(বাঁ দিকে) পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, হেমা মুন্সী (ডান দিকে)। ছবি: ফেসবুক।
শুক্রবার আনন্দবাজার অনলাইনে বিনোদন দুনিয়ার ‘আমরা-ওরা’ বিভাজনের ইঙ্গিত রেখেছিলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। ফেডারেশনের নতুন পদক্ষেপ ‘সুরক্ষা বন্ধু’কে কেন্দ্র করে। টলিউডের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেক নারী ও শিশুর সুরক্ষার কারণে এই কমিটি তৈরির কথা সম্প্রতি আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেন সংগঠনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস। এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও পরমব্রতের ক্ষোভ, কমিটিতে ডিরেক্টর্স গিল্ডের কোনও প্রতিনিধিকে ডাকা হয়নি, রাখাও হয়নি। প্রযোজক-পরিচালক-অভিনেতার অভিযোগ, বাংলা চলচ্চিত্র পরিবারের একযোগে ডাকা আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন একাধিক টেকনিশিয়ান। পরে সংগঠন থেকে তাঁদের যোগ না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। শনিবার যেন তারই পাল্টা জবাব মিলল কেশসজ্জা শিল্পী হেমা মুন্সীর তরফ থেকে। তিনি প্রথমে সমাজমাধ্যমে, পরে আনন্দবাজার অনলাইনে প্রশ্ন রাখলেন, “প্রতিবাদী মিছিলে এত ‘পর্দা’র ছড়াছড়ি কেন? ‘চলচ্চিত্র পরিবার’ বললে আমরা এক পরিবার, এটা প্রমাণিত হয়। সকলের ভালও লাগে। বিভেদ প্রকাশ্যে আসে না!”
এ দিন তিনি পরমব্রতের অভিযোগ কার্যত নস্যাৎ করে দেন। বলেন, “এ রকম কিছু ঘটেনি। ফেডারেশন থেকে আমাদের যাওয়া, না-যাওয়া নিয়ে কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। আমরা ব্যক্তিগত ভাবে জনা ১৪ মেয়ে প্রতিবাদী মিছিলে শামিল হয়েছি। রাত দখল করেছি। সংগঠন তাতে কোনও আপত্তি জানায়নি।” তিনি অবশ্য এ-ও জানান, এখনও পর্যন্ত ফেডারেশন কোনও মিছিল বা সমাবেশ ডাকেনি। ফলে, সংগঠনের যে সব সদস্য পথে নেমেছেন, তাঁরা সংগঠনের কোনও ব্যানার ব্যবহার করতে পারেননি। সংগঠন যে দিন এই উদ্যোগ নেবে, সে দিন তাঁরা সংগঠনের ব্যানার নিয়ে আবার পথে নামবেন। পাল্টা অভিযোগও করেন, “কখনও ছোট পর্দা পথে নামছে, তো কখনও আর্টিস্টস' ফোরাম। এ ভাবে ছোট ছোট দলে দফায় দফায় মিছিল। ওরা আমাদের অফিসিয়ালি কোনও বার্তা পাঠাচ্ছে না। সমাজমাধ্যম থেকে বাকিরা যেমন জানতে পারছেন, আমরাও সে ভাবেই জানছি। এটাও কি কাম্য?”
কিছু দিন আগে ‘চলচ্চিত্র পরিবার’-এর ছাতায় একটি মিছিল খান্না থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত হেঁটেছিল। সেখানেও টেকনিশিয়ানদের সে ভাবে দেখা যায়নি...। প্রসঙ্গ তুলতেই কেশসজ্জা শিল্পীর পাল্টা যুক্তি, “আমরা পথে নামলে শুটিং বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ, প্রযোজকেরা শুটিং বন্ধ রাখছেন না।” তাঁর মতে, যে দিন যাঁরা অবসর পাচ্ছেন সে দিন তাঁরা একজোট হয়ে পথে নামছেন। টেকনিশিয়ানদের কোনও ছুটি নেই। উদাহরণ হিসেবে তিনি পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায়ের সেটে টেকনিশিয়ানদের যোগ না দেওয়ার কারণে শুটিং স্থগিত হয়ে যাওয়ার উদাহরণও তুলে ধরেন।
‘চলচ্চিত্র পরিবার’ নাম দিয়ে একযোগে সকলকে পথে নামার আহ্বান জানানো হলে তখন কি টেকনিশিয়ানেরা সেই ডাকে সাড়া দেবেন?
সামান্য দোলাচল। তার পরেই হেমার জবাব, “আমরা আট হাজারেরও বেশি টেকনিশিয়ান। সকলে এসঙ্গে পথে নামলে কলকাতা আংশিক বন্ধ হয়ে যাবে। যানবাহন স্তব্ধ হয়ে পড়বে। অ্যাম্বুল্যান্স নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে না। আমাদের সামলাতে আলাদা করে পথে নামাতে হবে পুলিশ। শহরবাসীর জন্য এই পরিস্থিতি কি খুব ভাল হবে?”