নুসরত, কোয়েল, রুক্মিণী ও জয়া
ঘণ্টার পর ঘণ্টা শুটিং। কল টাইম কখনও দুপুর তিনটেয়, তো কখনও ভোর চারটে। ক্যামেরার সামনে ঝকঝকে দেখাতে চেহারা আর লুক ধরে রাখতেই হয়। নিজেদের মেনটেন করতে ঠিক কী কী করেন তাঁরা? মোটিভেশনই বা পান কোথা থেকে?
সাংসদ হওয়ার পর থেকে নুসরত জাহানের ব্যস্ততা অন্য মাত্রা নিয়েছে। ট্রাভেল করার সময়ে নিজের ফিটনেস টুল ক্যারি করেন নুসরত। টিআরএক্স ব্যান্ড তাঁর লাগেজেই থাকে। শহরে থাকলে জিমে ঘাম ঝরানো চলে রুটিনমাফিক। তবে ট্রেডমিলে দৌড়নো নয়, বরং কঠিন ওয়েট ট্রেনিংয়েই ভরসা রাখেন মিষ্টিপ্রেমী এই নায়িকা। কোয়েল মল্লিক আবার একেবারেই ফুডি নন। তাঁর যোগাভ্যাসের চর্চা বহু পুরনো। ‘মিতিন মাসি’র আগে মার্শাল আর্টসের ট্রেনিংও নিয়েছিলেন ভালবেসে। তবে এখন তিনি নতুন অতিথির অপেক্ষায় বলেই ফিটনেস রেজিমও পাল্টে নিয়েছেন সেইমতো।
মডেলিং থেকে অভিনয়ে এসেছিলেন রুক্মিণী মৈত্র। নিজেকে মেনটেন করার জন্য এখনও পর্যন্ত জিমমুখো হননি তিনি। বরং তাঁকে ফুডিই বলা যায়। ‘‘খাবার আমার ক্ষেত্রে মুড লিফ্টারের কাজ করে। আসলে আমার মেটাবলিজ়ম ভাল, তাই খুব একটা চিন্তা করতে হয় না। তবে মা বলেন, তিরিশ পেরোলে নাকি চিন্তা করতেই হবে,’’ হাসতে হাসতে বললেন রুক্মিণী।
ইনিও খেতে ভালবাসেন, অথচ জিম করেন না। তা সত্ত্বেও কী করে সুন্দর চেহারা ধরে রেখেছেন, এই প্রশ্নের মুখোমুখি অসংখ্য বার হয়েছেন জয়া আহসান। এর জন্য নিজের ‘গুড হরমোন’কেই দায়ী করেন অভিনেত্রী। শুধুই কি হরমোনের জাদু? ‘‘আমার সে রকম নির্দিষ্ট কোনও রুটিন নেই। করলে এরোবিক্সটাই করি মাঝেমধ্যে। মাসের পর মাস জিমে যাই না। আর জিমে না গেলেই যে মোটা হয়ে যাব, সেই ভয়ও নেই। তাই প্রচুর খাই,’’ অকপট জয়া। খাওয়াদাওয়া ঠিকমতো না হলে মাথা কাজ করে না তাঁর। মুডও যায় বিগড়ে। তাই একসঙ্গে চারটে রসগোল্লা বা প্লেটভর্তি বিরিয়ানি... কোনও ব্যাপারই নয় জয়ার কাছে।
ইন্ডাস্ট্রিতে এখন কাজের সংখ্যা কম, অভিনেতাদের হাতও সব সময়ে ভর্তি থাকে না। তাই নিজেকে মেনটেন করার মোটিভেশনও প্রয়োজন। একই সঙ্গে তা খরচসাপেক্ষও। শট দেওয়ার ফাঁকে পাওলি দাম বললেন, ‘‘প্রত্যেক দিন সকালে উঠে জিমে যাওয়ার জন্যও কিন্তু একটা মোটিভেশন লাগে! কাজের প্রতি ভালবাসাটাই আমাকে মোটিভেট করে সবচেয়ে বেশি। আমাকে ফিট থাকতে হবে, নিজেকে মেনটেন করতেই হবে, এই তাগিদ থেকেই সবটা হয়।’’ পাওলির কাছে নিজেকে ব্যস্ত রাখাটাও খুব জরুরি। বিভিন্ন ওয়েব পোর্টালে সারাক্ষণই কিছু না কিছু দেখতে থাকেন তিনি। অবসরে স্পেশ্যাল কোনও রান্না কিংবা শুধুই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নাচলেও মুড ভাল হয়ে যায় তাঁর। মন ভাল করতে আয়নার সামনে সময় কাটানোর কথা বললেন প্রিয়ঙ্কা সরকারও। ‘‘খুব জোরে কোনও রিদ্মের গান চালিয়ে দিই,’’ বলছিলেন তিনি। পাওলির মতোই পুরোদস্তুর জিমপ্রেমী প্রিয়ঙ্কা। তাই রোজকার ওয়র্কআউট সেশনে কোনও ফাঁকি নেই। সেই সঙ্গে গরমকালে চলে সাঁতারও। ছবির চেয়েও বেশি ফোটোশুট বা বিজ্ঞাপনী প্রচারে ব্যস্ত থাকতে হয় ঋতাভরী চক্রবর্তীকে। তবে তাঁর ইনস্টাগ্রাম দেখে যদি কেউ ভাবেন ওয়র্কআউটই তাঁর কাছে শেষ কথা, তা হলে ভুল করবেন। বেসিক ইকুয়িপমেন্টগুলো বাড়িতেই রয়েছে তাঁর। ঋতাভরীর নিজের কথায়, ‘‘আমার কাছে নিজেকে মেনটেন করার প্রথম শর্ত রোগা হওয়া নয়, বরং সুস্থ থাকা। বডি টাইপ যেমনই হোক না কেন।’’ অনেকেই ওজন কমানো কিংবা লাইফস্টাইল মেনটেন করা নিয়ে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন, যেটা প্রথমেই বন্ধ করা উচিত বলে মনে করেন নায়িকা। ‘‘সবচেয়ে আগে দরকার ভিতর থেকে ভাল থাকা। যে দিন আমি কাজের চাপে একেবারেই সময় বার করতে পারি না, সে দিন বাড়ি ফিরে অন্তত পাড়ার পার্কে কিংবা রাস্তায় হেঁটে আসি। রাত হয়ে গেলেও যাই,’’ বললেন তিনি।
সব মিলিয়ে শারীরচর্চার চেয়েও ‘ওয়েলবিয়িং’ অর্থাৎ ভাল থাকার উপরেই জোর দিচ্ছেন টলি-নায়িকারা। কারণ তাঁদের মোটিভেশনও সেটাই।