Kolkata Group Theatre

অনুদান বন্ধকে কেন্দ্র করে বাড়ছে ক্ষোভ, বাংলার নাট্যদলগুলির পরবর্তী পদক্ষেপ কী?

বাংলার একাধিক নাট্যদলের অনুদান বন্ধকে কেন্দ্র করে ক্ষোভ বাড়ছে নাট্যজগতে। তাঁদের আগামী পদক্ষেপ কী হতে চলেছে?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২৪ ১৮:৩৬
Share:

সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত নাট্য জগতের বিশিষ্টেরা — নিজস্ব চিত্র।

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের তরফে রাজ্যের একাধিক নাট্যদলের রেপার্টরি অনুদান (‘গুরু-শিষ্য পরম্পরা’) বন্ধকে কেন্দ্র করে বাংলার নাট্যজগতে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার নাট্যজগতের একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব শহরে সাংবাদিক বৈঠক করেন। পাশাপাশি, তাঁদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে চলেছে, তা-ও জানিয়ে দেন।

Advertisement

সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দেবেশ চট্টোপাধ্যায়, মেঘনাদ ভট্টাচার্য, পৌলোমী চট্টোপাধ্যায়, সুজন নীল মুখোপাধ্যায়, অর্পিতা ঘোষ, শ্যামল চক্রবর্তী, অভি চক্রবর্তী, সৌরভ পালোধী সহ বাংলা নাট্যজগতের পরিচিতেরা। নাট্যদল ‘সায়ক’ এর কর্ণধার মেঘনাদ ভট্টাচার্য জানান, সারা দেশে ৭০টি দলের অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে এ রাজ্যের ২৪টি দল রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমি নিজে যে কোনও রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী হতে পারি, কিন্তু আমার নাটকের দর্শক সবাই। আমার দল ৫০ বছর পূর্ণ করল। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে একটা ভাল পুরস্কার পেলাম!’’

লোকসভা ভোটের আগে কেন্দ্রের তরফে একটি নাটক (‘সোনার পাখি ফিরে এসো’) এ রাজ্যের সব দলকে করতে বলা হয়। কেউ করেন, কেউ আবার করেননি। দেবেশের কথায়, ‘‘এই চাপিয়ে দেওয়ার রাজনীতি বন্ধ করা উচিত। অনুদান বন্ধ হতে পারে, কিন্তু আমাদের নাটক বন্ধ হবে না।’’ পৌলোমী চট্টোপাধ্যায়ের দলের ১৫ জনের অনুদান বন্ধ হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘‘একস্ট্রাঅর্ডিনারি ওয়ার্ক’ লেখা হয়েছে। তার পরেও অনুদান বন্ধ হল কেন?’’

Advertisement

২০০০ সালের কিছু পর থেকে নাট্যদল ‘চেতনা’ এই অনুদান পেতে শুরু করে। সুজন বলেন, ‘‘২০১৩ সাল থেকে আমাদের দল আর অনুদান পায়নি। আমাদের 'নিষিদ্ধ' ঘোষণা করা হয়েছিল।’’ সমাজমাধ্যমে এই অনুদানকে ‘ভিক্ষার ঝুলি’ বলা হচ্ছে। সেই প্রসঙ্গে তুলে সুজন বলেন, ‘‘এটা ভুল। এটা সাংস্কৃতি জগতের প্রাপ্য। সারা বিশ্বে এর উদাহরণ রয়েছে।’’

তা হলে এর পর বাংলার নাট্যদলগুলি কোন পথে এগোবে? দেবেশ বলেন, ‘‘আমরা একটি চিঠি লিখছি, সকলের সই সংগ্রহ করছি। দু’দিন পর সেই চিঠি আমরা সংস্কৃতি মন্ত্রকের কাছে পাঠাব। তার পর অপেক্ষা করব।’’ তবে চিঠির সদুত্তর না পেলে, তাঁরা আরও বড় পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছেন। দেবেশ বলেন, ‘‘প্রয়োজনে আমরা দিল্লিতেও যাব। কিন্তু, আন্দোলন জারি থাকবে।’’ সম্প্রতি, টলিপাড়ায় শুটিং সংক্রান্ত জটিলতা মেটাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হস্তক্ষেপ করেন। নাট্যব্যক্তিত্বদের এখনও পর্যন্ত সে রকম কোনও পরিকল্পনা নেই। মেঘনাদ বলেন, ‘‘এটুকু বলতে পারি, যদি সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তা হলে একমাত্র মুখ্যমন্ত্রীর কাছেই যাব।’’

সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত না থাকতে পারলেও তাঁদের বক্তব্য পাঠিয়ে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন সুমন মুখোপাধ্যায় এবং কৌশিক সেন। সোমবার সকালে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা অনুরোধ জানিয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন। বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যও নাট্যব্যক্তিত্বদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement