অনুরাগ
প্র: বাঙালি বলেই কি ছবির নাম ‘লুডো’ রাখলেন?
উ: হা হা... ঠিক তা নয়। যখন গল্প লিখছিলাম, তখন বিষয়টা যেন লুডো খেলার মতো এগোচ্ছিল। লেখার সময়ে ভিসুয়াল মেটাফরের জায়গায় লুডোকে রেখেছিলাম। তার পর ছবির নামকরণ করতে গিয়ে আর কিছু মাথায় আসছিল না। তখন সেই রূপককেই নাম হিসেবে রেখে দিলাম। তবে এটা ঠিক যে, বাঙালিদের সঙ্গে লুডোর আলাদা যোগ রয়েছে। প্রত্যেক বাড়িতে একটা লুডোর বোর্ড থাকবেই। আর বেড়াতে গেলেও সঙ্গে নিতে হবে।
প্র: লুডোকে মেটাফর কেন বলছেন?
উ: চারটে গল্প আছে। প্রত্যেকটার ঘরানা আলাদা। আলাদা জ়ঁরের মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে গল্প। আর পঙ্কজ ত্রিপাঠীর চরিত্রটা লুডোর ছক্কার মতো, যাকে বলে ডমিনো এফেক্ট। সব ক’টা কাহিনির মধ্যে ও রয়েছে।
প্র: লুডোর কোন ব্যাপারটা সবচেয়ে ভাল লাগে? কারও পাকা ঘুঁটি খেয়ে নেওয়া?
উ: ওটা তো দারুণ লাগে। আর একটা ব্যাপার আছে, খেলার সময়ে অনেকে বলে, ‘এই আমার ঘুঁটি ছেড়ে দে, তোকেও পরে ছেড়ে দেব।’ তার পর কথার খেলাপ করে, ছাড়ার বেলায় ছাড়ে না। ছবিতেও সেই জিনিসটা আছে।
প্র: ছবি সিনেমা হলের বদলে অনলাইনে আসছে। আক্ষেপ আছে?
উ: আক্ষেপ ঠিক নেই। যদি জানতাম ওটিটি-তে আসবে, তা হলে সেই মতো লিখতাম, শুট করতাম। ওটিটি রিলিজ়ের পজ়িটিভ দিক হল, অনেক জায়গায় একসঙ্গে অনেক বেশি মানুষ ছবিটা দেখবেন। আর শুক্র, শনি, রবিবারের বক্স অফিসের যে চাপটা নিতে হয়, এখানে সেটা নেই। কিন্তু সিনেমা হলের অ্যাম্বিয়েন্সটা আমি মিস করছি। এটা পরিচালক হিসেবে আমার মনে হচ্ছে, দর্শকের না-ও মনে হতে পারে। এখন দর্শকের কাছে এত বেশি চয়েস যে, আমাদের ভাল জিনিস তৈরি করার চাপ বেড়ে যাচ্ছে। দর্শকের ধৈর্য কমে গিয়েছে। একটা সিনেমা বা সিরিজ় দেখানোর জন্য তাঁদের বসিয়ে রাখাটাই পরিচালকদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।
প্র: খুব কম ছবি করেন, এটা আপনার বিরুদ্ধে দর্শকের অভিযোগ...
উ: আগে খুব পালিয়ে পালিয়ে বেড়াতাম, সময় নিয়ে কাজ করতাম। তবে ‘জগ্গা জাসুস’ আর ‘লুডো’র মধ্যে বেশি বিরতি নেই। আসলে কী জানেন, আপনি যদি সফল হন জীবনে, তা হলে আলসেমি করার সুযোগ পাবেন। আমি সেই ফাঁকা থাকার সময়টা কিনতে পেরেছিলাম। তাই দরকার মনে করলেই ছবি বানাই। জীবনটা উপভোগ করা আমার কাছে ছবি বানানোর চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
প্র: ওয়েব সিরিজ় বানানোর কোনও পরিকল্পনা নেই?
উ: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোটগল্প নিয়ে মিনি সিরিজ় করেছি। ওটা নেটফ্লিক্সে আছে। আর কিছু বাংলা সাহিত্য নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আছে। দেখা যাক, আসলে আমি বড্ড কুঁড়ে।
প্র: কলকাতায় যাতায়াত আছে?
উ: হ্যাঁ, নিয়মিত। এই কালীপুজোয় আসব। বাচ্চাদের ছুটি, তাই শান্তিনিকেতন যাব। আমার স্ত্রী ওখানকার মেয়ে।
প্র: ইনসাইডার-আউটসাইডার, স্বজনপোষণ প্রভৃতি বিতর্কে বলিউড জেরবার। কাজের পরিবেশ এখন কেমন?
উ: এই সব নেগেটিভিটি কিন্তু বাইরে। ইন্ডাস্ট্রির ভিতরে কোনও সমস্যা নেই। কাজ হচ্ছে। সকলে সকলের সঙ্গে কাজ করছেন। ইন্ডাস্ট্রিতে ইনসাইডার-আউটসাইডারের মধ্যে ভারসাম্য আছে। ‘লুডো’র কথাই ধরুন, আমি ইন্ডাস্ট্রির বাইরে থেকে এসেছি। আমার ছবিতে এক দিকে পঙ্কজ ত্রিপাঠী, রাজকুমার রাও আছে। আবার অন্য দিকে আদিত্য রায় কপূর, অভিষেক বচ্চনও আছে। এই ভারসাম্যটাই কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিকে টিকিয়ে রেখেছে।
প্র: কঙ্গনা রানাউতের সঙ্গে যোগাযোগ আছে?
উ: অনেক দিন যোগাযোগ করা হয়নি। ওর বাড়িতে বিয়ে হল, নিমন্ত্রণও করেনি (হাসি)। কঙ্গনার সঙ্গে আমার একটা ছবি করার কথা হয়েছিল, ‘ইমলি’। ওই সময়েই শেষ কথা হয়েছিল, তার পর আর যোগাযোগ হয়নি। (একটু থেমে) ওই এক মেয়ে বটে!