Celebrity Interview

আমি প্রতিযোগিতায় ভয় পাই না, কারণ আর কিছু হারানোর নেই আমার: দেব

পুজোয় বাংলা এবং হিন্দিতে মুক্তি পাচ্ছে দেবের পুজোর ছবি ‘বাঘা যতীন’। প্রচারের ফাঁকে আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নের মুখে প্রযোজক-অভিনেতা দেব।

Advertisement

উৎসা হাজরা

শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:২২
Share:
Exclusive interview of Dev on his upcoming movie Bagha Jatin

দেব। ছবি: সংগৃহীত।

ছবিমুক্তির দিন যত ঘনিয়ে আসে তিনি নাকি স্নান-খাওয়া সব কিছু ভুলে যান। দিনে হয়তো খুব বেশি হলে ৪ ঘণ্টা ঘুমোন। খাওয়ার সময় থাকে না। সারা দিন ভাবেন কী করে দর্শকের কাছে ছবিটি পৌঁছে দেওয়া যায়। অভিনেতা থেকে প্রযোজক হওয়ার পর অনেক রকমের পরিবর্তন এসেছে দেবের মধ্যে। তাঁর চারপাশে যাঁরা থাকেন, তাঁরা যেন তাই বেশিই চিন্তিত। তাঁদের একটাই বুলি, “দাদা ঠিক করে খাওয়াদাওয়া করছে না।” কেরিয়ারের বহু চড়াই-উতরাইয়ের পরেও এই একাগ্রতার নেপথ্যে কোন রহস্য? পুজোর ছবি ‘বাঘা যতীন’ নিয়ে গল্পের ফাঁকে উঠে এল নানা প্রশ্ন। শান্ত ভাবে সব উত্তর দিলেন নায়ক।

Advertisement

প্রশ্ন: অফিসের সবাই তো চিন্তিত আপনার স্বাস্থ্য নিয়ে। আপনি ঠিক সময় খাওয়াদাওয়া করছেন না?

দেব: ওদের সবাইকে বলব, ওরা যে দিন প্রযোজক হয়ে যাবে সে দিন বুঝবে কেন এমন করছি। আর ‘বাঘা যতীন’ এমন একটা ছবি যা জীবনে বার বার আসবে না। তাই সব রকম ভাবে দর্শকের মনে গেঁথে দিতে চাই। এখন যদি একটু খেটে নিই, মানুষ ঠিক ভালবাসবে। এখন একটু বেশি পরিশ্রম হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু এটাই তো মজা। পুজো কেটে যাক। ‘প্রধান’-এর শুটিং শেষ হোক। তার পর একটু বিশ্রাম নেব। এখন না।

Advertisement
Exclusive interview of Dev on his upcoming movie Bagha Jatin

‘বাঘা যতীন’ ছবির একটি দৃশ্যে দেব। ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: ‘বাঘা যতীন’-কে পুজোর ছবি হিসাবে বাছলেন কেন?

দেব: পুজোর সময় দর্শক সিনেমা দেখতে ভালবাসেন। এই সময়টাই ধরতে চাইছিলাম। অনেক জন বাইরে থেকে আসেন। তাই এই সময়টা বেছে নিয়েছি। যাঁদের জন্য আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছে, এই সময় আমরা এ ভাবে পুজো উপভোগ করছি, তাই তাঁদের কথা কেন ভাবব না? তাঁদের গল্প বলার জন্য যদিও আলাদা কোনও সময়ের প্রয়োজন নেই। মানুষ ইতিহাস ভালবাসেন।

প্রশ্ন: আপনার ইতিহাস নিয়ে আগ্রহ আছে?

দেব: হ্যাঁ, আমি ইতিহাস নিয়ে ভীষণ আগ্রহী। যে কোনও দেশ, শহরের ইতিহাস আমায় ভীষণ টানে। আমি তো বিশ্বের বিভিন্ন শহরে ঘুরতেও যাই। সেই দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি সেই সব কিছু নিয়ে রীতিমতো পড়াশোনা করে যাই। এই আগ্রহ কিন্তু আমার বরাবরের।

‘বাঘা যতীন’ ছবিতে দেব। ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: একটা ছবির শুটিং চলে তো আপনার অন্য ছবির প্রচার শুরু হয়ে যায়, কখনও একঘেঁয়েমি লাগে না?

দেব: এই বয়সটা তো আরাম করার নয়। এটা এমন একটা সময় যেখানে একটা ছবিকে হিট করানো খুব কঠিন। মানুষকে হলে এনে বসিয়ে রাখা শক্ত। ব্যোমকেশের সময় এক ভাবে কাজ করেছি। এই গল্পের ক্ষেত্রে অন্য ভাবে করছি। প্রত্যেকটা বিষয় আলাদা। তাই ক্লান্ত, একঘেঁয়েমির কোনও জায়গা নেই। সময় খুব কঠিন। ভাল সময় কখন হাত থেকে বেরিয়ে বোঝা খুব কঠিন।

প্রশ্ন: ব্যোমকেশ নিয়ে সমালোচনা হয়েছিল। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করছেন। এখন বক্স অফিস দেখে ছবি তৈরি করেন, না কি গল্পই আপনার পাখির চোখ?

দেব: সমালোচনা তো হবেই। ভাল গল্প বলাই আমাদের মূল লক্ষ্য। সব ছবি ব্লকবাস্টার হবে না সেটা আমিও জানি। তা কাজ না করে বসে থাকলে তো হবে না। ভাল ভাল কনটেন্ট নিয়ে ভাবতে হবে। যেখানে হিন্দি ছবির এত রমরমা আলোচনা, সেখানে আমাদের বাংলা ছবির মান সম্মান তো ধরে রাখতে হবে। সেটাই মূল লক্ষ্য। আর এই ভাবে ব্যবসা হয় না। আর হিট ফ্লপ তো সেই নিরিখে একদমই হয় না। আমি মাথায় রাখি অতীতে যে বিষয় নিয়ে কাজ করেছি, ভবিষ্যতে সেই বিষয় নিয়ে কাজ করব না। চরিত্রের যেন ‘রিপিটেশন’ না হয়। আমি জানি এই ছবিটা হয়তো বিশাল হিট হবে না। আর সব ছবিকেই কি হিট হতে হবে? শাহরুখের জীবনের সব ছবি কি ‘ডিডিএলজে’র মতো হিট? দিনের শেষে এটা বুঝতে পারি এই গল্পটা দর্শকের ভাল লাগবে।

‘বাঘা যতীন’-এর নতুন রূপে দেবকে চেনা দায়! ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: এ বার পুজোয় চারটে ছবি, প্রতিযোগিতার জন্য তৈরি?

দেব: এ বছর তো কম মুক্তি পাচ্ছে। একটা সময় পুজোয় ৯টা ছবি মুক্তি পেত একসঙ্গে। সেই সময়টাও আমি দেখেছি। আমি প্রতিযোগিতায় ভয় পাই না। কারণ, আমার হারানোর কিছু নেই। ‘বাঘা যতীন’-এর মতো ছবি করার পর ভয় পাওয়ার কোনও কারণ আছে! আমার ভয় নেই। মানুষ কখনও আমায় খালি হাতে ফেরায়নি। ১৮ বছর তাই টিকে রয়েছি।

প্রশ্ন: ছবিতে জনপ্রিয় মুখ বলতে আপনি। একা টেনে নিয়ে যাওয়া কঠিন?

দেব: এই ছবিতে সবচেয়ে বড় স্টার হচ্ছে ‘বাঘা যতীন’ নিজে। বাংলার সবচেয়ে বড় বিপ্লবী। তাঁর চেয়ে বড় কেউ নয়। আমি তো নইই।

প্রশ্ন: আপনার নতুন নায়িকা সৃজা দত্ত বেশ আত্মবিশ্বাসী। একদম আনকোরা অভিনেত্রীর সঙ্গে কাজ করতে গেলে কী ভাবে প্রস্তুতি নিতে হয়?

দেব: আমরা এমনই এক জনকে চেয়েছিলাম। ফাঁকা স্লেট। ও যদি সব জানত তা হলে মুখের ইনোসেন্সটা ধরতে পারতাম না। সৃজা দুর্দান্ত। ও এই ইন্ডাস্ট্রিতে থাকার জন্য এসেছে।

দেবের কি ইতিহাস নিয়ে আগ্রহ আছে? ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: আপনি নিজে প্রযোজক হিসাবে খুশি?

দেব: ভীষণ খুশি। আমি হয়তো দেরিতে শুরু করেছি। কিন্তু আপনারা তো আমায় খুব ভাল জায়গা দিয়েছেন। আমি ব্যবসার জন্য প্রযোজক হইনি, আমি ভাল গল্প বলার জন্য প্রযোজক হয়েছি। নানা ধরনের গল্প বলছি।

প্রশ্ন: আপনার সেই অ্যাকশন অবতার তো মিস্‌ করছেন অনেকে।

দেব: ‘বাঘা যতীন’ দেখুন। অনেকের সেই খিদে মিটবে।

প্রশ্ন: আপনি নিজে মিস্‌ করেন?

দেব: আমি তো দর্শকের জন্য ছবি তৈরি করি। আমি ভাবলে তো হবে না। মিস্‌ করি। কিন্তু তাতে তো যায় আসে না। মোদীজি কাদের জন্য কাজ করছেন? মানুষের জন্য। দিনের শেষে আমাদের সব কিছুই করা মানুষের জন্য।

‘বাঘা যতীন’ ছবিতে দেবের লুক। ছবি: সংগৃহীত।

প্রশ্ন: আপনি তো নিজেও তৃণমূল সাংসদ, নিজের কথা বা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদাহরণও দিলেন না তো?

দেব: না আমি তো লার্জার দ্যান লাইফের কথা বলছি। আমার কথা বললে তো আপনি বলবেন, আমি আমার পার্টির হয়ে কথা বলছি। এটা শুধুমাত্র উদাহরণ।

প্রশ্ন: চাঁদের পাহাড় ৩ হচ্ছে?

দেব: আপাতত আমার কাছে তো কোনও খবর নেই।

প্রশ্ন: ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন?

দেব: এই মুহূর্তে আমি শুধুই ছবি নিয়ে কথা বলতে চাই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement