বিদ্যা বালনের জন্মদিনে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
‘ভাল থেকো’ আর ‘কহানি’— দুই রূপে দুই ধারার বিদ্যা বালন। প্রথম দিন থেকে দেখেছি, খুব অনায়াস। একজন অবাঙালি শিল্পী বাংলা ছবি দিয়ে বিনোদন দুনিয়ায় পা রাখলেন। কোনও জড়তা ছিল না কিন্তু। অত্যন্ত বুদ্ধিমতী, শিক্ষিত। অন্য অনেক অভিনেত্রীর থেকে বেশি অনুভূতিপ্রবণ। বোধ-বুদ্ধি, বিচক্ষণতা, সমাজসচেতনতা অনেক বেশি। সেই জন্য বিদ্যা শুধুই আর একজন তথাকথিত ‘গ্ল্যাম কুইন’ নন। তাই প্রচারের ঝলমলে আলো বা প্রচুর বিজ্ঞাপনী ছবিতে তিনি নেই। বিদ্যা বরাবর লম্বা দৌড়ের ঘোড়া। ওঁর স্থায়িত্ব সমসাময়িক অভিনেত্রীদের থেকে তাই অনেকটাই বেশি।
গৌতম হালদারের ‘ভাল থেকো’ দিয়ে অভিনয় জীবন শুরু। তখন আমরা প্রায় সকলেই কমবেশি নতুন। বিদ্যা তার মধ্যেও সপ্রতিভ। যে কারণে পরবর্তী সময়ে পুরুষশাসিত বিনোদন দুনিয়ায় একাধিক নারীকেন্দ্রিক ছবির নায়িকা তিনি। বেশির ভাগ ছবিই সফল। নায়িকানির্ভর ছবির ধারণা তাঁর সময় থেকেই শুরু। সেটা ‘ডার্টি পিকচার’ই হোক বা ‘কহানি’ কিংবা ‘বেগমজান’। প্রত্যেকটি ছবি এবং তাঁর অভিনয় সমালোচক-প্রশংসিত। বিদ্যা ‘ট্রেন্ড’ তৈরি করেন। যে কারণে ‘আনন্দী’কে পরবর্তী কালে অনায়াসে দেখা যায় ‘সিল্ক স্মিতা’র ভূমিকায়!
‘কহানি’র প্রচারে পরমব্রত-বিদ্যা। ইমেজ: সংগৃহীত।
‘আনন্দী’ থেকে ‘সিল্ক স্মিতা’— এই বদলটাও কিন্তু লক্ষ্মণীয়। তার আগে ‘পরিণীতা’, ‘লগে রহো মুন্নাভাই’-এর মতো চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সেই জায়গা থেকে অনেকেই হয়তো বলবেন, একজন বিতর্কিত, সাহসী ছবির ‘নায়িকা’ চরিত্রে অভিনয় কি বিদ্যানুরাগীদের অস্বস্তিতে ফেলেছিল? আমি এই গড্ডলিকা প্রবাহে নেই। কারণ, এই স্বর, এই বক্তব্য— পুরুষশাসিত বিনোদন দুনিয়ার নামান্তর। আমি যদি বিদ্যা হতাম আমি সাংঘাতিক আনন্দিত হতাম। কারণ, যে আমি ‘আনন্দী’ দিয়ে শুরু করেছি সেই আমি ‘সিল্ক স্মিতা’র ভূমিকায় অভিনয় করছি। অভিনেত্রী এক জীবনে এটা করতে পেরেছেন, এটাই বড় পাওয়া।
বিদ্যার আরও একটা দিক আমায় টানে। ওঁর রসবোধ। যে রিলগুলো বানান, প্রত্যেকটা দেখি। সব ক’টি রিল ওঁর সূক্ষ্ম, বুদ্ধিদীপ্ত রসবোধের পরিচায়ক। এ-ও শুনেছি, বিদ্যা কৌতুকধর্মী চরিত্রে অভিনয়ের জন্য মুখিয়ে থাকেন। যা এখনও কেউ তাঁকে দেননি। জন্মদিনে আনন্দবাজার অনলাইনের মারফত বিদ্যাকে জানাচ্ছি, ওঁকে পরিচালনার খুব ইচ্ছে। কথা দিচ্ছি, বিদ্যাকে কৌতুকধর্মী চরিত্রই দেব।