হাসিতে আসিও না

জন্মান্তর নিয়েই ছবির গল্প। পূর্বজন্ম প্রায় ৬০০ বছর আগে ১৪১৯ সালে। সেই জন্মে বালা (অক্ষয়কুমার) ও মধু (কৃতী শ্যানন), বঙ্গরু মহারাজ (রিতেশ দেশমুখ) ও মালা (পূজা হেগড়ে) এবং ধর্মপুত্র (ববি দেওল) ও মীনার (কীর্তি খারবান্দা) প্রেম।

Advertisement

নবনীতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৩৪
Share:

হাউজফুল ৪-এর একটি দৃশ্য

গ্রিকরা ‘হিউমরাল মেডিসিন’ ব্যবহার করতেন, যা ‘হিউমার’ বা দেহরসের সামঞ্জস্য বজায় রেখে মানুষের স্বাস্থ্য ও সতেজতা ঠিক রাখায় সাহায্য করত। এর থেকেই ইংরেজি ‘হিউমার’ শব্দটি এসেছে, যাকে বলা যায় হাস্যরস। এই হাস্যরসই নাকি মানুষের দেহের বিভিন্ন রসের ভারসাম্য বজায় রাখে। কিন্তু এমন হাস্যরস যদি তৈরি করা হয়, যাতে সব ব্যালান্সই পলকে নষ্ট হয়ে যায়। তার উদাহরণ ‘হাউসফুল ফোর’। ছবির প্রথমার্ধের মতোই পূর্বজন্মের গল্প তুলনামূলক ভাবে ভাল। তবে দ্বিতীয়ার্ধ বা পুনর্জন্মের পর থেকে তা আর কহতব্য নয়। এমন স্ক্রিপ্ট লেখারও দম চাই!

Advertisement

জন্মান্তর নিয়েই ছবির গল্প। পূর্বজন্ম প্রায় ৬০০ বছর আগে ১৪১৯ সালে। সেই জন্মে বালা (অক্ষয়কুমার) ও মধু (কৃতী শ্যানন), বঙ্গরু মহারাজ (রিতেশ দেশমুখ) ও মালা (পূজা হেগড়ে) এবং ধর্মপুত্র (ববি দেওল) ও মীনার (কীর্তি খারবান্দা) প্রেম। তারা একে অপরকে বিয়ের জন্য প্রস্তুত হলেও বাদ সাধে গামা (রানা দগ্গুবতী)। নিজের ভাইয়ের হত্যার প্রতিশোধ নিতে সে আক্রমণ করে সিতমগড়। আর সেখানেই তাদের মারদাঙ্গার মাঝে রাজপ্রাসাদ ভেঙে একসঙ্গে সকলের মৃত্যু হয়। সকলেরই পুনর্জন্ম হয়। আবার বিবাহসূত্রেই এক জায়গায় আসে গত জন্মের সব চরিত্র। সেখানে কারও পূর্বজন্ম মনে পড়ে, তো কারও পড়ে না। এগোতে থাকে গল্প...

ছবির প্রথমার্ধে যে রাজকীয় সেট ও বেশভূষা তৈরি করা হয়েছে, তা প্রশংসনীয়। তবে তার ছত্রে ছত্রে ‘পদ্মাবত’ ও ‘গেম অব থ্রোন্‌স’-এর ছায়া। এমনকি পূর্বজন্মে প্রাসাদের নীচে বালা ও মধুর পাথরচাপা অবস্থায় মৃতদেহ মনে করিয়ে দেয় ‘জিওটি’র জেমি ও সারসেইর মৃত্যুদৃশ্য। অন্য দিকে গামার লুক তৈরি করতে ধার করা হয়েছে খাল দ্রোগোর সাজপোশাক। এ ছাড়াও বিভিন্ন ছবি ও ওয়েব সিরিজ়ের সংলাপ এবং গানের লাইন ধার করে দর্শককে হাসানোর যে চেষ্টা করা হয়েছে, তা চ্যালাকাঠ দিয়ে সুড়সুড়ি দেওয়ার মতোই।

Advertisement

হাউসফুল ফোর
পরিচালনা: ফারহাদ সামজি
অভিনয়: অক্ষয়, রিতেশ, ববি, কৃতী, পূজা, কীর্তি
৪.৫/১০

অক্ষয় ও কৃতীর জন্য তা-ও সিটে বসে থাকা যায়। পরক্ষণেই অভিব্যক্তিহীন চাহনি নিেয় ববি দেওলের নাচ দেখলে সেই সিটেই টিকে থাকা দায়। বরং বঙ্গরু মহারাজের চরিত্রে রিতেশের অভিনয় ভাল। পূজা ও কীর্তি ‘হাউসফুল’ নামক একটি ফ্যামিলি পোর্ট্রেটের দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ফুলদানির চেয়ে বেশি কিছু নন। ছবিতে নওয়াজ়উদ্দিন সিদ্দিকিও আছেন তাঁর ‘সেক্রেড গেম্‌স’ খ্যাত সংলাপ ‘কভি কভি লাগতা হ্যায় আপুন হি ভগবান হ্যায়’ নিয়ে। আর তিনটি পায়রা আছে নীল, নীতিন, মুকেশ নামে। গোটা ছবিতে তারা অক্ষয়কুমারের মাথায় মলত্যাগ করে গিয়েছে। ছবিশেষে হল থেকে বেরোনোর সময়ে সেই বিষ্ঠার সারমর্ম উপলব্ধি হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement