পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়।
কাঞ্চন মল্লিক রাজনীতিতে। স্ত্রী পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায় চুপ।স্বামী উত্তরপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচিত বিধায়ক। বিধায়কের অভিনেত্রী স্ত্রী বৃহস্পতিবার নেটমাধ্যমে কাঁধ খোলা সাহসি ছবি পোস্ট করেছেন। সঙ্গে সাহসী মন্তব্যও, ‘বৃষ্টি তোর গায়ে কোনও রং নেই, ন্যুড বলেই কি তুই এত ভাল? রক্তের রং লাল বলেই মিথ্যের রং কালো?’ হঠাৎ এমন মন্তব্য কেন করলেন তিনি? রঙের মাহাত্ম্য তিনিও বুঝে গিয়েছেন? আনন্দবাজার ডিজিটালের কাছে পিঙ্কির স্পষ্ট জবাব, ‘‘রাজনীতির তিনি কিছুই বোঝেন না। তবে এক অভিনেতার অপমৃত্যু হলে আরেক অভিনেতা কী করে খুশি হয়?’’
সাহসি ছবি পিঙ্কি এর আগেও নেটমাধ্যমে ভাগ করে নিয়েছেন। কিন্তু এখন তিনি বিধায়কের স্ত্রী। ট্রোল হতে কতক্ষণ? অভিনেত্রীর দাবি, ‘‘কাঞ্চন মল্লিক আমার স্বামী। অবশ্যই আমি বিধায়কের স্ত্রী। কিন্তু এই পরিচয়ে আমি বাঁচি না। আমি অভিনেত্রী পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নামেই অভিনয় দুনিয়া আমায় চেনে। এই নামেই আমার কাছে পারিশ্রমিকের চেক আসে। এই পিঙ্কি আগেও সাহসি ছবি দিয়েছে। সেই পিঙ্কিই বৃহস্পতিবার বৃষ্টি দেখতে দেখতে নিজেকে মেলে ধরেছে নিজের সামাজিক পাতায়।’’ একই সঙ্গে জানালেন, তাঁর লেখা পড়ে মন্তব্য করেছেন স্কুলের ২ বন্ধু। মনে করিয়ে দিয়েছেন, ছোট থেকেই পিঙ্কি ভাল লিখতেন। অভিনেত্রীর কথায়, ‘‘বরাবরই অঙ্কে কাঁচা। তাই অ্যালজেব্রার ক্লাসে শেষ বেঞ্চিতে বসে মন যা চাইত তাই-ই লিখতাম। বন্ধুরা ঘিরে রাখত। টিফিনের সময় পড়া হত সে সব লেখা।’’
এ ভাবেই ছোট থেকে বড় হয়েছেন। স্কুল পেরিয়ে, কলেজ চুকিয়ে তিনি অভিনেত্রী। লাল, গেরুয়া, সবুজ রঙের মাহাত্ম্যও বুঝেছেন। সব দেখেশুনে মনখারাপ তাঁর? পিঙ্কির দাবি, ‘‘কাজ করতে গেলে রাজনীতিতে আসতে হয়, এ কথা আমি বিশ্বাস করি না। আমার মতে, বিপ্লব নয় সৃষ্টিশীল কাজ দিয়েই সমাজ, রাজ্য, দেশের উন্নতিসাধন সম্ভব।’’ পিঙ্কির কথায়, যিনি যে কাজটি ভাল পারেন তাঁকে সেই কাজই মানায়। সেই কাজ দিয়েই সেই ব্যক্তি সবাইকে সঙ্গে নিয়ে নিজে এগোন। একই সঙ্গে পিঙ্কি বোঝেন, সৃষ্টিশীল মানুষেরা যত একা থাকবেন ততই তাঁরা নতুন নতুন সৃষ্টি করতে পারবেন। দল বেঁধে থাকা তাঁদের জন্য নয়। জোর করে থাকতে গেলে কী অঘটন ঘটতে পারে তার অজস্র উদাহরণ ইতিহাসের পাতায় রয়েছে।
নিজের মত কোনও দিন কাঞ্চনের কাছে প্রকাশ করেছেন? পিঙ্কি কি চাননি অভিনেতা স্বামী রাজনীতিতে আসুন? অভিনেত্রীর সাফ জবাব, তিনি রাজনীতি একেবারেই বোঝেন না। তাই স্বামীর রাজনীতি নিয়ে তাঁর কোনও বক্তব্য নেই। দাবি, বরাবর তাঁরা পরস্পরের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে এসেছেন। ব্যক্তি স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ২ জনেই। তাই স্বামীর সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে কোনও দিন আলোচনাও করেননি। একটি সহজ উদাহরণ দিয়ে অভিনেত্রী সে কথা বুঝিয়েও দিয়েছেন, ‘‘যে ছবিতে কাঞ্চন অভিনয় করেছেন সেই ছবিতে কি আমায় কেউ দেখেছেন? তা হলে কাঞ্চনের রাজনৈতিক জীবনে পিঙ্কির ছায়া পড়বে কেন?’’
স্বামীর জয়ের পরেও তাই পিঙ্কি নীরব। এই নীরবতাই তাঁকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনে কাঞ্চনের জয় আদৌ উপভোগ করেছেন তাঁর অভিনেত্রী স্ত্রী? পিঙ্কির এ বারেও সাফ কথা, ‘‘কাঞ্চন অনেক লড়াই করে জিতেছে। নিশ্চয় সেটা আনন্দের। পাশাপাশি আমার মতে, রাজনীতিতে আসে মানেই শিল্পীসত্ত্বার অপমৃত্যু ঘটা। এক জন ভাল শিল্পীর মৃত্যুতে আরেক জন শিল্পীকে কখনও কেউ খুশি হতে দেখেছেন? আমারও সেই অবস্থা।’’