প্র: অভিনেতা হতে চেয়েছিলেন বলে বাবা তিন বছর আপনার সঙ্গে কথা বলেননি। এখন তিনি খুশি তো?
উ: বাবা আর্মিতে ছিলেন। চেয়েছিলেন, আমিও আর্মিতে যাই। তাই আমার অভিনেতা হওয়ার ইচ্ছে শুনে হতাশ হয়েছিলেন। ‘পল্টন’-এর শুটিংয়ে প্রথম দিন যখন ইউনিফর্ম পরে আয়নার সামনে দাঁড়ালাম, বাবার মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠেছিল। তক্ষুনি বাবাকে ভিডিয়ো কল করেছিলাম। ইউনিফর্মে আমাকে দেখে বাবা ভীষণ খুশি হয়েছিলেন।
প্র: জে পি দত্তর কোন ছবি আপনার মনে সবচেয়ে বেশি দাগ কেটেছে আর কেন?
উ: যখন ‘এলওসি কার্গিল’ মুক্তি পেয়েছিল, তখন বাবার পোস্টিং ছিল শ্রীনগরে। বাবা আর্মিতে যত দিন ছিলেন, সব সময়ে পরিবারকে নিজের কাছে রাখতেন। প্রত্যেক দিন বাবা যখন গাড়ি নিয়ে বেরোতেন, তখন চার দিক থেকে শুধু গোলা-বারুদের আওয়াজ আর গন্ধ। স্কুলে গিয়েও আমার মন টিকত না। মনে হতো, কখন বিকেল হবে, কখন বাড়ি গিয়ে বাবাকে দেখতে পাব।
প্র: আপনি কি মনে করেন, এই ইন্ডাস্ট্রিতে যুদ্ধকেন্দ্রিক ছবি কম তৈরি হয়?
উ: দশ বছর পরে আর্মি অফিসারদের জীবনের উপরে ছবি বানানো হচ্ছে। আমার মতে, এটা খুবই লজ্জার বিষয়। সাধারণত এক জন অভিনেতা তাঁর কেরিয়ারে এক বারই আর্মি অফিসারের চরিত্র করেন। আমি কিন্তু সুযোগ পেলে আবারও করব। যখনই খবর পাই, কোনও নির্মাতা-নির্দেশক যুদ্ধের ছবি বানাচ্ছেন, আমি আমার ম্যানেজারকে বলি খোঁজ নিতে। সুপারস্টারদের কাছেও আর্জি, তাঁরা যেন দু’তিন বছর অন্তর একটা করে যুদ্ধের ছবি করেন।
প্র: এত ব্যস্ততার মধ্যে দেবিনাকে (স্ত্রী) সময় দেন কী করে?
উ: কাজ আর পরিবার আমার জীবন। যদি মুম্বইয়ে থাকি, তা হলে সাতটা বাজলেই আমার মন বাড়ি-বাড়ি করে। সেখানে আমাদের দু’টি আদরের পোষ্য আছে। ওরা আমাদের প্রাণ! আমার মনে হয়, যাদের আমরা ভালবাসি, তাদের জন্য আমরা সময় বার করে নিই। আগে আমি আর দেবিনা যখন টেলিভিশনে কাজ করতাম, প্যাক আপ হয়ে যাওয়ার পরে হাইওয়েতে একটা নির্দিষ্ট সময়ে দেখা করতাম। ওখান থেকে একটা গাড়ি করে আমরা বাড়ি ফিরতাম। কিছুক্ষণের জন্য হলেও দিনে একসঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ ছাড়তাম না। আমরা একে অন্যের বেস্ট ফ্রেন্ড।
প্র: টেলিভিশনে সুপারস্টার ছিলেন। ছবিতে আসার পরে টিভিকে একেবারে ভুলে গেলেন?
উ: একদমই নয়। আমি আজ যেখানে পৌঁছেছি, সব টেলিভিশনেরই কৃতিত্ব। শুধু ভারতেই নয়, বিদেশেও আমার প্রচুর অনুরাগী। ইন্দোনেশিয়ায় গেলে আমার জামাকাপড় ছিঁড়ে যায়। দক্ষিণ আফ্রিকায় গেলে রাস্তায় বেরোতে পারি না। যখন কোনও ছবির ঘোষণা হয়, সোশ্যাল মিডিয়ায় আমার ফ্যানরা অনেক পোস্ট করে। কিন্তু এখন আমার লক্ষ্য অন্য। একটাই স্বপ্ন, সিনেমায় সুপারস্টার হওয়া। এর জন্য আমি খুব পরিশ্রম করছি। আমি জানি, সে দিন আর বেশি দূরে নেই। টেলিভিশনে আমি সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পেতাম। এটা সত্যি, ছবিতে আমি সেই অঙ্কের টাকা পাই না। অবশ্য টাকার জন্য কাজ করিও না। দেবিনা টেলিভিশনে কাজ করে আমাকে বরাবর সাহায্য করেছে। আমাদের ইনভেস্টমেন্ট আছে। এ ছাড়া আমি মাঝে মাঝে ফিতে কাটতে চলে যাই (হাসতে হাসতে)।
প্র: শোনা যাচ্ছিল, আপনি আর দেবিনা ‘বিগ বস’-এ আসছেন। সত্যি কি?
উ: করছি না। অফার এসেছিল। সলমন খানের জবরদস্ত অনুরাগী আমি। কিন্তু এই মুহূর্তে নয়।
প্র: নিজের লুক নিয়ে আপনি সব সময়ে এক্সপেরিমেন্ট করেন। কোনও বিশেষ কারণ?
উ: এই ছবির জন্য চুল একদম ছোট করতে হয়েছিল। তাই এখন বড় চুল রাখছি। আমি সব সময়ে লুক বদলাতে পছন্দ করি। বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ড যদি রোজ একই জামাকাপড় পরে, অন্য জন বোর হয়ে যাবে না? আমার ফ্যানরা আমার গার্লফ্রেন্ডস (হাসি)।
প্র: আপনি আর দেবিনা সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন?
উ: আমরা ঠিক করেছি, যখন মা-বাবা হব, তখন যেন বাচ্চাদের সব সুযোগ-সুবিধা দিতে পারি। আমার বাবা আর্মিতে এক জন সাধারণ সেনা ছিলেন। আমাদের খাওয়া ও পরার কোনও দিন অসুবিধে হয়নি। কিন্তু বিনোদন কিছু ছিল না বললেই চলে। মুম্বইয়ে এসে আমি প্রথম রেস্তরাঁয় যাই।
প্র: বাংলা ছবিতে মনমতো চরিত্র পেলে করবেন?
উ: নিশ্চয়ই করব। বাংলা ছবি এখন খুব ভাল হচ্ছে। তা ছাড়া দেবিনার সঙ্গে বিয়ের পরে আমি তো কলকাতার জামাই। আমি বিহারের। তাই বাংলার সঙ্গে ভাল কানেক্ট করতে পারি।