মনোজ মিত্রর ‘সাজানো বাগান’ অবলম্বনে তৈরি হয়েছিল মরাঠি ছবি ‘নারবাচি ওয়াড়ি’। সে ছবির প্রযোজক ছিলেন মুম্বই নিবাসী এক বাঙালি। নাম পিন্টু গুহ। জাতীয় টেলিভিশন দুনিয়ায় বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় সিরিয়াল প্রযোজনা করেছেন তিনি। অন্যতম হল ‘উতরণ’। পিন্টুর স্ত্রী রূপালি গুহ পরিচালনা করেছেন প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে ‘পরিচয়’।
সেই পিন্টু এই বার শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও নন্দিতা রায় পরিচালিত ‘ইচ্ছে’র হিন্দি রিমেক করার জন্য চুক্তি করেছেন। আপাতত চিত্রনাট্য লেখার কাজ চলছে। তার পর শুরু হবে কাস্টিং।
কেন ‘ইচ্ছে’কে বেছে নিলেন বলিউডের জন্য? তার কারণ হল ছবির বিষয়। এক পোজেসিভ মা এবং তার ছেলেকে ঘিরে ছবি। বলিউড মনে করছে এই বিষয়টার জাতীয় দর্শকের কাছে আকর্ষণীয় হওয়ার সম্ভাবনা আছে। “প্রথমে আমাদের বলা হয় ছবিটা মরাঠিতে রিমেক করার কথা। কিন্তু আমরা বলি ‘ইচ্ছে’র মধ্যে একটা সর্বজনীন আবেদন রয়েছে। তার পর ঠিক হয় ছবিটা হিন্দিতে তৈরি হবে। তখন আমরা রাজি হয়ে যাই। তবে নন্দিতাদি আর আমার একটাই শর্ত ছিল। হিন্দি রিমেকটাও আমরা পরিচালনা করব,” শিবপ্রসাদ জানান।
পিন্টুও রাজি হয়ে যান। “এ ছবির বিষয় একদম পরিচালক নির্ভর। ওঁরা যে ভাবে ছবির আত্মাটাকে প্রকাশ করেছেন আমার সেটা খুব পছন্দ হয়েছিল। হিন্দি ছবির ক্ষেত্রেও আমি চাই সেই একই ‘স্পিরিট’টা ধরতে,” বলছেন পিন্টু।
শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়
তবে ছবির কাজ শুরু হতে হতে বেশ খানিকটা সময় লাগবে। তাড়াহুড়ো করে কাজটা শুরু করতে চান না প্রযোজক। বলিউডে চিত্রনাট্যকারদের সঙ্গে ইতিমধ্যে কথা বলেছেন যাতে ছবির হিন্দি চিত্রনাট্যটা ঠিক ভাবে ‘অ্যাডাপ্ট’ করা যায়। “আমাদের পরের রিলিজ ‘রামধনু’। তার পরে দুটো বাংলা চিত্রনাট্য নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করছি। হিন্দি ছবির জন্য সময় বের করতে হবে। একটাই ভরসা। ‘ইচ্ছে’টা যেহেতু নিজেরাই পরিচালনা করেছি তাই হিন্দি ছবির রিমেকের বিষয়টা আমাদের জানা,” বললেন শিবপ্রসাদ।
মূল ছবির শিল্পীরা কি থাকবেন বলিউড রিমেকে? “না, সেটা ভাবছি না। সমদর্শী এখন ওই বয়সের চরিত্রে মানাবে না,” বলছেন শিবপ্রসাদ। আর সোহিনী সেনগুপ্ত? “আপাতত আমরা হিন্দি ছবির অভিনেতাদের কথাই ভাবছি। হয়তো কাজল বা শ্রীদেবীকে অ্যাপ্রোচ করতে চাইব। সোহিনীর কথা মাথায় রাখছি। আমাদের খুব ভাল লাগবে যদি ওকে অন্য কোনও ভাবে কাস্ট করতে পারি,” বলছেন পরিচালক।
কিছু দিন আগে ‘ভূতের ভবিষ্যত্’য়ের রিমেক হয়েছিল হিন্দিতে। কিন্তু ছবিটা সে ভাবে সাফল্য পায়নি। তবে পিন্টু বলছেন ওই ছবির বক্স অফিসের পরিণতি তাঁর ‘ইচ্ছে’ রিমেক করার চাহিদাটা কমায়নি। বরং আশ্বাস দিয়ে বলছেন, “খুব যত্ন নিয়ে ‘সাজানো বাগান’টা অ্যাডাপ্ট করেছি। ছবির রিভিউ পড়লেই বুঝতে পারবেন। ‘ইচ্ছে’র ক্ষেত্রেও তাই করব।”
‘ইচ্ছে’র আবেদন কতটা সর্বভারতীয় হয় এখন সেটাই দেখার।