প্র: এই ছবিতে সংলাপ রয়েছে, বয়সটা নাকি একটা সংখ্যা মাত্র! আপনি নিজেও সেটা বিশ্বাস করেন?
উ: এই তো সেপ্টেম্বরে ৬৬-তে পা দেব। বয়স নিয়ে আমার কোনও মাথাব্যথা নেই। জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করছি। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে কাজের অভিজ্ঞতাও খুব ভাল। এখন আমি যে জীবনটা পুরোদমে বেঁচে নিচ্ছি, সেটাই আমার জীবনের সেরা সময় বলে মনে হয়। অমিতাভ বচ্চনকে দেখুন, ছবিতে উনি ১০২ বছরের বৃদ্ধ। ছবিতেও বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, ‘‘এজ ইজ় জাস্ট আ নাম্বার।’’
প্র: ছবি নিয়ে আপনার প্যাশন দেখার মতো...
উ: (অসন্তুষ্ট হয়ে) হয় আপনার প্যাশন থাকবে, নয়তো থাকবে না। এর মাঝামাঝি কিছু আমার অভিধানে নেই। আমি অভিনয় করতে ভালবাসি। অনেকেই জিজ্ঞাসা করেন, কেন পরিচালনা করছি না? তাঁদের একটা কথাই বলব, আমার হাতে সময় নেই। অভিনয় করেই আমি খুশি।
প্র: পরিচালক উমেশ শুক্লর সঙ্গে এটা আপনার দ্বিতীয় ছবি। একসঙ্গে আবার কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
উ: থিয়েটার থেকে ছবিতে এসেছে উমেশ। ওর ব্যক্তিত্ব আমার খুব পছন্দ হয়েছে। আমার বা মিস্টার বচ্চনের উপস্থিতিতে আমি ওকে কোনও দিনও আড়ষ্ট দেখিনি, যেটা খুব বড় গুণ। আমি আমার কোনও পরিচালকের কথা কোনও দিনই শুনিনি, খুব ঝগড়া করতাম। আবার মিস্টার বচ্চনের মতো নিয়মনিষ্ঠ অভিনেতা উমেশের নির্দেশ শুনেছেন। তবে আমিও এ বার উমেশের কথা শুনেছি (হেসে)।
প্র: এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে কেমন চরিত্র করতে আপনি বেশি আগ্রহী?
উ: নায়ক-নায়িকার বাবার চরিত্র কোনও দিনও করব না। আমার মনে হয়, ওই সব চরিত্রের জন্য আমি খুবই ব্যয়বহুল। ছোট হলেও এমন চরিত্র করতে চাই, যাতে সেই ছবির মান বাড়াতে পারি। আমি এক জন শিল্পী। আবার ভীষণ অস্থিরও। তাই চরিত্রের জন্য নানা রকম লুক দেওয়া হলে খুব খুশি হই। আমি কোনও সাবাশি চাই না।
প্র: অমিতাভ বচ্চনের কী কী গুণ আপনার থাকলে ভাল হতো?
উ: এখন তো অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। ওঁর মতো অনুশাসন আমি কারও মধ্যে দেখিনি। আমরা ছ’টা ছবি একসঙ্গে করেছি। শেষ ছিল ‘অজুবা’। সাতাশ বছর বাদে আবার একসঙ্গে ফিরছি। মিস্টার বচ্চন যে ভাবে ওঁর চরিত্রকে ভালবাসেন, সেটা আমি ওঁর কাছ থেকেই শিখেছি। আর ওঁর বিনয় তো সকলের জানা। আমি ছবিতে কাজ করতে করতে এখনও অবিরাম শিখছি। আর মিস্টার বচ্চনের সঙ্গে যখন কাজ করি, তখন সার্বিক ভাবে আমাদের কাজের মানটাও
বেড়ে যায়।
ছবিতে ঋষি
প্র: আপনার মতে কেরিয়ারের এই পর্যায়ে এসেও এত ধরনের চরিত্র পাওয়ার পিছনে ঠিক কোন বিষয়টা কাজ করে?
উ: আমি কোনও একটা জায়গায় একেবারেই সীমাবদ্ধ থাকি না। আসলে দর্শকের মনে আমি এখনও সতেজ আছি। এটা একটা আশীর্বাদ। আর আমাদের সময়ে এত ধরনের চরিত্র কোথায় ছিল? ‘খোঁজ’ ছবিতে আমাকে খলনায়কের চরিত্র দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দর্শক আমার চরিত্রকে কী ভাবে নেবেন, সেই ভয়ে ক্লাইম্যাক্সে পরিবর্তন আনা হল। আমার মতে, শুধুমাত্র ভাল অভিনেতারাই ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকেন। সাধারণ অভিনেতারা নন। নতুন প্রজন্মের অভিনেতারা ক্যামেরার সামনে আসার আগে জিমে যান। সিক্স-এইট প্যাক অ্যাবস নিয়ে কী অভিনয় করবেন? তরবারি চালানো বা ঘোড়ায় চড়া শেখার সঙ্গে অভিনয়ের কী সম্পর্ক? এখনকার অভিনেতারা বডি বানানোর আগে মুখের পেশি কাজে লাগাতে শিখুন! শার্ট খুললেই কি আর অভিনেতা হওয়া যায়?
প্র: রণবীর কপূরের ‘সঞ্জু’র ট্রেলার দেখে তো সবাই অবাক...
উ: ছেলেটা খুব পরিশ্রম করেছে। সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে শারীরচর্চা করেছে। চুল বাড়িয়েছে। একটা ভয় ছিল, যেন কেউ ট্রেলার দেখে এটা না বলে যে, সঞ্জয় দত্তর ক্যারিকেচার করেছে রণবীর। তবু রাজকুমার হিরানি পরিচালক বলে চিন্তাটা কম ছিল।