চোখ ভিজে যায় আয়েশার। জানান, দুঃসময়ে স্বামী যেমন তাঁর পাশে ছিলেন, তেমনই পরের ধাপটুকু সামলে দেন ছেলে। ফাইল চিত্র।
দিন সব সময় মসৃণ যায় না। প্রদীপের নীচেও থাকে অন্ধকার। অনেক লড়াইয়ের পর ভেসে উঠেছে শ্রফ পরিবার। তবু অতীত কি ভোলা যায়?
২০০২ সাল। ‘বুম’ মুক্তির পর সর্বস্বান্ত হয়ে গিয়েছিলেন জ্যাকি শ্রফ। প্রযোজক ছিলেন স্ত্রী আয়েশা শ্রফ। তাঁরও তখন মাথায় হাত। ঘটনাচক্রে সে বার ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির আগেই পাইরেসির শিকার হয়। আইনি জটিলতায় আসল মুক্তি আটকে যায় ‘বুম’-এর। এর পর বিস্তর ধারদেনা। কী ভাবে মেটাবেন বুঝতে না পেরে বসতবাড়ি বন্ধক দিয়ে দেন জ্যাকি। এর পর ছবিটি ব্যর্থ হলে বাড়িটি হাতছাড়া হয়ে যায় শ্রফ পরিবারের।
কর্ণ জোহরের কফির আড্ডায় এসে সেই দুর্দিনের কথা বলতে বলতে চোখ ভিজে যায় আয়েশার। জানান, স্বামী যেমন তাঁর পাশে ছিলেন, তেমনই পরের ধাপটুকু সামলে দেন ছেলে।
আয়েশার কথায়, “‘বুম’ আমার জীবনে অনেকটা জুড়ে ছিল। পাইরেসির চক্রে পড়ে ডিস্ট্রিবিউটররা পিছিয়ে গেলেন। আমার ছবির দায়িত্ব নিল না কেউ। তখন পাশে দাঁড়িয়েছিল আমার স্বামী। বলেছিল, ‘এটা আমাদের পরিবারের সম্মানের প্রশ্ন। আমরা নিশ্চয়ই ছবিমুক্তির ব্যবস্থা করব। পাশে আছি তোমার।”
আয়েশা বলে চলেন, “আমরা বাড়ি বন্ধক দিই। কিন্তু কষ্ট করে ‘বুম’ মুক্তির ব্যবস্থা করলেও সেটি ব্যর্থ হয়। বাড়ি হাতছাড়া হয়ে যায়। খুব যন্ত্রণার মধ্যে দিন কেটেছে।” কিন্তু টাইগার অভিনয়ে এসেই প্রথম প্রতিশ্রুতি দেন মাকে। জানান, বাড়িটা তিনি ফিরিয়ে আনবেন।
চোখের জলে ভেসে আয়েশা বলেন, “ছেলের কথায় আমি আবেগে ভাসি। যখন স্বামী আমার পাশে আছে, ছেলে আমায় এত ভালবাসে, আর কী চাওয়ার থাকতে পারে! জীবন আমায় ভরিয়ে দিয়েছে।”
টাইগারও একাধিক সাক্ষাৎকারে তাঁদের বাড়ি বিক্রির যন্ত্রণা ব্যক্ত করেছেন। তাঁর কথায়, “আমি জানতাম, আমরা চেষ্টা করেছি। কিন্তু পারিনি। মনে পড়ে, একটা একটা করে আসবাব বেচে দেওয়া হচ্ছিল। মায়ের হাতের কাজ, লণ্ঠন… যা কিছুর মধ্যে আমার বেড়ে ওঠা, সব একে একে অদৃশ্য হয়ে গেল। বিছানা ছেড়ে মেঝেতে শুতে শুরু করলাম আমি। খুব খারাপ লেগেছিল। সেই বয়সেই আমি কিছু কাজ জুটিয়ে মা-বাবার পাশে থাকতে চেয়েছিলাম, কিন্তু পরিস্থিতি ছিল না। কোনও ভাবে পাশে দাঁড়াতে পারিনি বলে আফসোস হয়।”
তবে আয়েশা জানান, টাইগার কথা রেখেছিলেন। মাকে একটি বাড়ি কিনে দিয়েছিলেন তিনি রোজগারের টাকায়।