মিথিলার লুক
পাঠ্য হিসেবে যখন শেক্সপিয়রের ‘ম্যাকবেথ’ পড়েছিলেন, সেই সময় থেকেই তা নিজের মতো করে পর্দায় রূপ দেওয়ার কথা মাথায় ছিল পরিচালক রাজর্ষি দে-র। আগামী ছবি ‘মায়া’ তাঁর সেই স্বপ্নই পূরণ করতে চলেছে। মুখ্য ভূমিকায় রাফিয়াত রশিদ মিথিলা, এ পার বাংলায় যাঁর প্রথম কাজ এটিই। মাহিরা থেকে মায়া হয়ে ওঠার জার্নিতে বিভিন্ন রূপে এ ছবিতে ধরা দেবেন মিথিলা। ১৯৮৯ -এর কলকাতা থেকে গল্পের শুরু, যা এসে শেষ হয় সাম্প্রতিক সময়ে। ধর্ষিতা হওয়ার পরে এক সংখ্যালঘু নারী কী ভাবে ঘুরে দাঁড়ায়, অল্টার ইগো রূপে পুরুষতন্ত্রের শিকল ছেঁড়ার প্রেরণা জোগায় অন্য নারীদের— সেই গল্পই বলবে ‘মায়া’। পরিচালকের কথায়, ‘‘আমার মনে হয় নাটকটা যে সময়ে লেখা, তখন অভিনয়ের জন্য নারীচরিত্র পাওয়া যেত না বলেই হয়তো ম্যাকবেথকে সামনে রাখা হয়েছিল। কাহিনির আসল চালিকাশক্তি কিন্তু লেডি ম্যাকবেথই। নারীক্ষমতায়নের আঙ্গিক থেকেই ধরতে চেষ্টা করেছি গল্পটাকে।’’
প্রথম ছবিতেই এমন একটি চ্যালেঞ্জিং চরিত্র পেয়ে উত্তেজিত মিথিলাও, ‘‘গল্পটা ‘ম্যাকবেথ’-এর অনুপ্রেরণায় তৈরি বলেই আগ্রহ জন্মেছিল প্রথমে। ছবিতে তিনটে আলাদা বয়সে, আলাদা লুকে দেখা যাবে আমাকে। আশা করি, এখানে প্রথম এই কাজে আমার অভিনয় ভাল লাগবে সকলের,’’ বললেন মিথিলা। জেনিভা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এবং আন্তর্জাতিক এনজিও-র কর্মী মিথিলা স্পষ্ট জানালেন, পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুন, অভিনয় ছাড়া তিনি থাকতে পারবেন না। ‘‘বৈবাহিক সূত্রে এখন কলকাতাতেই থাকছি, তাই এখানেই কাজ করব। বেশ কিছু প্রস্তাব পেয়েছি গত বছর থেকে।’’ প্রথম ছবির আগে স্বামী সৃজিত মুখোপাধ্যায় কি কোনও পরামর্শ দিয়েছিলেন? ‘‘এই ছবিতে রাজর্ষিদাই আমার ক্যাপ্টেন। আর শুটে যাওয়ার আগে পর্যন্ত আমার চরিত্র সম্পর্কে কিছু জানাইনি সৃজিতকে। আসলে প্রভাবিত হতে চাইনি,’’ জবাব মিথিলার।
ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা যাবে পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়কে। ডানকানের আদলে তৈরি দরবার শর্মার চরিত্রটি ডার্ক, সর্ব অর্থে খল একটি চরিত্র। ‘‘এমন চরিত্রে আগে কখনও আমাকে দেখা যায়নি। একজন উদ্ধত ও লম্পট প্রযোজক, যার অপরাধজগৎ, মাদকব্যবসার সঙ্গে যোগ রয়েছে,’’ বললেন কমলেশ্বর। ছবিতে তাঁর ছেলের চরিত্রে রাহুল। নেশাসক্ত, ঘেঁটে যাওয়া শৈশবের স্মৃতি বয়ে নিয়ে চলা তাঁর চরিত্র ময়ঙ্ক শর্মা। ‘‘সে অর্থে ছবিতে খুব বেশি দৃশ্য নেই আমার, কিন্তু সেটুকুই খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর রাজর্ষি নিজে একজন অভিনেতা হওয়ায় সেটে প্রচুর ইম্প্রোভাইজ় করেছি সকলে,’’ বললেন রাহুল।
ছবিতে কনীনিকা ও কমলেশ্বর
দেবদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রোহিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রযোজনায় তৈরি হয়েছে ছবিটি। নতুন প্রযোজক, পরিচালক রাজর্ষি ও তাঁর ইউনিটের সঙ্গে কাজ করতে পেরে সকলেই উচ্ছ্বসিত। অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র পারমিতার ভূমিকায় থাকা কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘প্রথমে প্রস্তাবটা ফিরিয়ে দিলেও পরে রাজর্ষির সঙ্গে কথা বলে একটা পজ়িটিভ এনার্জি পাই। আমার চরিত্রটা এমন এক অভিনেত্রীর, যে এক সময়ে খ্যাতির শীর্ষে ছিল। এমন চরিত্রে দর্শক আগে কখনও আমায় দেখেননি।’’
ছবিতে দেখা যাবে সুদীপ্তা চক্রবর্তী, তনুশ্রী চক্রবর্তী, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, গৌরব চক্রবর্তী-সহ অনেককেই। ছবি মুক্তির পরিকল্পনা রয়েছে ডিসেম্বরে।