Entertainment News

বলিউডে একের পর এক হিট গান গেয়ে চলেছেন কলকাতার এই মেয়ে!

'রবতা' ছবির টাইটেল ট্র্যাক গেয়ে বলিউডকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। শুক্রবার মুক্তি পেল সারা আলি খানের ডেবিউ ছবি কেদারনাথ। সে ছবিতেও অরিজিত সিংহের সঙ্গে 'কাফিরানা' গানটিতে জমিয়ে দিয়েছেন কলকাতার লেক গার্ডেন্সের মেয়ে নিখিতা গাঁধী। চেন্নাইতে ডেন্টিস্ট্রি পড়তে যাওয়া থেকে বলিউডে শাহরুখ-রণবীরের ছবিতে গান গাওয়া— সব কিছু নিয়েই আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গে খোলামেলা আড্ডা দিলেন নিখিতা।'রবতা' ছবির টাইটেল ট্র্যাক গেয়ে বলিউডকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। শুক্রবার মুক্তি পেল সারা আলি খানের ডেবিউ ছবি কেদারনাথ। সে ছবিতেও অরিজিত সিংহের সঙ্গে 'কাফিরানা' গানটিতে জমিয়ে দিয়েছেন কলকাতার লেক গার্ডেন্সের মেয়ে নিখিতা গাঁধী। চেন্নাইতে ডেন্টিস্ট্রি পড়তে যাওয়া থেকে বলিউডে শাহরুখ-রণবীরের ছবিতে গান গাওয়া— সব কিছু নিয়েই আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গ খোলামেলা আড্ডা দিলেন নিখিতা।

Advertisement

সায়ন্তন মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৩:৪০
Share:

কলকাতা থেকে চেন্নাই গিয়েছিলেন ডেন্টিস্ট হতে। ডেন্টিস্ট তো হলেনই। সঙ্গে গায়িকাও হয়ে গেলেন নিখিতা গাঁধী।

নজরুল গীতির অ্যালবাম, একক অ্যালবাম, আবার একই সঙ্গে তাল মিলিয়ে হিন্দি, বাংলা এবং তামিল ছবিতে গান। এত সব কিছু সামলান কী ভাবে?

Advertisement

সামলাতেই হবে। আসল ব্যাপারটা হল, এত কিছু করার সুযোগটা যখন পাচ্ছি, না করা যায় নাকি?

কিন্তু এই যে কখনও ‘ধ্যানচাঁদ’ (মনমর্জিয়াঁ)-এর মতো র‌্যাপ,তো কখনও আবার ‘মিঠে আলো’ (ককপিট), ঘর (জব হ্যারি মেট সেজল), কাফিরানা (কেদারনাথ) মতো সফ্ট রোম্যান্টিক, আবার ‘ভোলে বাবা’ (ভিলেন)-র মতো পার্টি সং, ‘বাতে গ্যাহেরি হ্যায়’ (দ্য বিগ বং কানেকশন) গানটা আবার জ্যাজ়, নজরুল গীতি তো রয়েইছে। একটা মানুষ এত রকমের গান গায় কী ভাবে?

Advertisement

আমার আসলে নিজেকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে খুব ভাল লাগে। গায়ক-গায়িকারা কিছুটা অভিনেতাদের মতোই।অভিনেতারা যেমন নানান চরিত্র ফুটিয়ে তোলেন, আমরা সেই সব চরিত্রের জন্যই গান গাই। আমি ছোটবেলা থেকে হিন্দুস্তানি ক্লাসিকাল শিখেছি। পরে জ্যাজ়, আরএনবি সবই শুনেছি। তা-ই সব রকমরে গান গাইতে আমার খুব একটা অসুবিধা হয় না।

যাতেই হাত দিচ্ছেন তা-ই তো সোনা হয়ে যাচ্ছে।‘কাফিরানা’ও হিট। আবার ‘বাতে গহেরি হ্যায়’ গানটারও প্রচুর মানুষ প্রশংসা করছেন। কেমন লাগছে?

খুব ভাল লাগছে। আর এ সব কার না ভাল লাগে। কিন্তু এত প্রশংসায় আমি বয়ে যেতে চাই না।

এই জায়গাটায় পৌঁছতে কতটা স্ট্রাগল করতে হয়েছে?

স্ট্রাগল ঠিক বলব না। তবে কঠিন পরিশ্রম করতে হয়েছে। আমি তো গায়িকা হব কোনও দিন ভাবিনি।ডেন্টিস্ট হব বলে পড়াশোনা করতে চেন্নাই এসেছিলাম।তখনই পড়াশোনার পাশাপাশি গানটাকেও চালিয়ে যেতে এ আর (এ আর রহমান) স্যারের ইনস্টিটিউটে ভর্তি হই। রহমান স্যারই আমাকে এই দুনিয়াটার সঙ্গে পরিচয় করান। গানই যে আমার কাপ অব টি, সেটা এ আর রহমান আমার সামনে পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন। আর তার জন্য পরিশ্রমও করতে হয়েছে প্রচুর। সারাদিন কলেজ করে এসে আবার সারা রাত রহমান স্যারের সঙ্গে রিহার্স্যাল করতে হত।

এ আর রহমান ইনস্টিটিউটের সন্ধান কে দিলেন?

উষা (উষা উথ্থুপ) আন্টি আমার বাবাকে বলেছিলেন, নিখিতা গানটা কেন মাঝপথে ছেড়ে দিল।ও তো চেন্নাইয়ে আছে। ওঁকে এ আর রহমানের ইনস্টিটিউটে ভর্তি করে দাও।

আর মাত্র ২৭ বছর বয়সেই এ আর রহমানের সুরে সঞ্জু ছবিতে ‘মুঝে চাঁদ পে লে চলে’ গানটাও গেয়ে ফেললেন?

২৫বছর বয়সেই আমি মণি রত্নম পরিচালিত তামিল ছবি ‘ওকে কানমানি’-তে রহমান স্যারের সুরে গান গেয়ে ফেলেছিলাম। তবে সত্যিই মাঝে মাঝে এই সুবর্ণ সুযোগগুলোর কথা ভাবলে নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হয়।

নিজেই গিটার বাজিয়ে ‘রবতা’ ছবির টাইটেল ট্র্যাক গাইছেন নিখিতা গাঁধী।

‘রবতা’ ছবির টাইটেল ট্র্যাক, অর্থাত্ প্রীতমের সুরে আপনার প্রথম বলিউড গানের অফার পেলেন কী ভাবে?

প্রীতমদার টিমে আমার কয়েকজন বন্ধু আছে। এই গানটা আগে এক বার ‘এজেন্ট বিনোদ’ ছবিতে গাওয়া হয়ে গিয়েছিল। তাই প্রীতমদা একটা নতুন ভয়েস খুঁজছিলেন। তখন আমাকে ওঁরা ডাকে স্ক্র্যাচ গাওয়ার জন্য। আমিও গেয়ে ফেলি। কিন্তু প্রীতমদা ফাইনাল করেনি। অনেককে দিয়েই গানটা গাইয়েছিলেন উনি। চেন্নাই চলে আসার পর হঠাতই এক দিন ফোন আসে। আর ফাইনালি গানটা গাওয়ার জন্য মুম্বই চলে আসি।

আজকাল এই রিয়্যালিটি শো থেকে এত এত গায়ক উঠে আসছেন, তাঁরা কি সব হারিয়ে যাচ্ছেন?

আমার তো মনে হয়, তার এক মাত্র কারণ স্টারডম। এ তো এক নেশা। কত কাঠখড় পুড়িয়ে এক জন গায়ককে যেখানে প্রতিষ্ঠিত হতে হয়, সেখানে একটা রিয়্যালিটি শো মাত্র তিন মাসেই প্রতিযোগীদের সেলিব্রিটি করে দিচ্ছে। তবে বিষয়টা কিছুটা ব্যক্তি বিশেষের উপরেও নির্ভর করে। শ্রেয়া ঘোষালও তো রিয়্যালিটি শো থেকেই উঠে এসেছেন। নিজেকে ধরে রাখাটাও একটা শিল্পীর কাজ।

আরও পড়ুন: বিয়ের পরই কেরিয়ার নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিলেন দীপিকা?

এই যে আপনি বাংলা আর হিন্দি দুটো ইন্ডাস্ট্রিতেই এক সঙ্গে গাইছেন, আদৌ কি কিছু তফাত বুঝতে পারেন?

তফাত আছে কি না সত্যিই বুঝতে পারি না। আসলে বলিউডে এখন বাঙালি সুরকার আর গায়কদের ছড়াছড়ি। আর বেশির ভাগ বাংলা গানের রেকর্ডিং এখন মুম্বইতে হয়।

শো শেষে গায়ক আরমান মালিকের সঙ্গে নিখিতা

প্রীতম, অমিত ত্রিবেদি, এ আর রহমান, সচিন-জিগর, রঘু দিক্ষিত-দের সুরে ইতিমধ্যেই গান গেয়ে ফেলেছেন। আর কাদের সুরে গান গাওয়ার ইচ্ছে আছে?

বিশাল ভরদ্বাজ, বিশাল-শেখর, সেলিম-সুলেমান, আরও অনেকে আছেন।

যদি আপনার গানগুলোর রেটিং দিতে বলি?

প্রথমেই রবতা (রবতা)। পরেরটা কাফিরানা (কেদারনাথ)। তিন নম্বরে ঘর (যব হ্যারি মেট সেজল), চারে মুঝে চাঁদ পে লে চলো (সঞ্জু), আর যদি অনুমতি দেন, তাহলে পাঁচ নম্বরে তিনটে গান রাখতে চাই। আও কভি হাভেলি পে (স্ত্রী), উল্লু কা পাঠ্ঠা (জগ্গা জাসুস), আর ধ্যানচাঁদ (মনমর্জিয়াঁ)।

(ইতিহাসের পাতায় আজকের তারিখ, দেখতে ক্লিক করুন — ফিরে দেখা এই দিন।)

যে সব সঙ্গীত পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে রাগী কে?

কেউ রাগী নন। অমিত ত্রিবেদি ভীষণ কুল। তবে রহমান স্যারের মধ্যে একটা গুরুগম্ভীর ব্যাপার আছে।স্যারের সামনে গাইতে গেলে একটু বুক ধুকপুক করে বৈকি! আর প্রীতমদা তো রেকর্ডিংয়ের সময় স্টুডিয়োতেই থাকেন না।কলকাতায় দেবজ্যোতি মিশ্রর সঙ্গে কাজ করতে খুব মজা লাগে। দেবুদার সঙ্গে ‘মেঘনাদ বধ রহস্য’, ‘উড়নচণ্ডী’, ‘ভবিষ্যতের ভূত’ তিনটে ছবিতে গান গেয়ে ফেলেছি। কলকাতায় এলেই আমি প্রথমে দেবুদার সঙ্গেদেখা করতে যাই।

প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার লিপে গান গাওয়ার জন্য দিন গুনছেন নিখিতা।

এখনও পর্যন্ত বেস্ট কমপ্লিমেন্ট কার থেকে পেলেন?

অনেকের থেকেই পাচ্ছি।‘পদ্মাবত’-এর সেটে আমার মামা কাজ করত। দীপিকা আমার মামাকে বলেছিল যে, নিখিতার গান আমার খুব ভাল লাগে। সোনাক্ষি সিংহ টুইট করে আমার গানের প্রশংসা করেছিলেন।কমপ্লিমেন্ট বলে কথা, সবই বেস্ট।

আরও পড়ুন: প্রিয়ঙ্কাকে হারিয়ে এশিয়ার সেক্সিয়েস্ট নারীর তালিকায় প্রথম কে

বলিউডে এই মুহূর্তে নিজের ছাড়া আর কার গান ভাল লাগে?

আমার একটু অন্য ধরনের ভয়েস পছন্দ। রেখা ভরদ্বাজ, শিল্পা রাও, শ্রেয়া ঘোষাল-দের গান আমি শুনতে খুব ভালবাসি।

যৌন হেনস্থা নিয়ে সোনা মহাপাত্র মুখ খোলার পর কি বলিউডে নিজেকে একজন গায়িকা হিসেবে সুরক্ষিত মনে হয়?

অনেকটাই সুরক্ষিত মনে হয়। যৌন হেনস্থা নিয়ে যাঁরা মুখ খুলেছেন তাঁদের স্যালুট। কিন্তু মুশকিলটা হল, এটাকে খারাপ ভাবেও কাজে লাগাচ্ছেন অনেকে। যেটা খুবই খারাপ।

অনুষ্কা, দীপিকাদের পর কার লিপে গান গাইতে খুব ইচ্ছে করে?

প্রিয়ঙ্কা চোপড়া। প্রিয়ঙ্কার ব্যক্তিত্ব আমার খুব পছন্দের। আর আমার মনে হয় ওঁর গলার সঙ্গে আমার গলাও খুব ম্যাচ করে।

(সেলেব্রিটি ইন্টারভিউ, সেলেব্রিটিদের লাভস্টোরি, তারকাদের বিয়ে, তারকাদের জন্মদিন থেকে স্টার কিডসদের খবর - সমস্ত সেলেব্রিটি গসিপ পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদন বিভাগে।)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement