিটিতে কোনও ‘রাজনৈতিক’ ব্যক্তিত্বকে না রেখে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের খ্যাতনামী এবং সফল ব্যক্তিত্বদের রাখা হয়। প্রসঙ্গত, তৃণমূল সাংসদ সামিরুল তখন প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে ছিলেন না। সেই সময়েই রাজ্য প্রশাসন ঠিক করে, ডেউচা-পাঁচামিতে কয়লাখনি চালু হলে সেখানে বসবাসকারী মানুষের, বিশেষত আদিবাসীদের স্বার্থ ও অধিকার লঙ্ঘিত হবে না, বরং ওই এলাকার আর্থসামাজিক উন্নতি হবে, সেটা স্থানীয় মানুষকে বোঝাতে হবে। সেই কারণেই ওই কমিটি তৈরি করা। এলাকাবাসী ও সরকারের মধ্যে ‘সমন্বয়’ সাধনের লক্ষ্যও দেওয়া হয় ন’জন সদস্যের ওই কমিটিকে।

ডেউচা-পাঁচামি নিয়ে রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি প্রথম থেকে ‘স্থানীয়দের সমস্যা হবে’, এই দাবিতে সরব। ‘সেভ ডেমোক্রেসি’ নামে একটি সংগঠনও তৈরি হয় খনির বিরুদ্ধে প্রচারের জন্য। ওই সংগঠনের সদস্য হিসাবে সিপিএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান-সহ অনেকে ওই এলাকায় যান গত ২০২১ সালের ১৮ ডিসেম্বর। জমি না ছাড়ার জন্য বলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের। এর পরের দিনই ওই এলাকায় যান নবান্নের তৈরি কমিটির চেয়ারম্যান পরমব্রত। খনি এলাকার মধ্যে থাকা পাথারচাল, গাবারবাথান ও হরিণশিঙা গ্রামে যান তিনি। তবে সেই সফরে কমিটির সদস্য পিয়া ছিলেন না। সেই সময়ে স্থানীয় বাসিন্দারের সঙ্গে সরকারের তৈরি কমিটির অন্য সদস্যেরা পরমব্রতের নেতৃত্বে কথা বলেন। সেই সময়ে তাঁরা সে সংক্রান্ত রিপোর্ট রাজ্য সরকারকে দেবেন বলেও জানিয়েছিলেন। এর পরে অবশ্য কমিটির সদস্যরা আর ডেউচা-পাঁচামিতে গিয়েছিলেন কি না জানা যায়নি। তবে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই কমিটি এখনও রয়েছে। যাতে রয়েছেন পরম এবং পিয়া।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement