‘ক্যাপ্টেন হুর্রা’ নিয়ে ফিরছেন সৌরভ পালোধী।
জাহাজ না হোটেল, বোঝার উপায় নেই। হবে কোথাও। মনে হয়, ভাসছে সেই স্থলভাগ। একে একে পরিবার নিয়ে মানুষ আসে, সেই জাহাজ বা হোটেলে ওঠে। তার পর দেখা হয় ক্যাপ্টেনের সঙ্গে। ক্যাপ্টেন বলতেই যদি কোনও হোমরাচোমরা পুরুষের কথা মনে হয়, সেটা খুব ভুল হবে। এই ক্যাপ্টেন নারী! তার চুলে-গায়ে স্বপ্নের মতো রং। আলোর কুয়াশায় ঘেরা অনুসন্ধানী চোখ। আর বুকের ভিতর কেবল এক মানচিত্র।
যে মানচিত্রের খোঁজ এখনও মেলেনি, তবে আছে এ ব্যাপারে সে নিশ্চিত। যারাই আসে তাদের সে বলে, এটা হোটেল নয়, জাহাজ! ক্যাপ্টেনের স্বপ্নের মানচিত্রের কথা জেনে যায় বাকিরাও। ডাঙা খুঁজে পাবে এক দিন, সেই আশায় একই পথের যাত্রী হয়ে পড়ে হোটেল ভেবে এসে পড়া মানুষের ঢল। কার কাছে আছে সেই মানচিত্র? সকলের অনুসন্ধান এক হয়ে যায়। তার পর?
ব্যস্ততা কাটিয়ে ‘ক্যাপ্টেন হুর্রা’-রও জোরদার মহলা চলছে।
মূল নাটকে ক্যাপ্টেন পুরুষ ছিল। এখানে নারী। অভিনয়ে সৌরভের স্ত্রী, তূর্ণা দাস। মঞ্চে শুরুতেই তাঁকে দেখা যাবে না। শেষ জানতে হলে প্রেক্ষাগৃহে আসতে হবে।
অতিমারি কাটিয়ে দীর্ঘ আড়াই বছর পর ফিরছে ‘ক্যাপ্টেন হুর্রা’। জনপ্রিয়তার কথা ভেবেই যে ভাবে ‘ঘুম নেই’ নাটক বাঁচিয়ে তুলেছেন সৌরভ, সে ভাবেই বাঁচাবেন ‘ক্যাপ্টেন হুর্রা’-কেও।
সম্প্রতি সৌরভের নবনির্মিত ‘খোলাম কুচি’ সিরিজ নিয়ে দর্শকের উন্মাদনার শেষ নেই। ব্যস্ততা কাটিয়ে ‘ক্যাপ্টেন হুররা’-রও জোরদার মহলা চলছে। আনন্দবাজার অনলাইনকে সৌরভ বললেন,‘‘মোহিত চট্টোপাধ্যায়ের স্ক্রিপ্ট বলেই প্রায় ২৫-৩০ বার পড়তে হয়েছে ইন্টারপ্রিটেশন পাওয়ার জন্য। প্রত্যেকে দুটো করে সংস্করণ ভেবেছিলাম শুরুতে। তার পর বিস্তর ঝগড়াঝাটির পর একটা নাটকে আসতে পেরেছি। ‘ক্যাপ্টেন হুর্রা’ অন্য কেউ করলে অবশ্যই আলাদা ব্যাখ্যা হতে পারত।”
মূল নাটকে ক্যাপ্টেন পুরুষ ছিল। এখানে নারী। অভিনয়ে সৌরভের স্ত্রী, তূর্ণা দাস।
পরিচালক ঈষৎ রহস্য রেখে জানান, এটা এমন কোনও থ্রিলার নয় যে, একটা লাইন বলে দিলেই দর্শক বাকিটা জেনে যাবেন। অতএব, ভাবনার জায়গাটা উন্মুক্তই থাকছে। এটা একটা ধারণা, বিপ্লব। পরিচালকের কথায়, “এই মানচিত্র কোনও হার্ড কপি নয়। এটা আইডিয়া। রেভেলিউশন। ক্যাপ্টেন একটা ভাল দিনের স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু পুরোটাই চলছে একটা অন্য গল্পের মধ্যে দিয়ে।’’
অন্য দিকে ক্যাপ্টেন নিজে কী বলছেন? তূর্ণার সঙ্গেও কথা বলেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। তাঁর মতে, “রাষ্ট্রক্ষমতা বা বিরোধী স্বর, কোনও লিঙ্গচরিত্র হতে পারে না। স্যর ডাকো বা ম্যাডাম, আসলে সেটা একটা ভয়েস। স্বপ্ন দেখানো বা স্বপ্ন ভেঙে দেওয়ার শক্তি সেই মতাদর্শেই। ক্যাপ্টেন হুররার সব চরিত্রের মধ্যেই অনন্ত সম্ভাবনার বীজ থেকে যায়। সাদাকালোর চুলচেরা সীমানা ভেঙে তাই এটি একটি পরাবাস্তব প্রযোজনা।”
তবে নাটক মানেই ফিরে ফিরে আসা, নতুন করে। তূর্ণা এমনিতে ছিপছিপে। কিন্তু আড়াই বছর আগে ‘ক্যাপ্টেন হুর্রা’-র শেষ শোয়ের সময় সদ্য মা হয়েছিলেন তিনি। ২৩ কিলো ওজন বেশি ছিল। সেই চেহারা নিয়েই ক্যাপ্টেনের ভূমিকায় অভিনয়ের চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন। সেই প্রযোজনা তূর্ণার স্মৃতিতেও বিশেষ হয়ে রয়েছে। আর এই ২০২২ সালে আবারও ফিরবেন হুর্রা হয়ে। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর, দুপুর ২:৪৫, অ্যাকাডেমির মঞ্চে। আগের চেহারায়। আবার অন্য রকম ক্যাপ্টেন। এই বদলটাই ধ্রুব বলে মনে করছেন অভিনেত্রী। আর চ্যালেঞ্জটাও।