দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে হিন্দিতেও জায়গা তৈরি করেছেন রানা দগ্গুবটী
Rana Daggubati

‘রাজনৈতিক কারণে আলাদা হলেও, শিল্পের সীমানা হয় না’

Advertisement

সায়নী ঘটক

শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২১ ০৮:০০
Share:

রানা

প্র: তামিল ও তেলুগু ভার্সন মুক্তি পেলেও আপনার ছবির হিন্দি ভার্সনের মুক্তি পিছিয়ে গিয়েছে। অতিমারির মধ্যে ছবিমুক্তির ঝুঁকি কতটা?

Advertisement

উ: তামিল ও তেলুগু ফিল্মের মার্কেট পুরোপুরি খুলে গিয়েছে। দেশের বাকি ইন্ডাস্ট্রিগুলিতে এখনও বড় রিলিজ় আসেনি সে ভাবে। এত দিন পরে হলমুখী হওয়া দর্শকের কাছে ‘হাতি মেরে সাথী’ ভিসুয়ালি দুর্দান্ত একটা অভিজ্ঞতা হবে। তামিল ও তেলুগু ভার্সন ‘অরণ্য’ ও ‘কাদান’ মুক্তি পেয়েছে ইতিমধ্যেই। এটি হিন্দি ইন্ডাস্ট্রির বক্স অফিসও খুলে দিতে পারবে, আশা করছি। উত্তর ভারতের দর্শকের বড় মাপের থিয়েট্রিক্যাল এক্সপিরিয়েন্স এখনও হয়নি সে অর্থে। এ দিকে, দক্ষিণে কিছু ছবির বক্স অফিস কালেকশন ১০০ কোটি ছাড়িয়েছে করোনার পরেও। ব্যবসায়িক দিক থেকেও অনেকটাই আগের জায়গায় ফিরে এসেছে।

Advertisement

প্র: দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি ও বলিউডের এই আলাদা চিত্র কেন?

উ: অন্য ইন্ডাস্ট্রিতে কেন বিগ বাজেট রিলিজ় এখনও হচ্ছে না, সেই সম্পর্কে মন্তব্য করার জায়গায় আমি নেই। তেলুগু, তামিল ইন্ডাস্ট্রিতে তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অতিমারি এখনও কাটেনি। তবে নিরাপত্তাবিধি মেনেই এখানকার হলগুলো ব্যবসা করছে। ‘মাস্টার’, ‘ক্র্যাক’-এর মতো ছবি কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। এত দিন ঘরে বন্দি থেকে ওটিটি-নির্ভর হয়ে পড়া দর্শককে বড় পর্দায় সেই মাপের বিনোদন জোগাতে হবে।

প্র: আপনি নিজে বড় পর্দার পাশাপাশি ডিজিটালেও সক্রিয়। আগামী দিনে কোনটিকে এগিয়ে রাখতে চাইবেন?

উ: ‘হায়েস্ট ফর্ম অফ আর্ট’ হিসেবে সব সময়ে বড় পর্দার সিনেমা থাকবে। ‘বাহুবলী’ কি আপনার সেলফোনে দেখতে ভাল লাগবে? আবার ডিজিটাল সময় ও দৈর্ঘ্যে বেঁধে ফেলে না, সেই সুবিধে রয়েছে। দুটোরই নিজস্ব জায়গা আছে আসলে। সময়ের দাবি মেনে ডিজিটালে সক্রিয় হতেই হবে। কিন্তু বড় পর্দাকে বাদ দিয়ে নয়।

প্র: আপনার নতুন ছবির সঙ্গে রাজেশ খন্না অভিনীত পুরনো হিন্দি ‘হাতি মেরে সাথী’ ছবিটির কোনও মিল রয়েছে?

উ: ছবির টাইটেলটা ছাড়া আর কোনও মিল নেই। তবে হ্যাঁ, ওখানেও পশু আর মানুষের বন্ধুত্বের কথা বলা হয়েছিল, এখানেও তাই।

প্র: এই ছবির শুটিংয়ের সময়েই তো আপনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন?

উ: হ্যাঁ। ছবির পরিচালক প্রভু সলোমনের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ, তিনি আমার জন্য অপেক্ষা করেছিলেন ওই সময়ে। শুটিংয়ের অনেকটা অংশই জঙ্গলে হয়েছিল, সেটাও আমাকে সেরে উঠতে সাহায্য করেছিল পরোক্ষ ভাবে। বাণদেবের চরিত্রটা প্রভু স্যর যখন আমাকে ব্রিফ করেছিলেন, তখনই বুঝেছিলাম প্রকৃতি ও তার সংরক্ষণের বার্তাবাহী বড় মাপের একটা অ্যাডভেঞ্চার ফিল্ম হতে চলেছে এটা। জঙ্গল নিয়ে তৈরি বিভিন্ন তামিল ছবি দেখে এই ভাবনাটা এসেছিল প্রভু স্যরের মাথায়। বাণদেবকে বলা যায় মোগলির বড় ভার্সন, যে বন্যপ্রাণের সঙ্গে সমাজের সংঘাত দেখে হাতিদের হয়ে, জঙ্গলের হয়ে লড়াই করে যায়। ‘ফরেস্ট ম্যান অফ ইন্ডিয়া’ যাদব পেয়াঙকে ভেবে চরিত্রটা লেখা, যিনি ৫৫০ হেক্টর ফাঁকা জমিকে একা হাতে অরণ্যে পরিণত করেছিলেন। এঁদের মতো মানুষরা আছেন বলেই আমরা আছি।

প্র: সাম্প্রতিক সময়ে বলিউড ও দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রির আদানপ্রদান বেড়েছে। আপনাদের মতো অভিনেতাদের পক্ষে তা কতটা লাভজনক হয়েছে?

উ: অভিনেতা, পরিচালকদের জন্য খুব ভাল সময় এটা। কারণ, অনেক ধরনের ছবির মধ্য থেকে বেছে নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন তাঁরা, যেখানে ভাষাটা বাধা নয়। এক-একটা ছবি ৭-৮টি ভাষায় তৈরি হচ্ছে। আগে ভাষার সমস্যার কারণে সব ছবি সকলের কাছে পৌঁছত না। দক্ষিণী ছবি, বলিউড ছবির বিভাজন নিয়ে দর্শকের টিপিক্যাল মাইন্ডসেট ছিল। এখন আমাদের মতো অভিনেতাদের কাজের পরিসর বেড়েছে। বলিউড থেকেও বহু তারকা দক্ষিণে আসছেন। এই ট্রেন্ড ঐক্যবদ্ধ করেছে আমাদের। রাজনৈতিক কারণে আলাদা হলেও আসলে তো শিল্পের সীমানা হয় না। ভাষা সেখানে বাধা নয়।

প্র: অতিমারির মধ্যেই বিয়ে করলেন গত বছর। কতটা পাল্টেছে জীবন?

উ: তেমন কিছু নয়। আগে মানুষ হিসেবে নিজেকে পাল্টেছি আমি, তার পরে বিয়ে করেছি (হাসি)। এখন অনেকটা গুছিয়ে নিয়েছি নিজেকে। আই হ্যাভ গ্রোন আপ!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement