সুশীল নাকি রিস্কি, কোনটা আসল সিদ্ধার্থ ?

সিদ্ধার্থ মলহোত্রের নামের সঙ্গে সুন্দর, সুশীল আর রিস্কি উপাধিগুলো কতটা খাপ খায়, বোঝার চেষ্টা করল আনন্দ প্লাস।সিদ্ধার্থ মলহোত্রের নামের সঙ্গে সুন্দর, সুশীল আর রিস্কি উপাধিগুলো কতটা খাপ খায়, বোঝার চেষ্টা করল আনন্দ প্লাস।

Advertisement

শ্রাবন্তী চক্রবর্তী

মুম্বই শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৭ ০১:০১
Share:

সিদ্ধার্থ মলহোত্র।

প্র: ছবির ট্যাগলাইন ‘সুন্দর সুশীল রিস্কি’র সঙ্গে গল্পের মিল আদৌ কতটা?

Advertisement

উ: ছবিতে আমার ডাবল রোল। গৌরব এমন একটা ছেলে যে, বিয়ে করে সংসারি হতে চায়। তাই তার নামের সঙ্গে সুশীল আর সুন্দর মানানসই। আর অন্য দিকে ঋষি ঝুঁকি নিতে ভালবাসে। অ্যাকশনে তুখোড়। প্রথমে ছবির নাম নিয়ে অনেক চিন্তা ভাবনা করা হয়েছিল। একবার ‘ব্যাং ব্যাং টু’ করারও কথা হয়েছিল। কিন্তু শেষমেশ ‘আ জেন্টলম্যান’-ই ঠিক হয়।

প্র: সিদ্ধার্থ আপনার নিজের জীবনের সঙ্গে ট্যাগলাইনের কোন শব্দটা মানানসই?

Advertisement

উ: আমি সুন্দর কিনা তো জানি না (হাসি)! তবে ঝুঁকি অনেক নিয়েছি। দিল্লি থেকে মুম্বই এসে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে স্ট্রাগল করা। প্রথমে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলাম। প্রথম ছবি সই করা...সব কিছুর মধ্যেই অনিশ্চয়তা ছিল। তার আগে আমি ভীষণ গতানুগতিক জীবন যাপন করে এসেছি। তাই হঠাৎ কেরিয়ারের জন্য ওই সিদ্ধান্তগুলো নেওয়াটা রিস্কি ছিল বইকি।

প্র: ছাত্র থাকার সময়ে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ কোনটা করেছিলেন?

উ: এই রে! ক্লাস টুয়েলভে পড়ার সময় গার্লফ্রেন্ডের (নামটা আর এখন বলছি না) বাড়ি গিয়েছিলাম। খুব দেখতে ইচ্ছে করছিল। একদম চুপিসারে যাই। বাগানের পিছন দিক দিয়ে ওর বাড়িতে ঢুকছিলাম। হঠাৎই দেখি সামনে গার্লফ্রেন্ডের ঠাকুমা। তখন আমি কোনও মতে পালাতে পারলে বাঁচি। প্রেম উবে গিয়েছে। ভাগ্যিস উনি চোখে ভাল দেখতে পেতেন না। তাই ধরা পড়িনি। তবে ওই রকম ঝুঁকি জীবনে আর কখনও নিইনি।

প্র: ছবিতে জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজের সঙ্গে অন্তরঙ্গ দৃশ্য করতে গিয়ে কোনও রকম অস্বস্তিতে ভুগেছিলেন?

উ: জ্যাকলিন একজন পারফেক্ট কো-স্টার। এর আগে আমি এমন কোনও ছবি করিনি যেখানে স্কিন দেখাতে হয়েছে। বা ট্যাটু করিয়েছি। ‘আ জেন্টলম্যান’ এমন একটা ছবি যেখানে আমি এই সব কিছু করতে পেরেছি। আর জ্যাকলিনের সঙ্গে আমার অন্তরঙ্গ মুহূর্তগুলো খুব স্বাভাবিক ভাবেই ছবিতে এসেছে। নান্দনিকতা বজায় রেখেই আমরা শ্যুট করেছি।

প্র: এই রকম দৃশ্য শ্যুট করার সময়ে অভিনেতা হিসেবে দায়িত্ব কি একটু বেড়ে যায়?

উ: নিঃসন্দেহে। সেটে সব সময়ে খেয়াল রাখতাম, কোন অ্যাঙ্গেল থেকে শট নিয়ে দৃশ্যটা আরও সুন্দর দেখতে লাগবে। সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার সময়েই এগুলো শিখেছিলাম। এখন অভিনেতা হয়েও কাজে লাগাচ্ছি। তবে ঘনিষ্ঠ দৃশ্য করার অভিজ্ঞতা এই প্রথম। একটা জিনিস বলব, জ্যাকলিন এ ক্ষেত্রে সেটে আমার চেয়ে অনেক বেশি সহজ ছিল (হাসি)!

আরও পড়ুন: চ্যাম্প ফ্লপ হলে ককপিট হতো না

প্র: ছবিটা করতে গিয়ে জ্যাকলিন নাকি আপনার ভাল বন্ধু হয়ে গিয়েছেন?

উ: জ্যাকলিনের সঙ্গে বন্ধুত্ব করাটা বেশ মুশকিলের। ওর পার্সোনালিটি অন্য ধরনের। সবচেয়ে বড় গুণ হল, কখনও স্ট্রেস নেয় না। নিলেও তার ছাপ সেটে প়়ড়ত না। সব সময়ে হাসি-মজা করতে ভালবাসে। আমি যেমন আবার অল্পতেই স্ট্রেসড হয়ে পড়ি। জ্যাকলিনের থেকে এটা শেখার। ও সেল্ফ মেড অভিনেত্রী। এই গুণকে আমি খুব শ্রদ্ধা করি। সম্প্রতি আমাকে ঘোড়া চালানো শিখতে হয়েছে। জ্যাকলিনও শিখছিল। ও তখন আমাকে খুব সাহায্য করেছে।

প্র: আপনার ফিজিক্যাল পার্সোনালিটিও বদলে গিয়েছে। অনেক দিন ধরেই কি ইমেজ বদলের পরিকল্পনা করছিলেন?

উ: আমি এখন এমন ছবিতে কাজ করছি, যেখানে বডি দেখানোর প্রয়োজন আছে। আর তার জন্যই এই ট্রান্সফরমেশন। ক্যামেরার সামনে আমি আমার বেস্ট বডিই দেখাব। অ্যাকশন ফিল্ম তখনই ভাল লাগে, যখন হিরোর বডি ভাল হয়। ‘ব্রাদার্স’ ছবিতে অ্যাকশনের জন্য ভারী চেহারা তৈরি করেছিলাম। এখন রোগা হলেও পেশীবহুল চেহারা। আর শরীরের সঙ্গে মন কিন্তু কানেক্টেড। চেহারা ভাল থাকলে, মন ভাল থাকে।

প্র: আপনার শেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘বার বার দেখো’ চলেনি। ব্যর্থতা কী ভাবে সামলান?

উ: ছবির সঙ্গে দর্শক কানেক্ট করতে পারেননি। কিন্তু আমার কাছে ছবি ফ্লপ হওয়া অনেকটা প্রথম বার সাইকেল চালানোর মতো। পড়ে যাব ঠিকই, কিন্তু আবার উঠব। একটা ফিল্ম ফ্লপ করলে পরের শুক্রবারের দিকে মন দেওয়া উচিত।

প্র: অভিনেতাদের জীবনে স্ট্রেস একটা বড় সমস্যা। কী ভাবে এর সঙ্গে লড়াই করেন?

উ: নিজেকে সব সময় ব্যস্ত রাখ। এমন একটা কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাক, যেটা তোমার করতে ভাল লাগে। ছোট থেকেই মা-বাবার দেখা উচিত যে, বাচ্চা যেন স্বতন্ত্র হয়। নিজের কাজ নিজে করতে পারে। একাকিত্ব যেন কোনও ভাবে তাকে বশ না করে। আমি নিজে একা থাকি। ট্রাভেলিং থেকে আরম্ভ করে সব কিছু একা করতে ভালবাসি। আমাদের সকলের এমন কোনও কাজ করা উচিত যা রোজকার রুটিনের বাইরে এবং ভাল লাগার। যেমন আমি সময় পেলেই আমার কুকুরটাকে নিয়ে বাগানে গিয়ে খেলি। বন্ধুদের সঙ্গে কার্ড খেলি। এ ভাবেই নিজেকে হালকা রাখি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement