প্র: অনেকের মতে, ‘সঞ্জু’তে আপনি রণবীর কপূরকে টেক্কা দিয়েছিলেন। এতে গর্ব হয়?
উ: ‘সঞ্জু’ যখন রিলিজ় করে, আমি তখন ‘উরি’র শুটিং করছিলাম সার্বিয়াতে। পরিচালক রাজকুমার হিরানি প্রোডাকশনের সঙ্গে কথা বলে আমাকে একটা প্রিন্ট পাঠান। ‘উরি’র ইউনিটের সঙ্গে বসে ছবিটা দেখি। ছবি রিলিজ়ের পর দেশ থেকে অনেক প্রশংসাসূচক মেসেজ পাচ্ছিলাম। আর টেক্কা দেওয়ার কোনও রকম মানসিকতা নিয়ে আমি অভিনয় করিনি। কমলির চরিত্রের সাফল্যের পিছনে সবচেয়ে বড় হাত ছিল লেখক অভিজাত জোশীর। এই ছবি থেকে পাওয়া প্রতিক্রিয়াগুলো অভিনেতা হিসেবে আমার বড় প্রাপ্তি।
প্র: আপনার ভাই সানি কৌশল ‘গোল্ড’-এ ভাল অভিনয় করেছেন। বড় ভাই হিসেবে কী মনে হচ্ছে?
উ: আমাদের মধ্যে বয়সের ব্যবধান খুব কম। আমি ওর থেকে ঠিক এক বছর চার মাসের বড়। ‘গোল্ড’ দেখার পরে প্রথম অনুভূতিটা খুব স্পেশ্যাল ছিল। মা-বাবা আমার কাজ দেখে সব সময়ে বলতেন যে, আমাকে পর্দায় দেখে তাঁদের খুব ভাল লাগে। সানির কাজ দেখার পরে আমারও সেই অনুভূতি হয়েছিল। মনে হয়েছিল, যেন আমার ছেলে ভাল কাজ করেছে!
প্র: ছোটবেলায় আপনার আর সানির মধ্যে কে বেশি দুষ্টু ছিল?
উ: মা বলেন আমি ছুপা রুস্তম। সানির দুষ্টুমি আর ওর গার্লফ্রেন্ডদের মা ধরে ফেলতেন। তাই ছোটবেলায় মা সব সময়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করতেন, আমি কেন কোনও কিছু করে ধরা পড়ি না (হাসি)!
প্র: এখনও গার্লফ্রেন্ডকে লুকিয়ে রেখেছেন কেন?
উ: গার্লফ্রেন্ড থাকলে তো লুকোবো। আর মায়ের থেকে কিছু লুকোনো যায় কি? প্রথমে যখন ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছিলাম মনে হতো, লিংক আপের খবর না হলে বড় স্টার হওয়া যায় না বা নাম করা যায় না!
প্র: অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন? ‘দোস্তানা টু’ হবে নাকি?
উ: আরে, আমরা দু’জনে মজা করে একটা ছবি তুলে পোস্ট করেছিলাম। তাতেই সকলে ‘দোস্তানা টু’ হচ্ছে বলে ধরে নিয়েছিল। অভিষেকের ‘গুরু’ রিলিজ়ের সময়ে আমি মিঠিভাই কলেজে পড়তাম। ছবিটা দেখার পরে এতটাই ভাবুক হয়ে পড়েছিলাম যে, এক ঘণ্টা ধরে পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরেছিলাম। পুরো রাস্তা মাথায় একটাই চিন্তা ঘুরছিল, কিছু একটা বড় করতে হবে। অভিষেক আগাগোড়া জেন্টলম্যান। ওর সঙ্গে কাজ করার মুহূর্তটা আমার কাছে ফ্যানবয় মোমেন্টের মতো ছিল। যদিও অভিষেক কোনও দিন সেটে সিনিয়রদের মতো ব্যবহার করেনি। তাই আমাদের সম্পর্ক বন্ধুর মতো।
প্র: অনুরাগ কাশ্যপের সঙ্গে আগেও কাজ করেছেন। লাভ স্টোরি করতে গিয়ে কি অন্য রকম কিছু বুঝলেন?
উ: অভিনেতা হিসেবে একটা জিনিস উপলব্ধি করেছি, দু’-তিন বছর অন্তর অনুরাগের সঙ্গে কাজ করা উচিত। ছবি করার পরে মনে হয় শরীরে যেন নতুন চামড়া তৈরি হয়েছে। অনুরাগের কাজের পদ্ধতি একদম আলাদা। আপনি সেটে গেলেন একদম তৈরি হয়ে, গিয়ে দেখলেন অনুরাগ সব কিছু বদলে দিয়েছেন। তাতে যে কাজটা হয়তো তিন ঘণ্টায় হওয়ার কথা ছিল, সেটা আধ ঘণ্টায় হয়ে গেল!
প্র: চুলে নীল রং করতে রাজি হয়ে গেলেন!
উ: চরিত্রের লুকের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারলে অভিনয়টা অনেক সহজ হয়ে যায়। আমার মনে আছে, এক দিন গাড়ি করে কোথায় যেন যাচ্ছিলাম। সেই সময়ে অনুরাগ আমাকে হোয়াটসঅ্যাপ করে একটি ছবি পাঠান। যেখানে এক জনের চুল পুরো নীল রঙের। আমি লিখলাম, এটা কী? অনুরাগ উত্তর দিলেন, ‘এটা তোর চুল।’ হেয়ার স্টাইলিস্ট আলিম হাকিম নানা রকম ভাবে আমার চুল নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করেছেন। বিভিন্ন ভাবে চুল কেটেছি। তার পর সেটে যখন আমি মেকআপ আর হেয়ার করতাম, তখন সবচেয়ে বেশি সময় আমার লাগত। আর তাপসী (পান্নু) আমাকে রোজ খেপাত যে, সেটে আমি তৈরি হতে সবচেয়ে বেশি সময় নিই। বলত, এই ফিল্মের হিরোইন তো তুই!
প্র: তাপসীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ দৃশ্য করতে অস্বস্তি হয়নি?
উ: ওর সঙ্গে আমার সম্পর্কটা একটু অন্য রকম। বাডি টাইপস। একে অপরকে পিঠ চাপড়ে কথা বলি। পঞ্জাবে যখন শুটিং করছিলাম তখন তো এ রকম হতো, আমরা হয়তো কুলচা-ছোলে খাচ্ছি, সেই সময়ে ডাক এল। কিসিং সিন করে এসে আবার খেতে শুরু করে দিতাম। আমার মনে হয়, কিসিং সিনের চেয়ে মারপিটের দৃশ্য করা বেশি কঠিন।
প্র: এত ব্যস্ততার মধ্যে নিজের জন্য সময় বার করতে পারেন?
উ: আমি হলাম যাকে বলে নিশাচর। সহজে ঘুম আসে না। তাই রাতে খাওয়া-দাওয়ার পরে আমি এক ঘণ্টা রাখি নিজের জন্য। তখন চেষ্টা করি, স্কুল-কলেজের যে সব বন্ধুবান্ধব বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে তাদের সঙ্গে কথা বলার। বন্ধুদের সঙ্গে কথা বললে মনটা ভরে যায়।