বাবার স্মৃতিচারণে আবেগপ্রবণ বাংলাদেশের অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। ছবি: ফেসবুক।
দুই বাংলায় ঝড় তুলেছিল তাঁর সাম্প্রতিক ছবি ‘হাওয়া’। কিন্তু ছবির সাফল্য ও দর্শকের প্রশংসার মাঝেই মুক্তি পেয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত তাঁর ওয়েব সিরিজ় ‘কারাগার পর্ব ২’। আগের পর্বের মতোই তাঁর অভিনয় প্রশংসা পেয়েছে এ বারও। কিন্তু এত কিছুর মাঝেই যেন বড় একা চঞ্চল চৌধুরী। গত ২৭ ডিসেম্বর প্রয়াত হয়েছেন তাঁর বাবা। দু’দিন কেটে গিয়েছে। স্মৃতিচারণায় আবেগঘন পোস্ট করলেন চঞ্চল।
বৃহস্পতিবার ফেসবুকে চঞ্চল লেখেন, ‘‘গতকাল নিজগ্রাম কামারহাটের পদ্মাপাড়েই তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাবা মিশে গেল এই গ্রামেরই আলো বাতাসে,পদ্মার জলে। সন্ধ্যায় ধর্মীয় আচার শেষে যখন নদীর পাড় থেকে বাড়ি ফিরলাম, তখন ভুলেই গিয়েছিলাম যে, বাবাকেই তো নদীর পাড়ে রেখে এসেছি।’’
বাবার সঙ্গে একান্তে চঞ্চল চৌধুরী। ছবি: ফেসবুক।
অনুরাগীরা জানেন চঞ্চলের ব্যক্তিজীবনের সিংহভাগ জুড়ে ছিলেন তাঁর বাবা রাধা গোবিন্দ চৌধুরী। বাবার অনুপস্থিতিতে তাঁর মনের মধ্যে ঝড় উঠেছে শূন্যতার। চঞ্চল লিখেছেন, ‘‘সারা রাত দুই চোখের পাতা এক করতে পারিনি। সারা বাড়িময়, ঘরময় যেন বাবা গুটি গুটি পায়ে হেঁটে বেড়াচ্ছে। এই বুঝি কখন আমায় ডাক দিয়ে বলবে,‘চঞ্চল…বাবা ঘুমাইছো?’, বাবার কোনও কথা আর কোনও দিন কানে বাজবে না বাবাকে দেখতে পাব না, এগুলো কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছি না।’’
এরই সঙ্গে অভিনেতা তাঁর নিজের মনের অবস্থাও ব্যক্ত করেছেন। বাড়িতে বাবার রেখে দেওয়া শাল গায়ে জড়িয়ে নিয়েছেন তিনি। শীতের মিঠে রোদ তাঁকে মনে করিয়ে দিচ্ছে প্রিয় বাবার কথা। চঞ্চল লেখেন, ‘‘রোদের উষ্ণতা নয়...বাবার শরীরের কোমল উষ্ণতা খুঁজে ফিরছি এখন, বাকি জীবনটা হয়তো এ ভাবেই খুঁজতে হবে।’’
প্রসঙ্গত, বেশ কয়েক দিন আগেই অভিনেতার বাবার সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়। তাঁর পর থেকেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পাশাপাশি ছিল বার্ধক্যজনিত সমস্যাও। ভর্তি ছিলেন ঢাকার হাসপাতালে। বাবার শারীরিক অবস্থা ভাল না থাকায় এ পার বাংলায় ‘হাওয়া’ মুক্তি বিষয়ক সাংবাদিক সম্মেলনে অনুপস্থিত ছিলেন চঞ্চল। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন ভিডিয়ো কনফারেন্সে। তবে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে ২৮ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী মঞ্চে দেখা গিয়েছিল অভিনেতাকে। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘বাবার শারীরিক অবস্থার এখনও কোনও উন্নতি হয়নি। তাই দু’দিন পরে হলেও আমি পরিবারের অনুমতি নিয়ে কলকাতায় চলে এসেছি। বলেও এসেছি যে, কোনও খারাপ খবর এলে আমি ঢাকায় ফিরে যাব।’’