টাকাপয়সা নিয়ে ফেডারেশন আর চ্যানেলের বিবাদের জেরে একাধিক সিরিয়ালের কাজ বন্ধ হয়ে গেল।
জি বাংলা এবং সান বাংলা-র সব ধারাবাহিকের শুটিং শুক্রবার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হল। এ দিন সকালে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে আসা এই খবরে হতবাক চ্যানেল কর্মকর্তারা। তবে, বিষয়টি একেবারেই করোনা সংক্রান্ত নয়।
তা হলে আসল কারণ কী?
আনন্দবাজার ডিজিটাল খোঁজ নিতে গিয়ে জানল, কাজ বন্ধের বিষয়টা ফেডারেশন আর চ্যানেলের পারস্পরিক টাকাপয়সার বিবাদ ঘিরে তৈরি হয়েছে। চ্যানেলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, অতিমারির সময় চ্যানেলের তরফ থেকে টেকনিশিয়ানদের এককালীন কিছু টাকা দেওয়ার কথা চ্যানেল নিজে থেকেই ঘোষণা করে। ওই সময়ে যদিও কোনও কাজ হয়নি, তবুও যে সমস্ত টেকনিশিয়ান দৈনিক কাজের হিসেবে টাকা পেতেন, তাঁদের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চ্যানেল তাঁদের সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে। কিন্তু টেকনিশিয়ানদের অভিযোগ, সেই টাকা তাঁরা আজও পাননি। ফেডারেশনের সম্পাদক স্বরূপ বিশ্বাস আনন্দবাজার ডিজিটালকে বলেন, “প্যান্ডেমিকের সময় যে টাকা দেওয়ার কথা ছিল তা আজও এসে পৌঁছয়নি। গত শুক্রবার থেকে সমস্যা বাড়তে থাকে। আমি রোজই বলি আজ টাকা আসবে। টাকা আসে না। তাই টেকনিশিয়ানরা একটা নির্দিষ্ট দিনের দাবি করেছেন চ্যানেলের কাছে। সেই দিনটা জানতে পারলেই কাজ শুরু হবে।”
আরও পড়ুন: ‘ভাইয়ের উপরে ব্ল্যাক ম্যাজিক করত রিয়া’, অভিযোগ সুশান্তের দিদির
বিষয়টা যদিও এত সহজ করে দেখছেন না চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানান, লকডাউনের সময় যে এককালীন টাকা দেওয়ার কথা তা কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি (সিএসআর)-র মাধ্যমে আসবে। এই কর্পোরেট প্রক্রিয়ায় টাকা আসতে একটু সময় লাগে। সেই সময়টুকু না দিয়ে দুম করে শুটিং বন্ধ করা যায়? আর শুটিং বন্ধ হলে যাঁরা রোজের কাজের ভিত্তিতে টাকা পান তাঁদের টাকা তো বন্ধ হয়ে যাবে? এতে লাভের জায়গায় ক্ষতিই হবে। লকডাউন পরবর্তী অবস্থায় এই ক্ষতির দায়ভার কে নেবে? প্রশ্ন তুলেছে চ্যানেল। চ্যানেলের তরফ থেকে বলা হয়, আজ শুটের জন্য তারা যে বাড়ি ভাড়া করছে তার টাকা কে দেবে? আজ শুটও হল না। টাকাও দিতে হল চ্যানেলকে।
দর্শকরা কি আবার বঞ্চিত হবেন এই সব সিরিয়াল দেখা থেকে!
শুধু প্যান্ডেমিকের এককালীন টাকা নয়। “এখনও অনেক ধারাবাহিক কোভিড ইনসিয়োর্যান্সের বিষয়টাও সম্পূর্ণ করেনি। এখন আমাদের সংক্রমণ এত বাড়ছে। এই সময় অন্তত সকলের কাছে কোভিডের বিমা থাকা উচিত। আজ শুট করতে করতে কারও যদি কিছু হয় তার দায়িত্ব কে নেবে? আমরা ফেডারেশন থেকে কিন্তু যথাসাধ্য আর্থিক সাহায্য করেছি। আর কত করব?” পাল্টা প্রশ্ন স্বরূপ বিশ্বাসের।
আরও পড়ুন: ভয় পেয়ে আর কত দিন বাড়িতে বসে থাকব: বিদ্যা বালন
কোভিডের বিমার টাকা এবং অতিমারির এককালীন টাকা কবে এসে পৌঁছবে? একটি নির্দিষ্ট দিনের দাবিতেই আপাতত শুট বন্ধ হল জি বাংলা এবং সান বাংলার।
তা হলে দর্শকরা আর তাঁদের প্রিয় ধারাবাহিক ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’, ‘কাদম্বিনী’ বা সদ্য শুরু হওয়া ‘যমুনা ঢাকি’ দেখতে পাবেন না? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর এই মুহূর্তে জানা নেই।