শ্রাবন্তীর সঙ্গে বিচ্ছেদ থেকে ছেলে ঝিনুকের প্রেম— আনন্দবাজার অনলাইনে অকপট রাজীব।
এক সময়ে তাঁর ঝুলিতে একের পর এক হিট ছবি— ‘দু’জনে’, ‘পাগলু’, ‘অমানুষ’, ‘অমানুষ ২’। ২০১৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল তাঁর পরিচালিত শেষ ছবি। তার পর কোথায় গেলেন পরিচালক রাজীব কুমার? শহর ছাড়িয়ে বেশ কিছুটা দূরেই দেখা পাওয়া গেল পরিচালকের। শট চলছে ধারাবাহিক ‘আলোর ঠিকানা’র। সেখানেই আনন্দবাজার অনলাইনের সঙ্গে দেখা হল এক সময়ের হিট পরিচালক রাজীবের।
প্রশ্ন: বড় পর্দার পরিচালনা ছেড়ে ধারাবাহিকের ফ্লোর কেন?
রাজীব: ছোট পর্দা দিয়েই তো এই ইন্ডাস্ট্রিতে আমার হাতেখড়ি। ‘দু’জনে’ তৈরির আগে আমি টেলিভিশনেই পরিচালনার কাজ করতাম। অবশ্য মাঝে প্রচুর ছবি করেছি। যেমন ‘পাগলু’, ‘অমানুষ’-সহ কত কত ছবি। এখন করোনার পরিস্থিতির পর থেকে একটু তো সমস্যা আছেই। আমরা সিঙ্গল স্ক্রিনের দর্শকের জন্য প্রধানত ছবি তৈরি করতাম। এখন সেই ছবির বাজারটাই কম। দেব, জিৎ, অঙ্কুশরাও তো এখন প্রযোজক। ওরা এখন অন্য ধরনের কাজের দিকে ঝুঁকেছে।
প্রশ্ন: দেব, জিতের প্রযোজনা সংস্থা থেকে আপনাকে ছবি পরিচালনা করার জন্য ডাকেনি?
রাজীব: হ্যাঁ, ওদের সঙ্গে কথা হয়। কিন্তু এই মুহূর্তে ওরা অন্য রকম ছবি তৈরি করছে। বিশেষত দেব যেমন ছবি বানাচ্ছে, সেই ধরনের ছবি তৈরিতে আমি পারদর্শী নয় বলেই আমার ধারণা। তবে এখনও আমার মনে হয়, ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচাতে গেলে মশলাদার বাণিজ্যিক ছবি তৈরি করতে হবে। ফাইট মাস্টাররা কিংবা নাচের লোকজনদের বেশ ক্ষতি হচ্ছে।
প্রশ্ন: অনেক পরিচালকের মতে, এখন আর তামিল, তেলুগুর রিমেক মশলাদার ছবি চলবে না। সেখানে আপনি বলছেন তেমন ছবিই আবারও তৈরি করতে হবে। আপনার মনে হয় দর্শক আর সেই ছবি দেখতে চাইবেন?
রাজীব: দেখুন দু’ধরনের দর্শক আছে আমাদের। একটা অংশ শিক্ষিত। যাঁরা একটু ভাবতে ভালবাসেন। আবার একটা অংশ শুধুই বিনোদনের জন্য ছবি দেখেন। আর সেই ধরনের দর্শকের সংখ্যাই আমার বেশি বলে মনে হয়। তা ছাড়া শুধু সামাজিক বার্তাবাহী ছবি দেখতে দেখতেও একটা সময় একঘেয়েমি এসে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
প্রশ্ন: শ্রাবন্তীর সঙ্গে বিচ্ছেদ কি আপনার কেরিয়ারে অনেকটা প্রভাব ফেলেছে বলে আপনার মনে হয়?
রাজীব: কাজের ক্ষেত্রে কিন্তু খুব প্রভাব পড়েনি। মৌখিক ছাড়াছাড়ির পরও আমরা ‘বিন্দাস’ করেছি। টালিগঞ্জের বাকি নায়িকাদের তুলনায় শ্রাবন্তী অনেকটা এগিয়ে। আমি ওর সঙ্গে আবারও কাজ করতে চাই। কোনও সমস্যাই নেই।
প্রশ্ন: আপনার ছেলে ঝিনুক তো এখন বড় হয়ে গিয়েছে। পরিচালকের সহকারী হিসাবে কাজ করছেন। আপনার সঙ্গে এই বিষয়ে কথা হয়েছে? ছেলে-বাবার সম্পর্ক কেমন?
রাজীব: অবশ্যই ভাল সম্পর্ক। শনি-রবিবারের ছুটিতে যখন ও আমার কাছে আসে সিনেমা নিয়ে আলোচনা হয়। বলেছি ধারাবাহিকে আমার সঙ্গে কাজ করিস না, কারণ সারা দিনের পরিশ্রম তুই নিতে পারবি না। আমি ছবি তৈরি করলে আমাকে অ্যাসিস্ট করিস।
প্রশ্ন: ঝিনুক ও তাঁর ‘বান্ধবী’-কে নিয়েও তো তুমুল চর্চা হয়। কী বলবেন?
রাজীব: হ্যাঁ, দেখেছি চর্চা হয়। ওদের ব্যক্তিগত বিষয় আমি কী বলি! তা ছাড়া প্রেমের বিষয় নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলার সাহসও নেই ঝিনুকের। ওর মা আছে, বুঝবে এই সব।
প্রশ্ন: তা হলে বড় পর্দায় রাজীব কুমারের ছবি আসছে কবে?
রাজীব: চিত্রনাট্য চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। এন.কে সলিল লিখেছেন। সুরিন্দর ফিল্মসের প্রযোজনায়ই ছবি বানাব। থাকবেন দু’জন নায়ক এবং নায়িকা। তবে কারও নাম এখন বলা যাবে না। তা ক্রমশ প্রকাশ্য।
প্রশ্ন: শ্রাবন্তী তো নিজের জীবনে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছেন। আপনি নতুন কোনও সম্পর্কের কথা ভাবলেন না?
রাজীব: শট রেডি। এই উত্তর পরে দেব।