সম্প্রতি তাঁর অভিনীত ছবি আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিত
Sreelekha Mitra

Sreelekha Mitra: আমি যে সত্যি বলি, তা ইন্ডাস্ট্রিই প্রমাণ করে দেয়, বললেন শ্রীলেখা মিত্র

সুশান্তের মৃত্যুটা আমাকে খুব নাড়া দিয়েছিল। নিজের সঙ্গে ব্যাপারটা রিলেট করতে পারছিলাম। আমারও আত্মহত্যার ভাবনা মনে এসেছিল

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২১ ০৭:৪১
Share:

শ্রীলেখা

প্র: ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে আদিত্য বিক্রম সেনগুপ্তর ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন ক্যালকাটা’ নিয়ে কেমন সাড়া পেলেন?

Advertisement

উ: দর্শকের সঙ্গে আমিও প্রথম বার পুরো ছবিটা দেখলাম। স্ক্রিনিংয়ের পরে প্রশ্নোত্তর পর্ব হয়েছিল। ছবির জগতের মানুষ এবং সাধারণ দর্শক আমার অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন। ওখানে উপস্থিত অনেক মহিলা বলেছেন, অন্য মহাদেশ বা সংস্কৃতির হলেও, আমার অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তাঁরা নারীসত্তার চিরন্তন দিকটি উপলব্ধি করেছেন। আমার অটোগ্রাফ নেওয়ার জন্য একটি মেয়ে তার বাবার সঙ্গে অপেক্ষা করছিল। রেড কার্পেট, চোদ্দো দিনের সফর, নানা প্রান্তের মানুষের সঙ্গে পরিচিতি... সঞ্চয় করে রাখার মতো একটা অভিজ্ঞতা।

প্র: আপনার ‘অভিযাত্রিক’, ‘নির্ভয়া’ ছবি দু’টিও মুক্তির অপেক্ষায়...

Advertisement

উ: শুভ্রজিৎ মিত্রের ‘অভিযাত্রিক’-এ আমার চরিত্রের নাম রাণুদি। দুর্গার বন্ধু ছিল রাণুদি। ছবিটা গত কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হয়েছে। অংশুমান প্রত্যুষের ‘নির্ভয়া’ নভেম্বরে মুক্তি পাওয়ার কথা।

প্র: এই ছবিগুলির পরেও কি বলবেন, ইন্ডাস্ট্রিতে লবিবাজি রয়েছে?

উ: ইন্ডাস্ট্রি বদলায়নি। এখনও আমি ক’টাই বা ছবি করি?

প্র: আপনার কাছে প্রস্তাব কম আসে?

উ: হ্যাঁ, কম আসে। আর ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচালক-প্রযোজকদের ছোট ছোট গ্রুপ রয়েছে। তাঁদের বললে বলা হবে, নির্দিষ্ট কয়েকজনের সঙ্গে কাজ করতে তাঁরা কমফর্টেবল। এর পরে তো কিছু বলার থাকে না! একজন অভিনেত্রী বলেছিলেন, আমার অভিনয়ে কিছু খামতি রয়েছে। আশা করি, ভেনিসের পরে তিনি এ কথা আর বলবেন না।

প্র: কে সেই অভিনেত্রী?

উ: না, এখন আর তাঁদের নাম বলে বেশি গুরুত্ব দিতে চাই না।

প্র: কিন্তু আপনার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিয়োয় ইন্ডাস্ট্রির নামী অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নাম করে লবিবাজির অভিযোগ এনেছিলেন...

উ: ঘুম থেকে উঠে হঠাৎ একদিন মনে হয়নি, এঁদের নাম করে বলব! আমি অবসাদের মধ্যে ছিলাম। সুশান্তের (সিংহ রাজপুত) মৃত্যুটা আমাকে খুব নাড়া দিয়েছিল। ওঁর সম্পর্কে পড়ছিলাম যে, ওঁকে কাজ দেওয়া হত না, তখন নিজের সঙ্গে ব্যাপারটা রিলেট করতে পারছিলাম। আমারও আত্মহত্যার ভাবনা মনে এসেছিল।

প্র: নিন্দুকেরা বলে, চ্যানেলের ভিউজ় বাড়ানোর জন্য ওই ভিডিয়ো করেছিলেন...

উ: যারা এমন বলেছে, তারা মূর্খ। শ্রীলেখা যদি এত চালাক-চতুর হত, তা হলে এ রকম অবস্থা হত না আমার। ভেনিস থেকে ফেরার পরেও আমাকে নিয়ে ক’টা খবর লেখা হয়েছে? আমি যে সত্যি বলি, সেটা তো ইন্ডাস্ট্রিই প্রমাণ করে দেয়। আদিত্য আমাকে চিনত না। চরিত্রের জন্য উপযুক্ত মনে হয়েছে, তাই নিয়েছে। ছবি এভাবেই হয় বলে জানি। কিন্তু এমনও বলতে শুনবেন, কোনও বিশেষ দুর্বল মুহূর্তে কেউ কাউকে কথা দিয়েছিল পরের ছবিতে নেবে, সেই ভেবে চরিত্র লেখা হয়েছে। তা না হলে আমাকে আর অনন্যা চট্টোপাধ্যায়ের মতো অভিনেত্রীকে বসে থাকতে হয় কেন?

প্র: সব ইন্ডাস্ট্রিতেই রাজনীতি থাকে। আপনার দিক থেকে কোনও ঘাটতি ছিল?

উ: যে জায়গায় গিয়ে জ্ঞান-বুদ্ধি বাড়ে না, সেখানে আমি যেতাম না। লোকে ভাবত, আমি নাকউঁচু। সেটা কিছুটা হলেও সত্যি। কারও ক্ষমতা আর টাকা আছে বলেই, তার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতে পারি না। যদি এখন দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ শুরু করি, তখন নিজের মার্কেটিং করব। কলকাতায় সকলে আমাকে চেনে, এখানে কেন এত বলতে হবে? অংশুমান শুটিংয়ে বলল, ‘‘দিদি, সকলে বলে তোমার খুব ট্যানট্রাম! তুমি তো জুনিয়র শিল্পীদের সঙ্গে মেকআপ রুম শেয়ার করলে, কিছু তো বুঝলাম না।’’ আদিত্যের ছবিতে মেকআপ ভ্যান ছিল না। আমি মেঝেতেও শুয়েছি। অনীক দত্তর মতো খুঁতখুঁতে পরিচালকও বলেন না, আমার ট্যানট্রাম আছে। কিন্তু কয়েকজন বলবেই।

প্র: গত বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্টের হয়ে প্রচারও করেছেন। সক্রিয় রাজনীতিতে আসবেন?

উ: একেবারেই না। ওটা আমার উদ্দেশ্য নয়। আমি বাম সমর্থক হয়ে খুশি। এত কম লোক এখন প্রকাশ্যে নিজেকে বাম সমর্থক বলেন যে, প্রচার ও জনসভায় আমাকে যেতে বলা হয়েছিল। তাই গিয়েছিলাম।

প্র: শশাঙ্ক ভাভসারের সঙ্গে ডেটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে আক্ষেপ রয়েছে?

উ: শ্রীলেখার এত খারাপ দিন আসেনি যে, শশাঙ্ককে ডেট করবে! ‘ডেটিং’ বলেছিলাম কারণ বিষয়টাকে স্পাইস আপ করতে চেয়েছিলাম। তবে মানুষটাকে আমি চিনতে পারিনি, তা নিয়ে ভীষণ অনুতপ্ত। একটা বাচ্চার (সারমেয়) প্রাণ গেল। তবে আমি যে দলটাকে সমর্থন করি, তাদের অনেক ছেলেমেয়ে পুরো ঘটনা না জেনে ভাবল, আমি দল বা রেড ভলান্টিয়ারদের ছোট করেছি! গোটা বিষয়ে আমি বিরক্ত।

প্র: নুসরত জাহানের অসততা নিয়ে পোস্ট দিয়েছিলেন।

উ: নুসরত যখন বিয়েটাকে লিভ-ইন বলছিল, তখন সেটা আমার কাছে নীতিবিরুদ্ধ মনে হয়েছে। কারণ ও এখন জনপ্রতিনিধিও। এতে পার্লামেন্টকে ছোট করেছে। আবার বিয়ে নামক প্রাতিষ্ঠানিকতার বাইরে গিয়ে যখন ও মা হয়েছে, তখনও ওর প্রশংসা করে আমি পোস্ট দিয়েছি।

প্র: ‘রেনবো জেলি’ বিতর্কের পরে সৌকর্য ঘোষালের সঙ্গে আর কাজ করবেন?

উ: যে টাকা দিতে মিথ্যে বলে, একটা শিশুকে ঢাল হিসেবে দেখায়, এমন মানুষের সঙ্গে কাজ করব না। লেখক-পরিচালক হিসেবে ওকে পছন্দ করি, মানুষ হিসেবে নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement