(বাঁ দিকে) লখনউ সেন্ট্রাল (ডানদিকে) মুক্তধারা।
এক মাসের মধ্যে তৃতীয় বার! পরিচালক সেই একই জুটি। শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়-নন্দিতা রায়।
মুম্বইয়ের এক ঘনিষ্ঠ সূত্র ওঁদের জানিয়েছে, সেপ্টেম্বরে মুক্তি পেতে চলা ‘লখনউ সেন্ট্রাল’ ছবিটির গল্প হুবহু না’হলেও অনেকটাই নাকি মিলে যায় ‘মুক্তধারা’র সঙ্গে। ছবিটিতে অভিনয় করছেন ফারহান আখতার ও কৃতী স্যানন। সেখানে কৃতী একজন এনজিও কর্মী। তিনি জেলবন্দিদের সংশোধিত জীবনে আনতে চান। ফারহান জেলবন্দি। এটুকু শুনলে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত-নাইজেল আকারা অভিনীত ‘মুক্তধারা’র নাম ভাসে বইকী!
এই ঘটনার আগে আরও দু’টি ছবি ঘিরে একই রকমের সন্দেহ ওঠে। ইরফান খান অভিনীত ‘হিন্দি মিডিয়াম’ ও সতীশ ভেগেসনার তেলুগু ছবি ‘সাথামানাম ভবতী’। অভিযোগ, প্রথমটি শিবপ্রসাদ-নন্দিতার ‘রামধনু’র মতো। দ্বিতীয়টি যেন ‘বেলাশেষে’! সতীশ অবশ্য ঘটনাটি পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন। কিন্তু বাঙালি পরিচালক জুটি কি এ নিয়ে আইনি লড়াইয়ে যাবেন? ‘‘সত্যি, ‘পোস্ত’ রিলিজের ব্যস্ততায় অন্য কিছু ভাবারই সময় নেই,’’ মন্তব্য শিবপ্রসাদের।
‘প্ল্যাজিয়ারাইজড’! সোজা বাংলায় যাকে বলে ‘চুরি’। সিনেমামহলে অবশ্য এ ঘটনা আজকের নয়। কিন্তু একই পরিচালকের পর পর ছবি এত কম সময়ে ‘কপি’ হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা হয়তো বা আগে চোখে পড়েনি। ‘‘সমস্যটা সময়ের। ধরুন ‘পোস্ত’। ছবিই রিলিজ হয়নি। এখনই চারটে নামী স্টুডিয়ো ছবিটিকে হিন্দি করার জন্য কিনতে চায়। এ সব নিয়ে যাদের-যাদের সঙ্গে আলাপ হয়, তারা স্টোরি লাইন নিয়ে নানা জনের সঙ্গে কথা বলে। তার মধ্যে কে যে কখন কী করে দেয়, ধরা মুশকিল। কনসেপ্টটা পেয়ে গেলেই তো হয়ে গেল,’’ বলছিলেন শিবপ্রসাদ।
‘কনসেপ্ট’ নিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এখন টলিউডও সরগরম। পরিচালক শৌভিক মিত্রর ‘কার্জনের কলম’। একটি চ্যানেলের প্রাক্তন প্রোডাকশন কর্তা রাজর্ষি দে দাবি করেছেন, কাহিনিকার পদ্মনাভ দাশগুপ্ত হলেও ‘কার্জনের কলম’ গল্পটির ভাবনা তাঁর। কিন্তু সে কথা কোথাও উল্লেখ করা হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘এ নিয়ে টেলিফিল্মও হয়ে গিয়েছে একটি চ্যানেলে।’’
এ প্রসঙ্গে পরিচালককে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে অন্য এক জন ছবির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। পরে আমাকে কাজটি দেওয়া হয়। আমি এই ঘটনার বিন্দুবিসর্গ জানতাম না। আমার কাছে যে স্ক্রিপ্ট, তাতেও কাহিনিকার হিসেবে পদ্মনাভর নাম। ইম্পাতে যে স্ক্রিপ্ট ‘নো অবজেকশন’ জানিয়ে কাহিনিকারকে জমা দিতে হয়, সেখানেও কাহিনিকার হিসেবে পদ্মনাভরই স্বাক্ষর। এ বার সমস্যা হলে, পদ্মনাভই মেটাতে পারেন। তা ছাড়া কারও নাম উল্লেখ করা বা না-করার সময় এখনও আসেনি। ছবিটির প্রচারই তো শুরু হয়নি। একটিই প্রতিবেদন বেরিয়েছে আনন্দবাজার-এ। সেখানে তো প্রযোজকেরও নাম ছিল না।’’
এ দিকে রাজর্ষি চান, ছবিতে যেন কাহিনিসূত্রে তাঁর নামের উল্লেখ থাকে। সঙ্গে তিনি সাম্মানিকও দাবি করছেন। অবশ্য কোনও আইনি পথে তিনি যেতে চান না। প্রযোজক পবন কানোরিয়া এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘কীসের আইনি লড়াই! আমাদের সম্পর্ক কাহিনিকারের সঙ্গে। আর তাঁর সঙ্গে কার কী কথা হয়েছে আমরা কী করে জানব! এ বার যদি উনি বলেন, রাজর্ষির নাম কাহিনিসূত্রে রাখতে, রাখব!’’
এ নিয়ে পদ্মনাভ বললেন, ‘‘সত্যিই কনসেপ্টটা রাজর্ষি দে-র। সূত্রকারের ক্রেডিট ওঁর প্রাপ্য। কিছু যোগাযোগ সংক্রান্ত সমস্যা হয়েছে। আসলে মাঝপথে পরিচালক পরিবর্তন হয়ে যাওয়াতেই এমনটা ঘটেছে। মনে হয়, মিটে যাবে সব!’’